মুনের সংলাপের তাগিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নাকচ

দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দুই নেত্রীকে লেখা জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। সরকারের তরফে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চিঠি পাওয়ার বিষয়টি গতকাল স্বীকার করেছেন। চিঠিটি ইস্যুর প্রায় দুই সপ্তাহ পর সেটি পৌঁছেছে দাবি করে তিনি বলেন, বিস্ময়করভাবে, অজ্ঞাত কারণে সেটি পৌঁছতে দেরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরাবর লেখা ওই চিঠি কেন দেরিতে পৌঁছানো হলো সে বিষয়ে খোঁজ নিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত দূতকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। সরকার প্রধানকে লেখা চিঠিতেই বিএনপি চেয়ারপারসনকে ‘অনুরূপ’ চিঠি পাঠানোর কথা উল্লেখ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে গতকাল তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে অতীতের মতো সামনের দিনেও তার ‘উদ্যোগ’ প্রত্যাশা করেছেন।

মহাসচিব সহিংসতায় উদ্বেগ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে লিয়াজোঁ করতে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব (শান্তিরক্ষা) অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর দায়িত্ব দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজনে ‘তারানকোর সহায়তা নেয়া’র প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ প্রত্যাশা করা হয়েছে, এর প্রেক্ষিতে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী এমন সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, খুনির সঙ্গে আমরা কোন সংলাপ করতে চাই না। এদিকে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেয়া বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় ‘সংসদের বাইরের বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসার’ যে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সেটির উল্লেখ রয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠিকে সরকার সংলাপের চাপ মনে করছে কিনা? জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা চাপ নয়।

বাংলাদেশের কোন বন্ধু রাষ্ট্রের তরফে কোন চাপ নেই বলেও দাবি করেন তিনি। কূটনৈতিক সূত্র মতে, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও ইতিবাচক উন্নয়নে জাতিসংঘ মহাসচিব ব্যক্তিগতভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ উল্লেখ করে চিঠিতে অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে তারানকোকে বাংলাদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন কিনা চিঠিতে সেটি স্পষ্ট নয়। বিষয়টি প্রতিমন্ত্রীর নজরে এনে তার কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান তারানকো ঢাকায় আসছেন কিনা? জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা পাঠানোর কোন পরিকল্পনা এখনও জাতিসংঘের নেই। সেটি প্রেস ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্রই জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ চাইলে অদূর ভবিষ্যতে তিনি আসতে পারেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি উন্নয়ন এজেন্ডাসহ নানা কারণে ২০১৫ সালকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে যুদ্ধাপরাধের চলমান বিচার ও নির্বাচনী সহিংসতা দমন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশের কর্মকাণ্ড যেন সমালোচনায় না পড়ে-সেটিই শুধু বিবেচনায় রাখবে সরকার। জাতিসংঘের মহাসচিবের চিঠির জবাব দেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, শিগগির জবাব পাঠানো হবে।

আতিক/প্রবাস

৪ thoughts on “মুনের সংলাপের তাগিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নাকচ

Leave a Reply to Darts live streaming Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.