১৬ কোটি নীরব দর্শক

যারা জেগে ঘুমায় তাদের জাগানো যায়না। চুরি, লুট, হত্যা, ধর্ষন সব অপরাধ করার আগেই অপরাধী পরিকল্পনা করে । আর সেই পরিকল্পনার ভেতর রয়েছে – বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কেমন করে লুট করবে – কৌশল, কে কে করবে, তাদেরকে কিভাবে ঢেকে রাখা হবে, এই টাকা কোথায় যাবে, এই যাবার পথে কি কি বাঁধা আসতে পারে আর সেই বাঁধা কিভাবে অতিক্রম করবে। এই লুটের পরে কোন কোন সংবাদপত্র প্রতিক্রিয়াতে কি কি লিখবে তারপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সম্পর্কে বিরুপ কিছু লিখলে তাদেরকে কিভাবে সাইজ করা হবে। সবকিছুই পরিকল্পনার ভেতর সুন্দর করে লিখে রাখা ছিল। এবং পরিকল্পনা অনুসারে লুট করা হয়েছে রিজার্ভ। এবং এটি ছিল একটি সফল লুট। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ পাচারের পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসিমুখে মন্তব্য করে – বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ পাচার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোন সমস্যা সৃষ্টি করবেনা। সুতারাং সবাই নাকে তেল দিয়া ঘুমাইতে পারেন। বাংলাদেশ ভারতের অংগরাজ্য। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের মূখ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ হলো দাস। সুতারাং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের জন্য দাসেদের কান্নাকাটি না করলেও চলবে। কথা শেষ।

তথ্য ও প্রযুক্তি আইন – এই আইনের দরকার ছিল। কারণ এখন আর রাস্তায় নেমে কেউ প্রতিবাদ করেনা। জনগণ তাদের প্রতিবাদ ফেসুবকের দেওয়ালেই সীমাবদ্ধ রাখে আর এই প্রতিবাদের কারণে বাংলাদেশে ভারত বা ভারতের রাজ্যসরকারের কেশাগ্রে কেউ বাতাস লাগাইতে পারেনা তবুও এই আইনে বিভিন্ন পাবলিকেরে উঠায় নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতার, নির্যাতন, গুম, হত্যা করা হয়। সেটাও সেই পরিকল্পনার অন্তর্গত। পরিকল্পনা হলো – আওয়ামীলীগ যেহেতু ভারতের প্রথম প্রেম – ১৯৬৬ সাল, আগরতলাতে শেখ মুজিবের সাথে ভারতের চুক্তি অনুযায়ী – আওয়ামীলীগের যদি একটি প্রশাখাও জীবিত থাকে সেই বাংলাদেশের ভারতের মূখ্যমন্ত্রী হবে এবং ভারতের সেবা করবে। বাংলাদেশের জনগণ অর্থাৎ ভারতের দাসেরা যদি কেউ কোনভাবে চিক্কুর দেয় তাইলেই তাঁর কণ্ঠস্বর রোধ করা হবে এই আইনের মাধ্যমে গ্রেফতার, নির্যাতন ও হত্যা করে যাতে আর কেউ এই চিক্কুর দেবার সাহস না পায়।

নির্যাতন ও হত্যা – এই কাজ বাংলাদেশে যেন ভাতমাছ। অপরাধীকে শাস্তি দেবার ক্ষমতা কারু নেই। দুর্বলের উপরে জুলুম করাতে সবাই প্রতিযোগীতাতে নেমেছে। শিশুরা দুর্বল । নারীরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল। অনেক পুরুষই বন্দুকের নলের মুখে দুর্বল। যে যাকে পাচ্ছে তার উপরই জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে ।

শোবার ঘর থেকে উঠোন, উঠোন থেকে মাঠ, মাঠ থেকে মাদ্রাসা, মাদ্রাসা থেকে পথ, পথ থেকে থানা, থানা থেকে জেলখানা –সবখানেই চলছে দুর্বলের উপর অপেক্ষাকৃত সবলের জুলুম। সবাই ফেসবুকে ছবি পোষ্ট করেই ঘুমিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য সেজন্য বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সবই ভারতের রাজ্যসরকারের অধীনে শুধু আওয়ামীলীগের জন্য নিবেদিত।

যারা ঝুঁকি নিতে চায়না গা বাঁচিয়ে চলে তারাও মাঝে মাঝে গ্যাঁড়াকলে পিশে মরে। বাংলাদেশের সব হারামী, মিথ্যুক, প্রতারক, বাটপার, খুনী, চোর, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্নীতিবাজ ভদ্রলোক, হারামী কবি, সাহিত্যিক, নায়ক, গায়ক, সবাই যার যার আখের গোছাতে অন্যায়ের উপর বিছানা করে ঘুমায় অপরাধীদের বাপ ডেকে।

বিচারের বানী নীরবে নিভৃতে কাঁদে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.