কমরেড সিরাজ সিকদার

ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামীলীগ – আহমেদ মুসা | ProbasNews24.com

২রা জানুয়ারী ১৯৭৫ – পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির নেতা কমরেড সিরাজ সিকদারকে হত্যা করে পূর্ব বাংলায় ভারতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। “দেখামাত্র নক্সালকে গুলি করো”  – এই ছিল শেখ মুজিবের নির্দেশ।
১৯৭১ সালের নয় মাস পাক হানাদার বাহিনী এবং ভারতের গোয়েন্দা দ্বারা প্রশিক্ষিত আল বদর বাহিনী যৌথভাবে বাংলাদেশে গণহত্যা চালায়।১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের ১৪ই আগস্ট পর্যন্ত শেখ মুজিবের মুজিব বাহিনী এবং রক্ষীবাহিনী পূর্ব বাংলায় গণহত্যা চালায়। কমরেড সিরাজ সিকদারসহ অগুনিত দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা ও বামপন্থী নেতা কর্মিদের হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের সব পত্রিকা, আর্কাইভ, সব প্রকাশনা থেকে এই গণহত্যার সব প্রমাণ মুছে ফ্যালে ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী। এর পরে আর কোন কথা থাকেনা। ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ ব্যর্থ হয় ১৬-১২-১৯৭১ তারিখে । ১৯৭২-১৯৭৪ তিন বছরের স্বশস্ত্র সংগ্রাম ব্যর্থ হয় অগুনিত বামপন্থী নেতাকর্মী হত্যার মাধ্যমে। পূর্ব বাংলার বিশ্বাসঘাতকদের নিয়ে জাতীয় বেইমান সফল হয়। ১৯৪৭ সালে বেহাত হয়ে যাওয়া পূর্ব বাংলার নিয়ন্ত্রণ সফলতার সাথে ফিরে পায় ভারত। ১৯৬৮ সালে শেখ মুজিবের আগরতলা গমন সফল হয়।

এখন পূর্ব বাংলাতে কোন রাজনৈতিক দল নেই। যারা আছে তারা সবাই ভারতের জন্য কাজ করে। এখন পূর্ব বাংলাতে কোন দেশপ্রেমিক নেই। ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছে। দেশপ্রেমিকের রক্ত মুছে ফেলা হয়েছে। মানুষের মগজ ধোলায় করা হয়েছে । স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে কারু কোন ধারণা নেই। যারা যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছিল তাঁরা সবাই নিহত। যারা এখনো বেঁচে আছেন তাদের মাথায় বন্দুকের নল ঠেকানো আছে।
যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি তারাই এখন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভুক্ত।

১৯৭১ সালের হানাদার বাহিনী, আল বদর বাহিনীর যেমন বিচার হয়না ঠিক তেমনি ১৯৭২-৭৫ এর খুনী মুজিব বাহিনী এবং রক্ষীবাহিনীর বিচার, শাস্তি কিছুই হয়নি। তাদের অনেকেই বিএনপিতে যোগ দেয়। রক্ষীবাহিণীকে বাংলাদেশ আর্মীর সাথে মার্জ করা হয়। ভয়ংকর এক মৃত্যুকূপে পরিনত হয় পুর্ব বাংলা।

এখন পূর্ব বাংলাতে কোন দেশপ্রেমিক নেই। কোন রাজনৈতিক দল নেই। যারা আছে ওরা ভারতের নিয়োগকৃত ক্ষমতাসীন দল এবং ভারতের মনোনিত বিরোধীদল। ১৯৭২-১৯৭৫ এর পরে পূর্ব বাংলাতে একটিমাত্র নিরপেক্ষ কিশোর আন্দোলন হয় সেটি হলো “নিরাপদ সড়কের দাবীতে” স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা পথে নামে। এদের পেছনে ভারত ছিলনা। স্বতঃস্ফুর্ত এই আন্দোলনটি নির্মমভাবে গ্রেফতার, নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার মাধ্যমে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। স্থায়ীভাবে শিশুকিশোর তরুনদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয় যাতে আর কেউ কখনো কোন গণ আন্দোলন নিয়ে পথে না নামে। এর আগে আর এর পরে যেসব আন্দোলন দেখা গেছে সেগুলা সবই কিছু সুবিধাবাদী মানুষের স্বার্থে কিছু নিরীহ মানুষের ক্ষতি।

গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের নামে কিছু নিরীহ মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে সুবিধাবাদী শ্রেনী। একদল খুনী, চোরডাকাত, দখলদার, ধর্ষক, দুর্নীতিবাজ, মামলাবাজ, মিথ্যুক, প্রতারকেরা যার যার নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল, আছে, থাকবে।

কমরেড সিরাজ সিকদার কে ছিলেন – সেটা কারু জানার আগ্রহ থাকার কথা নয়। চে গুয়েভারার ছবি ফেসবুকে লাগিয়ে চাঁদ আর তাঁরা লাল কাপড়ে ঝুলিয়ে কেটে যাক বাকী জীবন। শ্রমিকেরা অপব্যবহৃত হোক ন্যূনতম মূল্যে কেনা উৎপাদনের উপাদান হিসাবে। বিদেশের উপনিবেশে সমাজতন্ত্র নয় রাজতন্ত্র ভাল মানায়। পূর্ব বাংলার জনগণ রাজতন্ত্রেই অভ্যস্ত। ব্যানারে তিনজনের ছবি থাকে। শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা আর জয়। অথবা মেজর জিয়া, খালেদা জিয়া আর তারেক। কবরস্থান, পায়খানা, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় সবকিছুকেই এখন সবাই শেখ মুজিবের নামে চিনে। সেই ভাল।

কৃতী প্রকৌশলী, মুক্তিযোদ্ধা, দেশপ্রেমিক, বিপ্লবী, কমরেড সিরাজ সিকদার পূর্ব বাংলাতে বড়ই বেমানান।

ভারতের অংগরাজ্যে ভারতের সেবাতে কেটে যাক ১৬ কোটি সেবকের দিনরাত্রী।

One thought on “কমরেড সিরাজ সিকদার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *