চট্রগ্রামে পাত্র বিক্রি হয়। পাত্র অর্থ পুরুষ। একজন পুরুষ যার যৌনাঙ্গ আছে যা মানুষ প্রজনন এবং একজন নারীকে যৌনসুখ দিতে পারে। এই পুরুষটি কিনতে অর্থাৎ পাত্রের পুরুষাঙ্গ এবং এই পুরুষাঙ্গের ক্রিয়া কর্ম কিনতে পাত্রীপক্ষকে দিতে হয়

বাড়ি, গাড়ী, গহনা, নগদ টাকা, ফার্নিচার, থালাবাসন, কাপড়চোপড়, মোবাইল, স্মার্ট টিভি ইত্যাদি এবং প্রতি বছর ঈদে কুরবানীতে জামাকাপড় উপহার এবং মৌসুমী ফল মাছ ডিম ইত্যাদি। এটা যেকোন পুরুষাঙ্গ কেনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পুরুষটি যদি বেকার হয় তাহলেও তাকে কিনতে গেলে পাত্রীপক্ষকে এইসব কিছুই দিতে হয়। আর পাত্র যদি ডাক্তার হয় তাহলে তো কথাই নাই। একজন ডাক্তার পুরুষকে ক্রয় করতে গেলে পাত্রীপক্ষকেও অনেক সম্পদশালী হতে হয় যাতে এইসব যৌতুক সরবরাহ করতে পারে।

সেদিন ফেসবুকে একটি সংবাদের উপর দৃষ্টি গেল।

সংবাদটি একটি বেওয়ারিশ লাশের সম্পর্কে। লাশটি একজন ডাক্তারের। তার বাড়ী চট্রগ্রাম। ভাবছি এই লাশটি যখন জীবন্ত ছিল। তরুন ছিল। যখন সে তার যৌবনে। যখন সে একটি নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক করে যৌন সুখ এবং সন্তান উৎপাদন করে পরিবার গঠনের স্বপ্ন দেখছিল তখন নিশ্চয় তার অভিভাবক মাবাবা কোন এক নারীকে এনে দিয়েছিল সাথে এসেছিল অজস্য যৌতুক। যে যৌতুকের জৌলুসে সেই নারী সেই পুরুষের বিছানা উজ্জ্বল করে । সেই যৌতুকের গর্ব অহংকারে বুক ফুলিয়ে সেই নারীটি সেই পুরুষটির স্ত্রী হিসাবে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। বাপের বাসা থেকে অনেক টাকা, গয়না, গাড়ী, বাড়ী, টিভি, কাপড়, ঘড়ি এনেছে সে আর এইসবের বিনিময়ে সে পেয়েছে তার যোনীতে পুরুষাঙ্গ ঢুকাবার অধিকার। চট্রগ্রামের পাত্রের পুরুষাঙ্গ । তারপর সেই আলো ঝলমন যৌতুক খচিত পরিবারে রাতদিনের যৌন মিলনে অনেক ফুটফুটে সন্তানের জন্ম হয়েছে। বাপের বাড়ী থেকে প্রতিবছর এসেছে জামাকাপড় উপহার মৌসুমি ফল। ছেলেমেয়ের জন্ম হয়েছে । ওরাও পেয়েছে উপহার। দামী স্কুলে, দামী কলেজে, দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছে । দামী গাড়ি হাকিয়ে পথ ধুষোরিত করে স্কুলে গেছে, কলে্জে গেছে, রেস্টুরেন্টে খেয়েছে, আড্ডা দিয়েছে, প্রেম করেছে, মন ভেঙ্গেছে, আবার যৌতুক নিয়ে ছেলের বিয়ে দিয়েছে আবার যৌতুক দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। অনেক দিন পেড়িয়ে গেছে। অনেক বছর পর একদিন করোনা এসেছে ।
করোনা একটি ভাইরাসের নাম। এই ভাইরাস আসতে যেতে থাকতে মারতে কারু অনুমতি নেয়না। কোন যৌতুক ছাড়াই ভাইরাস এসেছে চট্রগ্রামে। ভাইরাস এসে আক্রান্ত করেছে শোষনের স্বর্গ শোষনের তীর্থভূমি বীর চট্রলা। তারপর ? তারপর যাকে যাকে লাশ বানিয়েছে তাকে তাকে বেওয়ারিশ হতে হয়েছে। মানুষ কিনতে লাগে কোটি কোটি টাকা আর সেই মানুষ লাশ হলে হয় বেওয়ারিশ। কারণ কি ? কারণ
এক – সে বৃদ্ধ (তার পুরুষাঙ্গ অবশ লাশ বিক্রয়যোগ্য নয়)
দুই – সে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে (সে অছুত)
তিন – সে লাশ সেজন্য সে টাকার লেনদেন করতে অক্ষম
সেজন্য সে বেওয়ারিশ।
তার ঘরে কত বন্ধুবান্ধব এসেছে । কত পাড়াপ্রতিবেশী আত্মীয়স্বজন । কত পার্টি কত দেশবিদেশে ভ্রমণ । সমাজে কত নাম দাম। তার গাড়ী হাকিয়ে কত যুগ ধরে কলুষিত করেছে সে চট্রগ্রামের পরিবেশ। এখন সে লাশ । বেওয়ারিশ লাশ। সেই কলুষিত পরিবেশের পবিত্র মাটিতে সে সমাহিত হবে ঠিকই কিন্তু অপরিচিত লোকের দ্বারা কারণ সে বেওয়ারিশ লাশ। শশুরবাড়ীর কেউ আসেনি। বাবার বাড়ীর কেউ আসেনি। না স্ত্রী না পুত্র না কন্যা না ভাই না বোন না কোন কাছের বা দূরের আত্মীয়স্বজন । কেউ আর চিনেনা তাকে । কোটি কোটি টাকার মানুষ এক মুহুর্তে বেওয়ারিশ লাশ হয়ে গেছে করোনার আক্রমণে।
একজন ডাক্তার কিনতে অনেক টাকা লাগে। তার শশুরের দিতে হয় টাকা। তার রোগীদের দিতে হয় টাকা। সবাইকে টাকা দিতে হয় আর সেই টাকা নিয়ে আসে সন্মান। লাশে টাকা স্পর্শ করতে পারেনা তাই রাস্তার ভিখারির মত সেও অবহেলিত। সে করোনা আক্রান্ত বেওয়ারিশ। টাকা আছে তো সবার কাছে সন্মাণীয় ব্যক্তি। কিন্তু করোনা হলে আর লাশ হলে আর সেসব টাকা সে ছুঁতে পারেনা। সেই টাকা সেই ক্ষমতা সেই পুরুষাঙ্গ অক্ষম অবশ বেওয়ারিশ সেই সমাজের সন্মানিত ব্যক্তিরা বা যারা সন্মান করতো তারা সবাই হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছে যেন ছিলনা কখনো। কোনকালে করোনা তাকে নিয়ে গেছে এক অজানা দেশে, সে হারিয়ে গেছে নিজ দেশেই শুয়ে হারিয়ে গেছে অন্য কোথাও। এখন সে বেওয়ারিশ হয়ে গেছে শুধুই বেওয়ারিশ লাশ ।
চট্রগ্রামের মোড়ে মোড়ে খাজাবাবার দরগা পীর মুর্শিদ আর কথায় কথায় আল্লাহ্‌ রাসুল (সাঃ) সবই ভুয়া সবই ব্যবহৃত হয়েছে, হয় এবং হবে বাণিজ্যিক কারণে ঠিক লিঙ্গ বিক্রি করে যৌতুক ঘরে আনার মত। পুরুষাঙ্গ বিক্রি হয় টাকার বিনিময়ে। সেই পুরুষ করোনাতে আক্রান্ত হয়ে লাশ হলে তার দেহের আর কোন অংগেরই কোন মূল্য থাকেনা।
করোনা বারে বারে এসো
এসে প্রান নিয়ে প্রান দিয়ে যেও
প্রান যদি না ফিরে আসে
তাহলে সে জানাবে কিভাবে ? কে বেশী আপন? টাকা দিয়ে কেনা স্পর্শ নাকি কপর্দকহীন মানুষের ভালবাসার স্পর্শ ?
অসুখে একজন অসহায় মানুষের পাশে কে দাঁড়ায় ? টাকা দিয়ে কেনা সমাজ, সন্মান, স্ত্রী,পুত্র, কন্যা, আত্মীয়স্বজন পরিবার? নাকি হৃদয়বান একজন নিঃস্বার্থ মানুষ ?- যে শুধু ভালবাসে আর মানুষেরে ভালবেসে কাছে আসে ।
মৃতব্যক্তি কথা বলতে পারেনা। লিখতে পারেনা। চিৎকার করে সবাইকে বলতে পারেনা – সমাজে শোষন প্রতিষ্টা করতে সেও সহায়তা করেছে আর সেই মূল্যই তাকে দিতে হয়েছে। বাংলাদেশের সমাজে ৫% শোষক ১০% শোষকের সাহায্যকারী আর বাকি ৮৫% শোষিত। । বাকী ৮৫% শোষিতেরাই বেঁচে থাকার তাগিদে ১০% শোষকের ফাঁদে পা দিয়ে ১০% শোষকেরে রক্ত চুষতে দেয় নিরুপায় হয়ে ।

 

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো কানাডা ।


চারিদিকে প্রতারক

৪ thoughts on “COVID-19 বেওয়ারিশ লাশ

Leave a Reply to Soccer live streams online Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.