হাওর নিয়ে কোন হাউ কাউ নাই, কেনো? কিছুদিন আগে অপু বিশ্বাসের ছবিতে ছবিতে ভরে গিয়েছিল ফেসবুকের দেওয়ালগুলো। হাওরবাসীদের দূর্গতির ছবিগুলো দেখা যাচ্ছেনা তেমন। সেদিন দেখলাম সন্ত্রাসী রোমেল চাকমার জন্য শোকে বিহ্বল কিছু মানুষ। তারাও কেউ হাওরবাসীদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে যায়নি। অতীতে বন্যা বা ঘূর্ণীঝড় হলে সমগ্র বাংলাদেশ সাহায্যের জন্য এগিয়ে যেতো । যে যেমন পারে, যে যেখানে যে অবস্থায় আছে সেখান থেকেই সাহায্য করার চেষ্টা করতো। হাওরবাসীদের ওয়াইফাই নাই, ফেসবুক নাই, ল্যাপটপ নাই, আইফোন নাই, চুল ফাফানের সেলুন নাই, এইসব কিছু নাই, ভাত নাই, কাপড় নাই, থাকার জাগা নাই, সামনে বাঁচার কোন উপায় নাই। সবাই ছুটে আসছে শহরের দিকে। শহরের বিভিন্ন রাস্তার কোনে কোনে স্তূপীকৃত গার্বেজ জমিয়ে রাখা হয়েছে তাদের স্বাগত জানাবার জন্য। শহরের মানুষগুলো অন্য রকম। কেউ জানেনা কি রকম। না মানুষ না জন্তু। না ভাল না মন্দ। গাড়িতে গাড়িতে ভর্তি পথঘাট। ধুঁয়া আর ময়লা রাশি রাশি।শহরের পরিবেশ ঠিক শহরের মানুষের মনের মত। কুৎসিত কদাকার। এমন ছিল না আগে। এমন করেছে সবাই মিলে। বাঁচার আশায় হাওরবাসীরা ছুটে আসছে সেই কুৎসিত কদাকার শহরে।
হাওরবাসীদের জন্য শহরের মানুষের সময় নেই। কারু জন্য সময় নেই ওদের। শহরের মানুষেরা ছুটছে আর ছুটছে। সবাই টাকা বানাতে চায়, সবাই গাড়ী, বাড়ি, সুন্দর পোষাক, ফাফানো চুলের মেয়েমানুষের হাত ধরে হাটতে চায়, সবাই সুখের পেছনে ছুটছে। সুখ এখন সোনার হরিন। সুখ তো মনে থাকার কথা। কাগজের টাকা কিভাবে সুখ কিনে দেবে? সাড়া শহরে উঁচু উঁচু দালান আর সপিং মল আর গাড়ী আর স্তূপীকৃত গার্বেজের চারিপাশে ক্ষুধার্ত মানুষ। গাড়ীর ভেতরে বিশাল ভুড়ির নারীপুরুষ যারা চুরি ডাকাতি দুর্নীতি করে তাদের ক্রয়ক্ষমতা ধরে রেখেছে যাতে বাজারের উর্ধুমূল্যে পন্য কিনে উদরপূর্তি করতে পারে, অপচয় করতে পারে, দেশের বাইরে পাচার করতে পারে, সুখ কিনতে পারে। বিল্ডিং ভেঙ্গে যাচ্ছে, ব্রিজ ভেঙ্গে যাচ্ছে, রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে, নর্দমাতে গার্বেজ আটকে বৃষ্টির পানি নোংরার সাথে মিলেমিশে একাকার নদী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কারু কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। সবাই ছুটছে কাগজের টাকা ছিনিয়ে এনে সুখে কিনে বিশাল ভুঁড়ি বানাবার আয়োজনে। সবাই ছুটছে।
বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য। বাংলাদেশে ভারতের রাজ্যসরকার না মানুষ না জন্তু। ফেসবুকে আমি হন্যে হয়ে মানুষ খুঁজি। কেউ আছেন? যদি থাকেন আওয়াজ দিন। এবছর যারা হজ্ব করার কথা ভাবছেন। হজ্বের জন্য বিপুল পরিমান অর্থ বিভিন্ন হজ্ব গ্রুপকে দিয়ে মক্কা শরীফে যাবার কথা ভাবছেন তারা এই টাকাটা হাওড়ের দুর্গতদের ভাত, কাপড়, মাথার উপরে নিরাপদ ছাদের জন্য দান করুন। আপনাদের হজ্ব আল্লাহ্ কবুল করবেন।
অনেকের বাসাতে অনেক পুরানা কাপড় আছে, কাথা আছে, কম্বল আছে যা আপনারা দান করতে পারেন। অনেকেই অনেক টাকা ফালতু খরচা করেন। ফুল কিনে ফালতু টাকা খরচা না করে হাওরের দুর্গতদের দান করুন।
ধর্ম ও রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে যার যেমন সামর্থ সেভাবে সাহায্য করুন। আমাদের একটি দল যাচ্ছে ঢাকা থেকে তাদের সাথে থেকে সাহায্য করতে পারেন অথবা নিজেরা যার যার এলাকা থেকে বন্ধুবান্ধব মিলে দল তৈরি করে, মহল্লাবাসীর কাছ থেকে সাহায্য সংগ্রহ করেও হাওরবাসীদের কাছে তা পৌছে দিতে পারেন। আমি আমার ফেসবুকের সকল বন্ধুর কাছে আবেদন করছি হাওরবাসীর পাশে এসে দাঁড়াবার জন্য। যেভাবে পারেন, আসুন সাহায্য করুন। বাংলাদেশের অনেক মানুষ বিদেশে আছেন, বিদেশে পহেলা বৈশাখে বা দেশের কোন শিল্পী এলে যে পরিমান খরচা করে আপনারা টিকেট কেনেন বা দেশে যাবার সময় যে পরিমান টাকা খরচা করে তার থেকে সামান্য কিছু টাকা বাঁচিয়ে আপনারা হাওরবাসীকে সাহায্য করতে পারেন। আমি দেখেছি প্রবাসীরা বেশিরভাগ সময় ফালতু জিনিষ ক্রয় করে তাদের কস্টার্জিত অর্থের অপচয় করে। চমকদার বিজ্ঞাপন এইসব ফালতু জিনিষ ক্রয় করতে সবাইকে মোটামুটি বাধ্য করে। ফালতু জিনিষ বলতে আমি বুঝাতে চাইছি যা না হলেও চলে। যা না কিনলে কেউ মারা যাবেনা ।
আমরা যদি ফালতু জিনিষ কেনা বন্ধ করি তাহলে ভবিষ্যতের জন্য সে টাকা সঞ্চয় করতে পারি আর মানুষকে সাহায্য করার জন্য তা খরচ করতে পারি।
আমি নীচে একটি লিঙ্ক দিচ্ছি এবং কিছু তথ্য দিচ্ছি যাদের মাধ্যমে হাওরবাসীর কাছে সাহায্য পৌছে দেওয়া যেতে পারে।
যোগাযোগ করুন : তথ্য এবং সাহায্য পাঠাতে। নাম্বার দুটি বিকাশের।
01912199794 KM Harun
01722973296 Faizal S Khan
বিস্তারিত যোগাযোগের জন্য এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
https://www.facebook.com/messages/t/zhassan1978
একটি দল যার যার নিজ খরচে (জন প্রতি ৫০০০ টাকা) ট্রাক ভাড়া করে খাদ্য, পোষাক সামগ্রী নিয়ে শীঘ্রই হাওড়ের পথে রওনা হবে। আপনি সাথে আসতে পারেন নিজ খরচ নিজে বহন করতে হবে। অথবা দ্রব্য সামগ্রী প্যাকেট দিতে পারেন অথবা কেনার জন্য টাকা সাহায্য দিতে পারেন।