আমি দুঃখ নিয়ে লিখিনা কিন্তু যারা আমার লেখা পড়ে তারা আমার লেখাতে দুঃখের রেশ খুঁজে পায়। এর কারণ কি? এর কারণ হলো এইসব পাঠকের মনের ভেতর অন্যকে করুনা দেখাবার বাসনা লুকিয়ে থাকে। যদি দুঃখ না থাকে তাহলে বুকের ভেতর জমে থাকা করুনাগুলো অব্যবহৃত থেকে যাবে। পাঠকেরা এখন এই লেখা পড়ে নিশ্চয় আফসোস করবে – ইস করুনা বা দয়া দেখাইবার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ধরে নিলাম আমার অনেক দুঃখ আছে। ধরে নিলাম পাঠকেরা তাদের বুক উজার করে করুণা দেখাইলো। তারপর? তারপর কি আমার দুঃখের ভান্ডারে ঘাটতি দেখা দেবে?
দূঃখ অনেকটা কয়লার মত। কয়লা কিভাবে জন্ম নেয়? ভূগর্ভের যেখানেই বিপুল পরিমানে গাছের পাতা, গাছ, পাথর, মেটাল, প্রানীর দেহ, ইত্যাদি জমে জমে স্তূপীকৃত সার হয়ে থাকে সেখান থেকে শত শত বছরের চাপ পানি নিষ্কাষিত করে, আলো, আগুন, বাতাস লেগে কয়লাতে রুপান্তরিত হয়। খনির নীচে বসে বসে কেউ কয়লা তৈরি করেনা। যেমন বুকের ভেতরে কেউ দুঃখ তৈরি করেনা। দুঃখ এক ধরনের অনুভূতি যা মানুষকে কোনভাবেই কোন সাহায্য করেনা বরং ক্ষতি করে। যার ভেতর দুঃখানুভুতি নেই সেই সব চাইতে সুখী মানুষ। অনেকেই কৃত্রিম দুখী হবার অভিনয় করে। নাটক হইতে সাবধান। এরা কিছু পাইবার জন্য নিজেদের দুঃখী হিসাবে উপস্থাপিত করে। যারা দুঃখের নাটক করতে পারে তারা নিজেদের স্বার্থে সকল প্রকারের সুযোগসুবিধা প্রাপ্ত হয়ে অন্যকে বোকা বানিয়ে সুখী হয়।
কয়লা জ্বেলে যেমন আগুন হয় সেই আগুনের তাপে সবাই যার যার হৃদয়ে উষ্ণতা নিয়ে আসে,কয়লার আগুনে খাবার রান্না করে ক্ষুধা নিবৃত করে বা কয়লা জ্বালিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করে বিষাক্ত কেমিক্যাল গ্যাসে পরিবেশ বিষাক্ত করে উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ বিক্রি করে মুনাফা করে ঠিক তেমনি একজনকে দুঃখ দিয়ে গড়ে উঠে অন্য একজনের সুখের জীবন। মনের ভেতর জমে থাকা দুঃখ মগজে চাপ সৃষ্টি করে সেই চাপ থেকে দেহের বিভিন্ন অংশে প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং ভয়াবহ যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়।
একজন লেখকের দেহে যদি ক্রমাগত প্রদাহ হতে থাকে তাহলে তার লেখনীতে দূঃখের রেশ থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না।
মনের উপরে চাপ বা স্ট্রেসের কারণে এই প্রদাহ থেকে ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে। প্রদাহ বেদনাদায়ক। মনের উপরে চাপও বেদনাদায়ক। আর ক্ষতের সৃষ্টি হলে তা অনেকদিন যন্ত্রনা দেবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। আবেগ খুব সহজেই আমাদের স্বাস্থ্যের উপরে প্রভাব বিস্তার করে। অনেক গবেষনাতে দেখা গেছে মনের উপর চাপ সৃষ্টি হলে তা মগজের কোষে এমনভাবে প্রভাব বিস্তার করে যাতে করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এই প্রদাহ স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। উদাহরন পিঞ্চড নার্ভ বা স্নায়ুপীড়া।
জিনিষটা জটিল মনে হতে পারে কিন্তু খুব সহজ। আবেগ এক অদ্ভুত অনুভূতি। আবেগ তাড়িত হয়ে মানুষ অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফ্যালে। নিজের ক্ষতি হবে এমন ভুল সিদ্ধান্ত যখন ক্ষতি করে তখন বারে বারে মনে হতে পারে – অমুক কারণে আমি আমার নিজের ক্ষতি করলাম। তমূক যদি না করতাম তাহলে অমূক হতোনা। এই আফসোস মগজের ভেতরে চাপ সৃষ্টি করে। এক ক্ষতি হয়ে গেছে আর সেই ক্ষতিকে বারে বারে স্মরণ করে নিজের অজান্তে আরো ক্ষতি হতে থাকে। আগের ক্ষতি যদি মানসিক ক্ষতি হয় তাহলে এইবারে হবে শরীরের ক্ষতি। অনেকেই আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা। অনেকের আবেগ নিয়ন্ত্রনে থাকে। আমরা তাদের থেকে শিক্ষা নিতে পারি।
নিষ্টুরতা অনেকসময় অনেক মানুষের আবেগের উপরে ক্ষমতায়ন করে ফলে নিষ্টুরতা বিজয়ি হয়। উদাহরন, ফেসবুকে মাঝে মাঝে মানুষকে প্রহার বা নির্যাতনের দৃশ্য দেখা যায়। সেদিন পথের উপরে এক পাগল মহিলাকে মানুষে পিটিয়ে আহত করে। চারিপাশে সবাই সেই দৃশ্য চুপচাপ তাকিয়ে তাকিয়ে দ্যাখে। একজন মানুষকে পিটানের বা নির্যাতনের দৃশ্য যারা চুপচাপ দেখতে পারে বা নির্যাতনে অংশ গ্রহণ করতে পারে তাদের আবেগ নিষ্টুরতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নির্যাতণের শিকারকে বাঁচানোর মানুষের সংখ্যা যেহেতু কম সেজন্য সহজেই ধরে নেওয়া যায় মানুষের আবেগ নিষ্টুরতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিতই শুধু নয় মানুষ নিষ্টূরতার দাস। একবার মোবাইল চুরির অপবাদে পুলিশ এক কিশোরকে ধরে এনে পথের মানুষজনের কাছে ছুঁড়ে দিলে সবাই তাকে পিটিয়ে মেরে ফ্যালে তখন পুলিশ তাকে ভ্যানে করে নিয়ে যায়। নির্যাতনের দৃশ্য অনেকেই ফেসবুকে পোষ্ট করে ভিডিও করে। সেই পোস্টের নীচে অনেকেই অনেক ধরণের মন্তব্য করে সেইসব মন্তব্যগুলো পড়লেই বোঝা যায় মন্তব্যকারীরা যদি এই ঘটনার চারিপাশে থাকতো তাহলে ওরাও ভিডিও করতো কিন্তু কেউ এই মানুষকে রক্ষা করতে যেতোনা।
কাগজে বা ফোনে সবাই দুঃখ প্রকাশ করতে পারে। আহা উহু করতে পারে কিন্তু ঘটনাস্থলে যেয়ে কেউ কারুকে তুলে ধরে না। বাঁচানোর জন্য অপরাধীকে থামায় না। অপরাধীর সংখ্যা কম হলেও সবাই অপরাধীকে ভয় করে। ফলে অপরাধী জয়ী হয় এবং সমাজে অপরাধ সুপ্রতিষ্টিত হয়। কারু জন্য আহা উহু করার চাইতে নোংরামী বোধহয় কিছু নেই। যখনই একজন মানুষ বলে যে দোয়া করি – এছাড়া আর কি করার আছে তখনই ধরে নিতে হবে এই মানুষ হয় কাপুরুষ না হয় নিষ্টুর।
শুভেচ্ছা জানানোতে কিছু যায় আসেনা। শুভেচ্ছার কোন কার্যকরী প্রভাব নেই। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে পরে আফসোস করে কোন লাভ নাই। কালিহাতির সেই ঘটনাতে সেই ছেলেটার একটা কাঁটা পা শরীরের চামড়ার সাথে লেগেছিল আর ছেলেটা চিৎকার করছিল যখন তখন সবাই সেখানে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ফটো উঠাচ্ছিল। কারু মুখে কোন উদ্ভেগ ছিলনা। ভিডিওটি এখনো দেখা যেতে পারে ইউটিউবে আছে। নিষ্টুরতা এদের সবার মন ও আবেগের উপরে ক্ষমতায়ন করেছে।
আজ একজন আমাকে বলেছে আমাকে দেখলে মায়া লাগে। “মায়া” শব্দটার অনেক অর্থ হতে পারে। “করুণা” থেকে “মায়া”। “মায়াময়” মুখ। আমি যখন কারু পাশে যেয়ে দাঁড়াই তখন প্রত্যাশা করিনা যে সে আমার মুখে “মায়া” দেখতে পাবে। আমি প্রত্যাশা করি আমার প্রয়োজনে সেও আমার পাশে এসে দাঁড়াবে। আজ আমাকে দেখে যার মায়া লেগেছে সেই “মায়া” কারণ নিছক হরমোনের ব্যাপকতা ও ভারসাম্যহীনতা।
আমাকে দেখে মায়া লাগার অর্থ আমার ক্রোধকে নাড়া দেওয়া। ছেলেটা মধ্যপ্রাচ্যে সারাদিন কাজ সেড়ে ফিরেছে, ক্লান্ত, এই বয়সে একজন ছেলে কাজ শেষে ঘরে ফেরে তারপর বউয়ের সাথে শোয়। কিন্তু যারা মধ্যপ্রাচ্যে পরিশ্রম করে তাদের হয়তো পাশে বউ নাই। ফলে এরা ফেসবুকে কোন একাকী মহিলাকে দেখলে মায়া করে। আমি সব বয়সেই একা একা ছিলাম। আজীবন একাকী থাকি। যারা কিছুদিন একা আছে আর কিছুদিন পরে সংগীর সাথে মিলবে তাদের দেখলে আমারও মায়া লাগে। দোয়া, মায়া, করুনা, শুভেচ্ছা, উপদেশ সবকিছুই ফ্রি। সব সময় পাওয়া যায়। কিন্তু যখন একজন মানুষ অসুস্থ হয় বা পথে আক্রান্ত হয় বা অর্থকস্টে না খেয়ে থাকে তখন অসুস্থের পাশে একটু হেসে কেউ বসেনা বা আক্রান্তকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়না বা যে অর্থ কস্টে ভুগছে সে যাতে উপার্জনক্ষম হতে পারে সে ব্যবস্থা করার জন্য কেউ এগিয়ে যায়না। কারণ আমার বেশিরভাগ পাঠক নিষ্টুরতা দ্বারা বশীভূত।
You are my aspiration, I own few blogs and infrequently run out from to post .
Hello my loved one! I want to say that this post is awesome, great written and include almost all vital infos. I’d like to peer more posts like this .
Some truly wonderful content on this web site, thank you for contribution. “A conservative is a man who sits and thinks, mostly sits.” by Woodrow Wilson.
Would you be concerned about exchanging links?
whoah this blog is wonderful i love reading your posts. Keep up the great work! You know, a lot of people are looking around for this information, you could help them greatly.
Hiya, I am really glad I’ve found this info. Today bloggers publish just about gossips and internet and this is actually irritating. A good web site with exciting content, this is what I need. Thanks for keeping this web site, I’ll be visiting it. Do you do newsletters? Cant find it.