গতিবেগ বেড়েছে ‘রোয়ানু’র, আঘাত সকালে


আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অফিসে বাংলানিউজকে বলেন, আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়ায় উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

রাত ২টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিশেষ বুলেটিনে (১৫ নম্বর) বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার মধ্য রাতে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি আরও পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকাল/দুপুর নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভোর থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

বিশেষ বুলেটিনে আরও জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় আসবে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল  স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

সবশেষ উপগ্রহ চিত্র অনুযায়ী, শনিবার দুপুর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানবে। উপকূল ঘেঁষে ঘেঁষে এগুচ্ছে ‘রোয়ানু’।

এর আগে বলা হয়, শনিবার বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করবে ‘রোয়ানু’।

এদিকে, উপকূলের জেলাগুলোর ২১ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল।

এরপর দুর্যোগ সচিব শাহ কামাল মোবাইল ফোনে বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উপকূলের জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এবং সাগর থেকে জলোচ্ছ্বাস গড়িয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন বাংলানিউজের স্থানীয় প্রতিনিধিরা। কোথাও কোথায় বাধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

সুত্র: বাংলানিউজ

১০ thoughts on “গতিবেগ বেড়েছে ‘রোয়ানু’র, আঘাত সকালে

Leave a Reply to Cloudy Heart Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.