তিনি এক আরব কূটনীতিক। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পতাকা ও মানচিত্রের প্রতিনিধি। ঢাকায় নিযুক্ত। নাম আবদাল্লাহ আল শামস। ঢাকায় এসেছেন পাঁচ মাস হল। দুবাই কর্তৃপক্ষের ঢাকাস্থ দূতাবাসের তিনি সেকেন্ড সেক্রেটারি। তিনি ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত আমিরাতি ভিসা সেন্টারের পরিচালক। এর আগে তার দেশের হয়ে কাজ করেছেন আমেরিকায়। ম্যানহাটনে। তারাতো কূটনীতিক বিশেষ প্রটোকলে চলেন। পর্যটকের মতো পথে-প্রান্তরে বেড়ানোর সুযোগ তাদের হয় কদাচিৎ। একবার গিয়েছিলেন সিলেটে। এবার যাচ্ছিলেন সুনামগঞ্জে। আমিরাতি সংস্থা দুবাই কেয়ারের অর্থায়নে স্কুল প্রতিষ্ঠা হচ্ছে হাওড়ের এক গ্রামে, সেখানে। আবদুল্লাহ গিয়েছিলেন উদ্বোধন করতে। দেখাগেল, জুতা-সে-েলহীন হাওড়বাসির সঙ্গে দারুণ মানিয়ে নিয়েছেন সফেদ জুব্বাধারী এই আরব। ঢাকা থেকে যাত্রা পথ ছিল ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা হয়ে ভাটাপাড়া গ্রাম। বাহন ছিল দূতাবাসের মাইক্রোবাস। কালো গ্লাসে ঢাকা। মাঝে মধ্যেই ড্রাইভারকে হুজুরের হুকুম, গাড়ি থামাও। ততক্ষণে জানলা খুলে তিনি হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বাইরের রিক্সাওয়ালার দিকে। হাতে তার হাজার টাকার নোট। রিক্সাওয়ালা এক শ্রমজীবী শিশু। অপ্রাপ্তবয়স্ক। তার প্রশ্ন, এটা দিয়ে কী করব আমি। কূটনীতিক বলেন, এটা তোমার হাদিয়া- উপহার! তার ড্রাইভার জানালো, তিনি ঢাকার রাস্তায়ও এমনটি করেন প্রায়ই। আমিরাতের প্রায় সব বড়কূটনীতিকই এমনটি করেন বলে তাদের কর্মচারিরা জানান। তাকে প্রশ্ন করা হল, কেন করেন এমনটি? তার জবাব, ‘আমার ভাল লাগে। এদেশের মানুষ অনেক পরিশ্রমি। এদেরকে একটু উৎসাহ দেয়ার জন্য এমনটা করি আমি। আরও জানালেন, এরা গরিব। তবুও তারা আমার কাছ থেকে টাকা নিতে অস্বীকার করে। তারা তাজ্জব হয়ে যায়! আমি তখন বলি, এটা আমার পক্ষ থেকে নয়, আল্লা’র পক্ষ থেকে। মেহমানের খাবার ব্যবস্থা হয়েছিল, বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের নেত্রকোনা জেলা অফিসে। ভাত, রুটি, করলা ভাজি, হাওড়ের বোয়াল মাছ, গলদা চিংড়ি ও দেশী মুরগীর ভুনা ছিল খাবারের আইটেম। সানন্দে ভোজন করলেন বাঙালিয়ানায় ভারপুর খাদ্যগুলো। শেষে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। সুনামগঞ্জের ভাটাপাড়া গ্রামে পৌঁছতে খানিকটা পথ তাকে যেতে হয়েছিল মোটরবোটে। দারুণ উপভোগ করলেন তিনি। মধ্যপথে যান্ত্রিক ত্রুটিতে মোটরবোট থামতেই বললেন, ভয় নেই, আমি সাতার জানি। তীব্র রোদের তাপে তিনি ঘামছিলেন। একজন একটা ছাতা মেলে ধরলেন। তিনি বললেন, আমি সূর্যের দেশের লোক। ছাতার ছায়ায় থাকতে অভ্যস্ত নই। হাওড়ের শিশুরা দূর থেকে আরব জুব্বা-পাগড়ি ওয়ালা এই কর্মকর্তাকে দেখে হইচই করছিল। তিনি তার জবাব দিচ্ছিলেন হাত নেড়ে। সবুজ-শ্যামল বাংলার মানুষের সঙ্গে আরব কর্মকর্তা দারুণভাবেই মানিয়ে নিয়েছিলেন।
Related Posts
বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে এটিএমের এ কী বুলি?
- Ayesha Meher
- জানুয়ারি ২২, ২০১৫
- 1 min read
ঢাকা: বর্তমান সময়ে টক-শোতে যেসব বুদ্ধিজীবী খালেদা জিয়ার পক্ষে কথা বলেন তারা বিশেষ প্রাণীর (……
গোপালগঞ্জে পুলিশ হেফাজত থেকে দুই আসামির পলায়ন
- Ayesha Meher
- জুলাই ৮, ২০১৫
- 0 min read
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়েছেন দুই আসামি। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে মুকসুদপুর উপজেলার…
২ বছর পর মুক্তি পেলেন খন্দকার মোশাররফ
- Ayesha Meher
- জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
- 1 min read
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ বুধবার বিকেলে গাজীপুরের…
১৯ thoughts on “বাংলাদেশের গ্রামে আরব কূটনীতিকের একদিন”
Leave a Reply to Mahbub Ishtiak Bhuiyan Cancel reply
This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.
Mohammad Amin liked this on Facebook.
Cmi Sagor liked this on Facebook.
Ali Mohamed liked this on Facebook.
Md Salim liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Nazia Ahmed liked this on Facebook.
সাদাকালো সপ্ন liked this on Facebook.
Wasim Khokan liked this on Facebook.
Moner Akash liked this on Facebook.
Mahbub Ishtiak Bhuiyan liked this on Facebook.
Saif Bin Abdul Mozid liked this on Facebook.
Khandakar Mamun liked this on Facebook.
Atikur Rahaman liked this on Facebook.
Abdul Mannan Mannan liked this on Facebook.
Ajgar Ali liked this on Facebook.
Forkan Bin Rashid liked this on Facebook.
Emranul Islam Harun liked this on Facebook.
Jahangir Khalek liked this on Facebook.
MD Rahim Khan liked this on Facebook.