চাচা কর্তৃক দখলকৃত সিলেট শহরের শিবগঞ্জস্থ খরাদিপাড়ার আনন্দ-২ বাড়ী এবং গোলাপগঞ্জের বিশাল সম্পত্তি ফেরত পেতে ফেসবুকে একটি ষ্ট্যাটাস দিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন এতিম ভাতিজা আফজল বখত খান। ফেসবুকে ষ্ট্যাটাসের কারণে আফজল বখতের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আর সরাসরি ও ফোনে প্রতিদিনই তাঁকে দেয়া হচ্ছে প্রাণ নাশের হুমকি। আফজল বখত খান সাংবাদিকদের বলেন, আমার চাচা মৌলানা ফরিদ আহমদ খান সমাজে নিজকে আলেম পরিচয় দিয়ে দেশ বিদেশে ওয়াজ মাহফিল করে ঘুরে বেড়ান, অথচ এতিমের সম্পদ আত্মসাত করেছেন। এমন কথাই আমি ফেসবুকে লিখেছি। সত্য কথা লিখাই আমার অপরাধ কিনা জানি না। আমি এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে আমার ও আমার পরিবারের কষ্টের কথা তুলে ধরেছি। তিনি বলেন, আমার পিতা যখন মারা যান তখন আমরা ছোট ছিলাম। এরপর আমার আপন চাচারা নানান কুট কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আমাদের সম্মত্তি আত্মসাত করে। আমার পিতার সম্পদ আত্মসাত সুনিশ্চিত করতে আমাদের উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন শুরু করে। সে সময় আমরা মামলা করি। মামলা করলেও এই চাচারা সুকৌশলে মামলার নথিপত্র গায়েব করে ফেলেন। এখানেই শেষ নয় আমাদের উপর নেমে আসে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। যখন বুঝতে পারি এরা আমাদের মেরে ফেলবে তখন প্রাণ ভয়ে আমরা অন্যত্র আশ্রয় নেই। বসত ভিটেসহ পিতার রেখে যাওয়া সহায় সম্পদ সব হারিয়ে আমি প্রাণ রক্ষার্থে দেশের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এরপর আমার মা ও তিন বোন লন্ডনে আশ্রয় নিতে সক্ষম হয়। অনেক কষ্টে আমার পিতার সম্পদের ডকুমেন্ট যোগার করে আইনী পক্রিয়ায় সিলেট শহরের বাসার অংশ আমার মা ও আমারা ভাইবোনদের নামে নামজারি করায় তাদের রোষানলে পড়তে হয়। আমার পিতার রেখে যাওয়া সিলেট শহর এবং গোলাপগঞ্জের বিশাল সম্পত্তি চাচারা জোর পূর্বক ভোগ দখল করে আসছেন। সম্পদ পাওয়া তো দূরের কথা প্রাণের ভয়ে আমাদের আশ্রয় নিতে হচ্ছে অন্যের বাড়ীতে। আমি দেশে থেকে বছরের পর বছর সালিশ পঞ্চায়েতের পেছনে ঘুরে কোন ফল না পেয়ে নিরুপায় হয়ে ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাই। এখানেও হয়রানীর শিকার হচ্ছি। এখন আমাকে হত্যার চেষ্টা এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন চাচারা। এরপর আমার পিতার সম্পদ বুঝে নিতে চাইলে শুরু হয় নানা টালবাহনা, আমাদের জন্যে আমাদের পাড়া প্রতিবেশী সকলেই চাচাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, কোন অবস্থাতেই তারা সম্পদ ফেরত দিতে রাজি নন। এনিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলার সহ পাড়াপ্রতিবেসী সকলেই ওয়াকিবহাল রয়েছেন। অথচ আমি অসহায় হয়ে পড়া প্রতিবেসীর মাধ্যমে তাদের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমি আমার পিতার ঘরে থাকতে পারছি না। তাই আমার দুঃখ, কষ্টের কথাগুলিই ফেইস বুকে লিখেছি। এটা অপরাধ কিনা তা আমি জানিনা। আমার পিতার সম্পত্তি আত্মসাত কারী হলেন আমার আপন চাচারা। আমার দখলবাজ চাচা ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস হসপিটাল এর মুসলিম চ্যাপলাইন মাওলানা ফরিদ আহমদ খানকে ফেইসবুকে, সম্পদ আত্মসাৎকারী উল্লেখ করে স্ট্যাট্যাস দেওয়ায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছেন আমার আরেক চাচা মাওলানা ফরিদ আহমদ খানের বড় ভাই হামিদ বখত খান। আফজল খান বলেন আমাকে আমার পৈতৃক সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে আমার চাচা মাওলানা ফরিদ আহমদ খান বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ নসিওত করে যাচ্ছেন। আমি এতিম অসহায় আমার সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে তার কোন উদ্যোগ না দেখায় আমি ফেইস বুকের নিজের দুঃখটা শেয়ার করেছি মাত্র। আফজল বখত জানান, সিলেটের শিবগঞ্জস্থ খরাদিপাড়ার আনন্দ-২ বাড়ীতে আমার শিশুকাল কেটেছে। অথচ আজ আমাকে অসহায়ের মত ঘুরতে হচ্ছে থাকতে হচ্ছে অন্যের বাড়ীতে। আমি পাড়া, প্রতিবেশীসহ সমাজের সচেতন মানুষের কাছে এর বিচার চাই। মৌলানা ফরিদ খান কিভাবে তিনি এতো সম্পদের মালিক হলেন তার আয়ের উৎস কি? এনিয়ে রয়েছে লোকমনে রয়েছে নানান প্রশ্ন। ফরিদ খানের রাজনৈতিক পরিচয় ও নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন? তিনি বৃটেনে ও মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বের কয়েকটি দেশের একাধিক উগ্রবাদি সংগঠনের সাথে তার সুসম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। তিনি হেলিকাপ্টারে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ করে ঘুরে বেড়ান। এত অর্থের উৎস খুঁজে দেখার দায়িত্ব কাদের? অবশ্যই দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। কিন্তু কি কারণে তারা নীরব? বিষয়টিও খতিয়ে দেখা সময়ের দাবি। লন্ডনে মৌলানা ফরিদ খানের এক সহকর্মী জানান মৌলানা ফরিদ আর্তমানবতার নাম ব্যবহার করে বিদেশ থেকে বিপুল অর্থতুলে তা তিনি কি করছেন তার তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। এলাকাবাসীর অভিযোগ মৌলানা ফরিদ খান ও তার ভাইয়েরা মসজিদ মাদ্রসার নাম ব্যবহার করে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আসছেন। কিন্তু এই অর্থ মসজিদ মাদ্রসার পেছেন ব্যয় হচ্ছে না। তবে কোথায় ব্যায় হচ্ছে? তা খতিয়ে দেখা দরকার। এদিকে লন্ডনে অবস্থানরত আফজল খানের বৃদ্ধা মা তার সন্তানের ও তিন বোন তাদের ভাইয়ের চিন্তায় অস্থির। তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আফজল খানের নিরাপত্তা দাবি করছেন ও দেশে তাদের দখলকৃত সম্পদ পুন:উদ্ধারে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জিখান/প্রবাসনিউজ২৪.কম