প্রতারনা চক্র – ৮

চোর ও প্রতারক আনোয়ার পারভেজ রুবেলের ঠীকানাঃ
Haesong BD Limited. (Yarn Dyeing Factory)
Haesong Complex, Hizalhati(Baroipara),Kaliakair, Gazipur, Bangladesh
Phone:880-6822-52110,  52115, 51990~91, 52149, 52150
Email : dyeing@haesongbd.com

অন্যের কথা লেখা সহজ। মনগড়া কাহিনী লেখা সহজ। অন্যের গল্প শুনে লেখা সহজ। যখন বুকের পাজড়াতে আটকে থাকা নিঃশ্বাস একটু একটু করে বুকের দেওয়াল বেয়ে কন্ঠার কাছে এসে জমে তখন বুকের ভেতর জমে থাকা কস্টগুলো অশ্রু হয়ে কন্ঠা বেয়ে উঠে আসে চোখে আর কপোল বেয়ে ঝরে। কারু করুণা ভিক্ষা চাইনি কোন দিন। ভালবাসা আর করুণা এক নয়। কেউ কারুকে কোনদিন করুণা করার স্পর্ধা যেন না করে । করবে কিভাবে যে নিজেই করুণার ভিক্ষা করে বেড়ায়।

একজন মানুষ যে একা সে তো এমনিতেই একা। একজন একা মানুষ কি দুর্বল? যারা মনে করে একজন একা মানুষ দুর্বল তারা হলো সব চাইতে বেশী নির্বোধ। অবশ্য অনেকেই নির্বোধ হবার অভিনয় করে। নিজেকে অসহায় হিসাবে উপস্থাপন করে। একজন মানুষ যখন সম্পুর্ন একাকী জীবন যাপন করে তখন বুঝতে হবে সেই একাকী মানুষ তার জীবনের সব সিদ্ধান্ত একা গ্রহন করার মত শক্তিশালী মনের অধিকারী। একজন একাকী মানুষ সকল প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক ঝুঁকি থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য প্রতিনিয়ত একাকী সংগ্রাম করে। প্রকৃতির কথা বাদ দিলাম। অপ্রাকৃতিক ঝুঁকিগুলোর কথা বলি যা কিছু কিছু প্রাকৃতিক ঝুকির সাথে সম্পর্ক জড়িত।  একজন মানুষ যখন মাবাবাভাইবোনের আদোর ভালবাসা পেয়ে বড় হয় তখন সে একজন পরিপূর্ন মানুষ হিসাবে পৃথিবীতে পা রাখে। ভালবাসাতে পরিপূর্ন  জগত থেকে বের হয়ে এসে  মুখোমুখী হয় ভালবাসাহীন পৃথিবীর।

প্রতিদিন সে মুখোমুখী হয় নির্মম নিষ্টুরতা ও অবিচারের তখন  তার বুকের ভেতর জমে থাকা আদোর ভালবাসার জগত ধীরে ধীরে বদল হতে থাকে। সেখানে অপ্রাকৃতিক নিষ্টুরতা থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা জমতে থাকে। সে বুঝতে শেখে, সে জানতে পারে, সে চিনতে চেস্টা করে কারা তার ক্ষতি করতে পারে। ভালবাসাহীন এক বিশাল জগতে অনেক মুখোশে ঢাকা মুখগুলোতে হাজার রঙ্গের মুখোশের দিকে তাকিয়ে সে বিভ্রান্ত হয়ে যায়। পাগলের মত খুজতে থাকে একটি মুখ যেখানে এক্টূ আশ্রয় নেওয়া যায় যেখানে একটু ঠাই নেওয়া যায় অথৈ পাথাড়ে ভাসমান একটুকরো কাগজের মত। অথচ যে জানে সেই কাগজ  অচিরেই গলে যাবে, মিশে যাবে, পানির সাথে। সে ভুল করে। এক মুখোশকে চিনতে না পেরে ভাবে – এই তো পেয়েছি। এই বুকে ঠাই নেবো আমি। এইখানে ভালবাসা আছে। এইখানে স্নেহ আছে। এইবুকে ঠায় নেবো। এতদিনের একা একা জীবনের জমা সব কস্টগুলো এই বুকে মাথা রেখে ভুলে যাবো । সে ভুল করে।

এই মুখোশের নীচে আলাদা কেউ ছিলনা। সেই একই নির্মম নিষ্টুর পাথরের মূর্তি। এক প্রেমহীন যন্ত্র। যন্ত্র একা একা চলতে পারেনা। তাকে চালাতে হয়। পাথরের মানুষের সব কিছু স্বাভাবিক মানুষের মত। তার ক্ষুধা লাগে। তার লোভ আছে অতিরিক্ত।  অতিতের সব ক্ষুধা সে মিটিয়ে নিতে ভাল মানুষের মুখোশে খাদ্য খুজছিল। কাগজ খুজছিল। কাগজ ছিনিয়ে নেবে তা দিয়ে খাবার কিনে খাবে । তা দিয়ে সব কিনবে যা সে কিনতে পারেনি অতিতে।  অনেক শকুন উড়ছে আকাশে। অনেক হায়েনা ঘুরছে চারিপাশে। সবার মুখে মানুষের মুখোশ লাগানো। চারিপাশের মুখোশ লাগানো হায়েনারা কেউ জানেনা ভালবাসা কাকে বলে । এখানে ভালবাসার কোন ঠায় নেই। ওদের জন্য দরকার খাদ্য, কাপড়, থাকার জাগা, টিভি, ক্রিকেট, আর বীর্যপাতের জন্য গর্ত। যেকোন গর্ত।  চলাবলা গর্ত। পোষাক পড়া গর্ত । টাকা উপার্জনকারী গর্ত। কোন কিছুর দাবী না করা গর্ত। এমন এক গর্ত যে কোন কিছু চাইবেনা। না কাপড় না ঘর না খাবার না শারী  চুড়ি এই গর্ত কিছুই চাইবেনা শুধু দিবে। টাকা দিবে, পা উঠিয়ে দিবে, খাদ্য কিনে দিবে, থাকার জন্য জাগা করে দিবে, পরিধানের জন্য পোষাক কিনে দিবে, শুধু দিবে দিবে দিবে আর দিবে । বিনিময়ে গর্ত যদি ভালবাসা খোজে তাহলেই ভুল করবে। চরম ভুল। এই হায়েনার কাছে তো ভালবাসা নেই।

যা ছিল তা অভিনয় ছিল । ভালবাসার অভিনয় করে রক্ত চুষে গর্ত ফেলে চলে যায় হায়েনা অন্য এক গর্তের অন্বেষণে । এভাবেই গর্তগুলো খালি হয়ে যায়। একাকী হয়ে যায়। শুন্য হয়ে যায়। হায়েনারা গর্ত বদল করে। রক্তশুন্য করে ফেলে রেখে যায় রিক্ত করে রেখে যায় গর্ত। তখন সে একাকী থেকে যায়। সে বুঝতে শেখে ঘরের বাইরে পা রাখার পরে বাইরের জগত ওয়াল স্ট্রিটের মত কনক্রিটের কর্পোরেশন । এখানে সবাই মুনাফার জন্য মুখ খোলে। মুনাফার জন্য হাটে। মুনাফার জন্য হাসে, মুনাফার জন্য হাগে, মুনাফার জন্য ছুঁচায় মুনাফা ছাড়া এরা বীর্যপাতও করেনা।

মায়ের কোন উপায় ছিলনা, পেটে বাচ্চা এলে সে স্বপ্ন দেখেছে এই শিশুর যে শিশু তার গর্ভে লালিত পালিত হয়েছে বড় হয়েছে এক্টূ এক্টূ করে তার রক্ত পান করে। তার সাথে হেসেছে তারা সাথে কেঁদেছে একদিন সে বিকট যন্ত্রনা দিয়ে যোনীপথে দিয়ে বেড়িয়ে আসে বাইরে। তখন মা তাকে বুকে উঠিয়ে নেয়। তারপর সে কথা বলতে শেখে, বুক্রের উপরে বড় হয় তারপর ধীরে ধীরে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মায়ের বুক থেকে। চলে যায় বাইরে। নিষ্টুর, নির্মম বাইরে, যেখানে মায়ের বুকের ওম খুজে মরে সে দিনরাত। যেখানে সে বারে বারে হোচট খায় হায়েনার সাথে । সেখানে সে বারে বারে রক্ত শুন্য গর্তের ভুমিকা পালন করে ফিরে আসে আপন বলয়ে। একজন একাকী মানুষ এইভাবে শক্তিশালী হয়। তার জীবনযাপন জীবিকার সব সিদ্ধান্ত সে একা নেয় । তার বুকে জমে থাকা কস্টগুলো অশ্রু হয়ে কন্ঠাতে আসে, চোখে উঠে আসে, কপোল বেয়ে নামে।  সে তার অশ্রু লুকিয়ে রাখে অন্ধকারে। হায়েনারা পাছে দেখে ফ্যালে।

হায়েরানারা খুজে ভাঙ্গা হৃদয়ের গর্ত। একজন আঘাত প্রাপ্ত একাকী মহিলাকে খুব সহজেই আঘাত করা যায়। আর আশা থাকে এই একাকী মহিলা আসলে একটি ধংসস্তুপ, টোকা দিলেই ধুলো হয়ে বাতাসে মিশে যাবার অপেক্ষাতে দাঁড়িয়ে আছে যুগ যুগ ধরে।  আগুন, পানি, বাতাস, মাটি তাকেও স্পর্শ করে প্রতিদিন তাকেও মানুষ বানায় প্রতিদিন তাকেও হাসায় তাকেও কাদায় প্রতিদিন । প্রকৃতির তার খুব কাছে বসবাস। খুব কাছে। সে প্রকৃতির একটি অংশ হয়ে যায়। প্রকৃতির আজীব ও অকৃত্রিম খেলা থেকে সে জেনে ফ্যালে একাকী বেঁচে থাকার গোপন সূত্র । হায়েনারা সেটা জানেনা। সব মুখোশধারী হায়েনারা যখন রক্ত চোষার জন্য গর্ত খোজে তখন তারা ভুল করে । একজন একাকী মহিলা যেকোন রক্তচোষা হায়েনার থেকে অনেক শক্তিশালী। একজন একাকী মহিলা বেঁচে থাকার কৌশল শেখে প্রকৃতি থেকে। একাকী শিখে ফ্যালে রক্তচোষা হায়েনা চেনার কৌশল । হায়েনা্রা ঘূরে চারিদিকে। কিলবিল করে। রক্ত চুষবে বলে , ছুবরা করে ফেলে দেবে বলে, এখানে ওখানে সবখানে হায়েনারা ঘোরে রক্ত চুষবে বলে। রক্তচোষা হায়েনারা ক্ষধার্ত। পেটের ক্ষুধা পেটের নীচের ক্ষুধাতে তারা কাতর। তারা বিনা পরিশ্রমে এইসব তাবৎ ক্ষুধা মেটাইতে চায় তাই তারা তাদের জিব্লা বের করে শ্বাস নেয় আর দৌড়াই । দৌড়াই সারা বিশ্বে। রক্তচোষা হায়েনা দৌড়ায় দিনরাত ক্ষুধার খাবার খোঁজে উদরপূর্তি আর গর্ত ভর্তি।  এক এক হায়েনা এক একটি মশার চাইতেও ভয়ংকর সিফিলিস বহন করে। ঘরের দুয়ারের বাইরে ভালবাসা নেই। রক্তচোষা হায়েনা আছে শুধু। কোথাও ভালবাসা নেই।

এই হায়েনারা অন্যের শ্রম থেকে নিজের উদর ভরতে চায়। নিজের জীবন গড়তে চায়। তাই এরা বারে বারে ফিরে আসে একাকী শ্রমজীবির কাছে। বাংলাদেশের শ্রমজীবি মহিলারা অনেক বেকার পুরুষ পালে । বেকার এবং অলস পুরুষ । এরা শ্রমজীবি মহিলাদের নানাভাবে মানসিক চাপের  রেখে তাদের কস্টার্জিত টাকা ভোগ করে।  ওরা একা হয়ে যাবে এই আশংকায় সব সহ্য করে। ওরা মায়া করে, ভালবেসে ফ্যালে, লালন করে এক একটি হায়েনা, রক্তচোষা হায়েনা পুরুষ।

 

 

২ thoughts on “প্রতারনা চক্র – ৮

Leave a Reply to Alhajj Jahangir Alam Shikder Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.