ব্যর্থ বাংলা ভাষা আন্দোলন

ভালবাসা দিবস বা ভালেন্টাইনস ডে তে  সারা বিশ্বে যেসব চকোলেট বিক্রি হয় সেইসব চকোলেট উৎপাদনের কাঁচামাল সংগ্রহ করে শিশু শ্রমিকেরা। ক্ষুধার্ত শিশুদের ব্যবহার করা হয় শ্রমিক হিসাবে। [ বিস্তারিত জানার জন্য এইখানে ক্লিক করুন।] যারা চকোলেট খায় বা উপহার পায় তারা এসব নিয়ে ভাবেনা। ভাবার দরকার নেই। বায়ান্ন সালে কে মরেছিল আর কে গুলি চালিয়েছিল এটা নিয়ে প্রজন্ম ভাবেনা। ভাবার দরকার নেই। বায়ান্ন সালে কেনো ভাষার জন্য আন্দোলন হয়েছিল সেটাও কেউ জানেনা। জানার দরকার মনে করেনা। চকোলেটের মত ভাষা আন্দোলনকে প্যাকেজে পুড়ে বাজারজাত করা হয়েছে।

ভাষা আন্দোলনের পোষাক আছে, পোষাকের ডিজাইনার আছে, গান আছে, স্যান্ডেল আছে, সানগ্লাসেস আছে, টিভি অনুষ্টান আছে, অতিতের পকেট্মার ও ছ্যাঁচড়া চোরেরা সব নানা সংগঠন থেকে সেজেগুজে আতর মেখে শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসে ব্যাস খেল খতম পুরা ভাষা আন্দোলন হজম। শহীদ মিনার এলাকাটাও এখন একদল লোকের জন্য পবিত্র স্থান এবং অন্য একদল লোকের প্রবেশ নিষেধ বলেই অনেকে মনে করে।

সেদিন ফেসবুকে একদল মেয়ে যাদের ভেতরে কেউ কেউ বোরখা ও হিজাব পরিহিতা ছিলেন তারা সব শহীদ মিনারে বসে ছবি উঠালে সেই ছবিটি অন্য একজন প্রবাসী বাংলাদেশী পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্টাটাস লেখে “এই জন্য কি আমরা বুকের রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি ?”

এই স্টাটাসটি ছিল খুব হাস্যকর ।
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মতই ব্যর্থ হয়েছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন।
বাংলাদেশ যেহেতু একটি স্বাধীন দেশ নয় তাই সেখানকার দাস মানসিকতার প্রভুর পদলেহনকারীরা স্বাধীনতা নিয়ে প্রতিদিন রম্য রচনা লেখে।

আমি লিখছি স্বাধীনতা কাকে বলেঃ
– বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হতো তাহলে ভারতের বিএসএফ এসে প্রতিদিন বাংলাদেশী হত্যা করতে পারতোনা (প্রশ্নই উঠেনা। ভারত আন্তর্জাতীক সীমা লঙ্ঘন করে প্রতিবেশী দেশের নাগরিককে গুলি করে হত্যা করবে আর “স্বাধীন” বাংলাদেশ মুখ বুজে সেটা সহ্য করবে? অসম্ভব!! কানাডার সীমান্তে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের নাগরিক হত্যা করা হয়না। ইতালীর সীমান্তে যুক্তরাজ্যের নাগরিক হত্যা করা হয় না। পালেস্টাইনের ভেতরে এসে ইসরায়েলী সৈন্য প্রতিদিন পালেস্টাইনীদের হত্যা করে। প্যালেস্টাইন স্বাধীন রাস্ট্র নয়। বাংলাদেশও স্বাধীন রাস্ট্র নয়। এখানেই ব্যর্থ হয়েছে ভাষা আন্দোলন (১৯৫২) ও মুক্তিযুদ্ধ (১৯৭১)।

–  বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হতো তাহলে পুলিশ গুলি করে বা পিটিয়ে বা আগুনে পুড়িয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা করতে পারতোনা
– বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হতো তাহলে হেফাজতে ইসলাম গনহত্যা হতোনা
– বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হতো তাহলে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিচারবিভাগ থাকতো । নিরীহ মানুষকে কারাগারে বন্দী, নির্যাতন, গুম, খুন, ভুয়া মামলা, ব্ল্যাকমেইল ইত্যাদি কিছুই হতোনা।
– বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হতো তাহলে বাক স্বাধীনতা থাকতো, বিকিনি ও বোরখা পড়ার স্বাধীনতা থাকতো, নাগরিক জীবনে নিরাপত্তা থাকতো , যার যার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থাকতো। পুলিশ এসে মসজিদের ইমাম সাহেবের খুদবার ড্রাফট করে দিতোনা
– বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হতো তাহলে দেশের উন্নয়নের জন্য প্রচুর মানব সম্পদের দরকার হতো তাই কারুকে বিদেশে শ্রম অপচয় করতে যেতে হতোনা।
– বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হতো তাহলে সুন্দরবন ধবংস করে সেখানে ভারতের রাস্ট্রিয় মালিকানাধীন কয়লা বিদ্যুৎ  উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপিত হতোনা।
– বাংলাদেশ স্বাধীন হলে বারে বারে “স্বাধীন” “স্বাধীণ” বলে  চিৎকার করে আর “ত্রিশ লাখ মাবোনের বুকের তাজা রক্তের সাগরে” দিনরাত সাতার কেটে গুলি চালিয়ে প্রতিদিন নিজের ভাইকে  হত্যা করে রক্তের সাগর সম্প্রসারিত করতে হতোনা।

গোলামেরা স্বাধীনতা চায় না। গোলামেরা চায় রাজ্যসরকার হতে। গোলামেরা চায় কমিশন আর সারা দেশের সব সম্পদ কিছুটা নিজেরা নিয়ে বাকী সব প্রভুদের দেশে পাচার করে কেন্দ্রিয় সরকারের হুকুম মেনে চলতে। বৃটিশের গোলামেরাও এমনই ছিল। পাকিস্তানের গোলামেরাও এমনই ছিল। ভারতের গোলামেরা তাই ভাষা আন্দোলনকে কর্পোরেট প্যাকেজে ভরে ফেলেছে আর মুক্তিযোদ্ধাদের পুতে ফেলেছে মাটির নীচে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.