Schizophrenia বা সিজোফ্রেনিয়া রোগ

Schizophrenia রোগ মানুষের ব্রেইনে গুরুতরভাবে প্রভাব বিস্তার করে ফলে এই রোগে যারা আক্রান্ত তারা স্বাভাবিক জিনিষগুলোকে অস্বাভাবিক  ভাবে চিন্তা করে ও অস্বাভাবিক আচরণ করে।  “schizophrenia” শব্দের অর্থ হলো খন্ডিত মন, যাকে বলে চিন্তা ও আবেগের স্বাভাবিক ভারসাম্য ব্যহত । Schizophrenia এমন একটি রোগ যা কখনও ভাল হয়না। এই রোগে যারা আক্রান্ত তাদের সারাজীবন চিকিৎসা করা লাগে।

এই রোগের লক্ষনঃ
পুরুষের মধ্য এই রোগ কুড়ি বছরের মাঝামাঝিতে দেখা দিতে পারে। নারীদের মধ্য এই রোগ দেখা দিতে পারে কুড়ি বছর বয়সের শেষের দিকে। শিশুদের মধ্য সচারচর এই রোগ ধরা পরে না। আর যারা ৪৫ বছরের উপরে বয়স তাদের মধ্যও এই রোগ ধরা পরতে দেখা যায়নি বললেই চলে।  এই রোগের অনেকগুলো সমস্যার মধ্য কিছু সমস্যা হলোঃ
— অস্বাভাবিক চিন্তা ভাবনা
—  অস্বাভাবিক ব্যবহার
— অস্বাভাবিক আবেগপ্রবণতা
রোগীদের মধ্য এই আচরণের তারতম্য থাকলেও সব রোগীর ভেতরই স্বাভাবিক কাজ কর্ম করার ক্ষমতা লোপ পায়।

অবুঝের মত আচরণ — এই রোগীরা সাধারণভাবে ভুল বুঝে।  এরা এমন কিছু বুঝে বাস্তবতার সাথে যার কোন মিল নেই। উদাহরণ, এই তুমি আমাকে অপমান করছো (কেউ অপমান করেনি ), অমুকে আসলে আমাকে উদ্দেশ্য করেই এই মন্তব্য করলো, জানো আমাকে সবাই সব সময় খুব অপমান করে, তাছিল্য করে, অবহেলা করে, আমি অসাধারণ, আমি একজন দামী নামী ব্যক্তি,  যেকোন সময়ই একটা বিশাল প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিতে পারে ( ভবিষ্যৎ বানী করে বসবে), আমার শরীরটা অকেজো হয়ে গেছে, ইত্যাদি। এই ধরণের ভুল বুঝা বা অতিরঞ্জিত করে সব কিছু দেখা বা বলা  বা তিল থেকে তাল করে ফেলা এই রোগীদের পাঁচ জনের মধ্য চার জনের ভেতরে প্রবলভাবে দেখা যায়।

ফান্টাসি, অলৌকিক, চিন্তাভাবনা — এই রোগীদের ভেতরে আজগুবী চিন্তাভাবনা থাকাটা স্বাভাবিক। এইসব চিন্তাভাবনার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। কেউ কোন কথা না বললেও এরা কার যেন কণ্ঠস্বর শুনতে পায়, কেউ কোন শব্দ না করলেও এরা অনেক ধরণের শব্দ শুনতে পায়, একা একা কথা বলে, পথে চলতে চলতে অন্যমনস্ক থাকে, ইত্যাদি।

অগোছালো চিন্তাভাবনা — অগোছালো চিন্তাভাবনার কারণে এই রোগীরা গুছিয়ে কথা বলতে পারেনা। কথা বলার সময়ে জড়তা চলে আসে বা অগোছালো কথা বের হয়ে আসে। কোন প্রশ্নের যখন উত্তর দেয় সেটা অপ্রাসংগিক হতে পারে। সোজা কথা সোজা উত্তর না দিয়ে , কোন প্রশ্নের এমন একটা উত্তর দিবে যে উত্তরের সাথে প্রশ্নের কোন সম্পর্ক নেই। সম্পুর্ন উলটা উত্তর দিবে বা সেই প্রশ্নের ধারে কাছেও নেই এমন একটি উত্তর দিবে। যেহেতু তার কানে প্রশ্নটি অন্যভাবে শোনা যাচ্ছে তাই সে যেভাবে শুনছে সেভাবেই উত্তর দিচ্ছে যা অন্যকেউ বা  যে প্রশ্ন করছে সে বুঝতে পারছেনা।  কারণ এই রোগী স্বাভাবিকভাবে কথা শ্রবনে অপারগ। সেজন্য এই রোগীদের সাথে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব হয়না। কথা বলার সময়ে জগাখিচুরি পাকিয়ে ফ্যালে। অর্থহীন প্রলাপ বকে।

অকারনেই এরা শিশুসুলভ আচরণ করে। বোকার মত একটা কাজ করে বসে। এই রোগী কখন কি করে বসবে তা এই রোগীর সামনে বসে থাকা কোন স্বাভাবিক মানুষ ধারণা করতে পারবেনা। শিশুদের গতি বা কার্যকলাপ বা কি করতে যাচ্ছে বা কি করতে চাইছে তা বোঝা যায় কিন্তু এই রোগীরা কিছুক্ষণ পরে কি করবে তা আগে থেকে বোঝা সম্ভব না। সেজন্য এই রোগীদের যদি কোন কাজ দেওয়া হয় এরা তা সঠিকভাবে করতে পারেনা। এদেরকে কোন কাজ দিলে সেটা তারা সম্পুর্ন করতে পারেনা, সেটা করার চেস্টা করার সময় অহেতুক শব্দ করে বা বিরক্ত করে বা  সম্পুর্ন অনিচ্ছা প্রকাশ করে।

যেহেতু এই রোগী স্বাভাবিক আচরণ করতে পারেনা তাই যেকোন কাজেই এরা অনিহা প্রদর্শন করে। উদাহরণ, এরা আবেগ প্রদর্শন করেনা, চোখে চোখ রেখে কথা বলেনা, কথা বা শব্দের সাথে মুখের ভাব বদল হয়না, ভাবলেশহীন থাকে, কথা বলার সময় স্বাভাবিক শরীর, মুখ, হাত বা পায়ের নড়াচড়া দেখা না দিতে পারে, যা স্বাভাবিকভাবে কথা বলার সময় মানুষ করে সেটা এই রোগে আক্রান্ত যারা তারা করেনা। এই রোগে যারা আক্রান্ত তারা কোন পরিকল্পনা করতে অপারগ। উদাহরন, কথা কম বলতে পারেনা  বা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পারেনা, প্রতিদিনের কর্মকান্ডে প্রচন্ড অনিহা প্রদর্শন করে থাকে, সামাজিকভাবে এরা কারু সাথে মিশতে চায়না এবং কোন সমাবেশ বা আনন্দ উৎসবে নির্লিপ্ত থাকে অর্থাৎ চারিপাশে যখন সবাই মিলে কোন উৎসবের জন্য সমবেত হয়েছে তখন এই রোগী সবার সাথে হাসি, খুশী আনন্দ অনুভব ইত্যাদি করেনা। উৎসবে এরা স্বাভাবিক অন্যদের মত সাড়া দেয়না।

কিশোরীদের মধ্য এই রোগ দেখা দিলে – এরা স্কুলে যেতে চায়না, পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও বন্ধুদের সাথে মিশতে চায়না, ঘুমাতে পারেনা, সব সময় বিষন্ন ও বিরক্ত থাকে, কোন কিছুতে কোন উৎসাহ পায়না।

এই রোগীদের সব সময়ই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। কানাডাতে একটি বিশেষ হাসপাতাল আছে যেখানে এই রোগীদের চিকিৎসা করা হয়। আমার এক বড় ভাইয়ের মেয়ে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিল। আমি তার সাথে দেখা করতে চাইলে সে দেখা করতে চায়না। হাসপাতাল থেকে তাকে কিছুদিনের জন্য  বাসায় আনা হয়। একদিন সে ব্যালকনি থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে।

এই রোগীদের মধ্য তীব্র আত্মহত্যা করার প্রবনতা থাকে।

telefilm “schizOphrenia”

Four Patients with Schizophrenia

একা একা কথা বলে

২ thoughts on “Schizophrenia বা সিজোফ্রেনিয়া রোগ

Leave a Reply to Nurul Amin Khan Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.