প্রবাসীদের বিদেশ থেকে সোনা আনার নতুন আইন

বাংলাদেশে আসার সময় ব্যক্তি পর্যায়ে সোনা বা রুপার অলঙ্কার ও বার আনার নিয়মে পরিবর্তন এনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এখন থেকে ‘ব্যাগেজ রুলস’ অনুযায়ীই কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশে আসার সময় সর্বোচ্চ ২০০ গ্রাম সোনা বা রুপার অলঙ্কার ও বার আনতে পারবেন।

এর আগে ‘ব্যাগেজ রুলস’ এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ আদেশে সর্বোচ্চ দুই কেজি সোনা বা রুপার বার আনা যেত। ১৯৯৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ওই বিশেষ আদেশ জারি করে।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ নতুন নিয়মের সার্কুলার জারি করেছে। সার্কুলারে ১৯৯৬ সালের ওই আদেশ বাতিলও করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত দেশের সোনা-রুপার ব্যবসায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খান।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দুই কেজি সোনা আনার বিধানটি শুধু কাগজেই ছিল।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশে আগত একজন যাত্রী করমুক্ত অবস্থায় ১০০ গ্রাম সোনা বা রুপার অলঙ্কার আনতে পারবেন। ১০০ গ্রামের বেশি আনতে কর লাগবে; তবে ২০০ গ্রামের বেশি আনতে পারবেন না।

সোনা বা রুপার বার আনলে ১০০ গ্রামেও কর দিতে হবে; ২০০ গ্রামের বেশি আনা যাবে না। প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনায় ৩ হাজার টাকা কর নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন আইনে কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত সীমার বেশি সোনা বা রুপা আনলে তা অবৈধ হবে। তবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে যে কোনো পরিমাণ সোনা বা রুপা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে আমদানি করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, “সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বেশিরভাগ যাত্রী বা ব্যক্তিই সোনা আনার ক্ষেত্রে ঘোষণা দিয়ে আনেন না। বিমানবন্দরে ধরা পড়ার পর তারা আদালতে গিয়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করেন।

“ওই যাত্রীরা বলে থাকেন, নিয়ম অনুযায়ী দুই কেজি পর্যন্ত সোনার অলঙ্কার বা বার কর দিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ কর দেওয়ার সুযোগ না দিয়েই আটক করেছে। এরপর তারা আদালতের মাধ্যমে শুল্ক পরিশোধ করে ওইসব সোনা ছাড়িয়ে নেন। এজন্য শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এই নিয়ম রহিত করার অনুরোধ করে। তার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

তিনি জানান, সরকার সময়ে সময়ে ব্যাগেজ রুলস পরিবর্তন করে। এর আগে ব্যাগেজ রুলসে পাঁচ কেজি পর্যন্ত সোনা বা রুপা আনার সুযোগ ছিল। পরে তা পরিবর্তন করে সর্বোচ্চ ৩০০ গ্রাম করা হয়। সর্বশেষ আরও কমিয়ে সর্বোচ্চ ২০০ গ্রাম নির্ধারণ করা হয়।

বাজুস সাধারণ সম্পাদক এনামুল বলেন, “দুই কেজি সোনা আনার যে বিধান ছিল তা মূলত কাগুজে বিধান, বাস্তবে কেউ গ্রহণ করেনি। কারণ ওই নিয়মে সোনা বা রুপা আনা অনেক জটিল, অনেকগুলো ধাপ পার করে অনুমোদন মিলত। তবে অনেকে ধরা পড়ার পর ওই নিয়ম মেনেছে।”

“এজন্য ওই নিয়ম বাতিল করা না করা আমাদের জন্য সমান। এতে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।”

১৫ thoughts on “প্রবাসীদের বিদেশ থেকে সোনা আনার নতুন আইন

Leave a Reply to Shahin Vai Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.