জয়ের কঠোর সমালোচনায় পার্থ! খালেদা জিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে খালাতো ভাইদ্বয়ের স্ট্যাটাস লড়াই!

সম্পর্কে তারা পরস্পরের ভাই। মায়ের ফুফাতো বোনের ছেলে। আবার মায়ের চাচাতো ভাইয়ের মেয়ের জামাই। আন্দালিভ রহমান পার্থ শেখ হাসিনার ফুফাতো বোনের ছেলে (মরহুম ফজলুল হক মনির আপন ভাগ্নে)। আবার পার্থর স্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালের মেয়ে, শেখ হাসিনার অত্যন্ত স্নেহাস্পদ। সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাথে খালাতো ভাই কাম ভগ্নিপতি পার্থর সম্পর্ক আগে মধুরই ছিল। কিন্তু বিভাজনের রাজনীতি ভাইকে ভাইয়ের শত্রু করেছে, যারা ছিল শত্রু (বিএনপি) তাদেরকে করেছে মিত্র। রাজনীতি হিসাব-নিকাশ রক্তের সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলেছে।

সজীব ওয়াজেদ জয় তার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। শেখ হাসিনার উত্তরসূরিও। আর পার্থ বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়াররম্যান। বিজেপি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক। ফলে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়া আপত্তিকর মন্তব্য করায় শনিবার রাত ২.৩৯ মিনিটে নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যটাসে জনাব জয় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানাতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন। তাকে পাকিস্তান চলে যেতে বলেছেন। জয়ের ইংরেজিতে লেখা মূল স্ট্যাটাসটির বাংলা ভাষান্তরে খালেদা জিয়া সম্পর্কে তুই-তোকারি জাতীয় এমন কিছু শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যাতে রাজনীতি-নিরপেক্ষ মানুষও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ফেসবুকে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু কেউই জনাব জয়ের তীব্র সমালোচনা করেননি।

এক নেতা-এক পার্টি- বিজেপি চেয়ারম্যান পার্থ ২০০৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষে ভোলা সদর থেকে এমপি হন। ভবিষ্যতে জোটের মনোনয়ন নিশ্চিত ও আল্লাহ চাইলে মন্ত্রীত্ব পাবার জন্য ফেসবুকে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করতে ছাড়েন না। শনিবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাসের জবাব দিতে ৩টি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সর্বশেষ স্ট্যাটাসটি দিয়েছেন রাত সাড়ে ৮টায়। অন্য দুটি দিয়েছেন রাত সাড়ে ৬টার কাছাকাছি কোন সময়ে। পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনায় রেখে জয় ও পার্থ ভ্রাতৃদ্বয়ের স্ট্যাটাসগুলো তুলে ধরা হলো:

দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন:

আমি ক্ষুব্ধ যে বিজয়ের মাসে খালেদা জিয়া এবং তার দল বিএনপি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। খালেদা নৃশংস পাক আর্মি ও তাদের সহযোগী খুনি জামায়াত-ই-ইসলামী কর্তৃক আমাদের নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাকে পাকিস্তানিদের মতই কমিয়ে বলে আসছে। সে দাবি করছে মাত্র কয়েক শত হাজার হত্যা হয়েছে। আজ বিএনপি এমনকি সেই মৃতের সংখ্যার উপর জনমত জরিপ করতে বলছে! স্বীকৃত সত্য সব সময়ই সত্য। সেটা কখনও জরিপ দিয়ে নির্ণীত হয় না।

৩০ লক্ষ পুরুষ, নারী এবং শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিলো। হিন্দুদের নির্যাতন ও দেখামাত্র গুলি করা হয়েছিলো। সমস্ত গ্রাম উজাড় করে ফেলা হয়েছিলো। এমনকি যখন তারা আত্মসমর্পণ করতে রাজী হয়েছিলো তখনও তারা আমাদের সেরা বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে সবাইকে হত্যা করেছিলো। এগুলো যুদ্ধে হতাহতের কোন ঘটনা ছিলো না। এসব ছিলো গণহত্যা।

খালেদা এখন আবারও এইসব খুনিদের রক্ষা করতে চেষ্টা করছে। সে নৃশংসতার শিকার মানুষগুলোর মন্ত্রী বানিয়েছে সেই খুনিদেরই। সে এখন থুতু ফেলেছে ৩০ লক্ষ শহীদের কবরে এবং থুতু ফেলেছে আমাদের দেশের মুখে। এরপর আমার আর এই মহিলার প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা অবশিষ্ট নেই। আমি ঘৃণা করি যে সে কোন সময় আমাদের জাতির প্রধানমন্ত্রী ছিলো। সে একজন পাকিস্তানি এজেন্ট। সে বারংবার আইএসআই এজেন্টদের সাথে মিলিত হয়েছে এবং নির্বাচনগুলোতে আইএসআই থেকে টাকা নিয়েছে। তার বাংলাদেশ থেকে বিদায় হওয়া এবং তার ভালোবাসার পাকিস্তানে গিয়ে থাকা উচিৎ।

আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি খালেদার বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানাতে যান। বিএনপি এবং তাকে দেখান যে তার পাকি প্রভুরা এবং জামায়াতি পোষা গুণ্ডারা আমাদের ভাই এবং বোনেদের যে হত্যা করেছে সেই স্মৃতি অপপ্রচার চালিয়ে মুছে ফেলা যাবে না। আমার সাথে একত্রে দাবী জানান, খালেদা পাকিস্তানে ফিরে যা।

জয়ের তুই-তোকারি এবং মোদির কদমবুচি: আন্দালিভ রহমান পার্থ

কিছুদিন আগে নিজের নানাকে ডেকেছেন দাদা । সেই নানা আবার যেই সেই নানা নন। যিনি হলেন সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। তাঁর মেয়ের ঘরের চল্লিশোর্ধ নাতি তাঁকে দাদা ডেকে ফেলেছেন । কাজেই এই বাংলা মুলুকের ভবিষ্যতটি অনেক আগেই পানির মতো পরিষ্কার হয়ে পড়েছে।

গুগলের আগেই তিনি নাকি সার্চ ইঞ্জিন অাবিষ্কার করেছিলেন । কাজেই তার মেধা ও মনন সম্পর্কে জাতি যা বোঝার তা বুঝে নিয়েছে।

সবর্কালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালীর সেই গুণধর নাতি এবার তার মায়ের চেয়েও বয়সে দুই বছরের বড়, দেশের তিন তিন বারের প্রধান মন্ত্রীকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেছেন।

ভদ্র সমাজে কোন ভরা মজলিসে অবুঝ কোন বাচ্চা কোন মুরব্বীকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করে ফেললে সেই বাচ্চার জন্ম দাতা ও জন্মদাত্রী চরমভাবে বিব্রত হয়ে পড়েন। জানি না, জয়ের মা জয়ের জন্যে তেমনভাবে বিব্রত হয়েছেন কি না।

এই সজীব ওয়াজেদ জয়ের যখন জন্ম হয় তখন পুরো জাতি স্বাধীনতার জন্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। এই বেলায় একটা আশ্চর্যজনক কন্ট্রাস্ট বা বৈপরীত্য দেখা যায়। যে পাক আর্মি সারা দেশে অসংখ্য নারীর প্রতি অমানবিক আচরন করেছে – সেই পাক আর্মিই জয়ের গর্ভবতি মাকে নিজেদের গাড়িতে করে হাসপাতালে রেগুলার অানা নেয়া করেছে । বলা যায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পাক আর্মির আঁতুড় ঘরেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম হয়েছে । তার কানে প্রথম আজানটিও সম্ভবত পাক আর্মির ড্রাইভার গোছের কোন নামাজি ব্যক্তি বা রাজাকার ঘরানার কোন ব্যক্তি অনেক মহব্বত সহকারে দিয়েছে। জন্ম মুহুর্তে পাক আর্মির সেবা নেয়া এই দেশে একমাত্র ও সবচেয়ে সৌভাগ্যবান শিশু হলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

সেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছে এখন পৃথিবীতে সবচেয়ে ঘৃণার ও সবচেয়ে নাপাক জায়গা হলো পাকিস্তান। বেগম জিয়াকে তিনি যেই মুহুর্তে বলেছেন, ‘খালেদা তুই পাকিস্তানে যা’ সেই মুহুর্তে জয়দের পরম আরাধ্য পুরুষ নরেন্দ্র মোদি সারা পৃথিবীকে হতবাক করে দিয়ে সেই পাকিস্তানে চলে গেছেন। দেশ দুটির মধ্যে যে কোন সময় পারমাণবিক যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। সেই এক নম্বর শত্রু পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রীর মায়ের পা ধরে কদমবুচি করেছেন সেই মোদি।

মোদির মা মোদিকে যা শিখিয়েছেন, জয়ের মা জয়কে তা শেখাননি।

ভাষার ব্যবহার: আন্দালিভ রহমান পার্থ

ভাষার ব্যবহার জানতে সুস্থ মানসিকতা ধারন করা আবশ্যক,দেশ থেকে সম্মান জিনিসটা উঠে যাচ্ছে,ক্ষমতার দাপটে মানুষকে মানুষ হিসেবে গন্য না করার প্রবণতা শুরু হয়েছে,এহেন অবস্থায় জাতীকে শক্তভাবে নোংরামির জবাব না দিতে পারলে এই জাতীকে একদল মনুষ্যরূপী দু পেয়ে পশু অসুস্থ সমাজ তৈরি করে ফেলবে কথা হলো সংখ্যা যেমনই হোক সেটার সত্যতা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি,লন্ডনে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে যারা আত্মাহুতি দিয়েছিলেন এবং তারা কোন দেশের নাগরিক ছিলেন তা খোদাই করে লেখা আছে বিভিন্ন স্মৃতি স্তম্ভে। আমি মনে করি একটা সুস্থ জাতীর সুস্থতার জন্যই এই সংখ্যাটা নিশ্চিত করা জরুরি, যেমন জরুরি জেনারেল অরোরার কাঁছে আত্মসমর্পণ করা জেনারেল নিয়াজীর ছবি কে নিয়ে বিশ্লেষণ মূলক ইতিহাস লিখে নতুন প্রজন্মকে জানানো, না হয় এই বছরেই মুক্তিযুদ্ধকে ইন্ডিয়ান সম্পত্তি বানিয়ে বিজয় দিবস পালন করা হয়েছে ম্লান হয়ে গেছে আমাদের শহীদদের রক্তের মূল্য, সেটার জন্য জনসচেতনতা যেমন জরুরি তেমনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া প্রকৃতদের সনাক্ত করে প্রকৃত সংখ্যা বের করা কোন মনগড়া কথার ভিত্তিতে খিসতিখেউড় নয় বরং প্রকৃত সংখ্যা বের করাই বাপের বেটা আবদুল্লার কাজ, না হয় মায়ের মতো অন্যকে আজে বাজে অসন্মানজনক কথা বলে নিজেকে বার বার রং হেডেড প্রমাণ করার কোন মানেই নেই। যেখানে নিজের জন্মই হয়েছিল পাকি ক্যাম্পে এবং মিষ্টি বিতরন করা হয়েছিল সেইদিন,জন্মগত ভাবে পাকি হয়ে অন্যকে পাকিস্তান চলে যাবার কথা বলা সত্যিই মনে হয় যে, “একটি বড় দেহে ক্ষুদ্র একটি শিশুর বসবাস”।

আন্দালিভ রহমান পার্থ’র প্রথম স্ট্যাটাস

মায়ের মত ছেলেটার মাথা ও গেল শুধু অপেক্ষা সুপ্রিম কোর্ট থেকে ডিকলিয়ারেশন যে”মা বেটা দুইজনই রং হেডেড”। আফসোস হয় ওয়াজেদ মিয়ার মতো একজন ভাল মানুষের জন্য,এই পরিবারের কুকীর্তির জন্য ওনার নাম ও বার বার চলে আসে “হতভাগা” বলে।

৩১ thoughts on “জয়ের কঠোর সমালোচনায় পার্থ! খালেদা জিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে খালাতো ভাইদ্বয়ের স্ট্যাটাস লড়াই!

Leave a Reply to Toriquzzaman Khan Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.