নূর হোসেনের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছেন ৩০ আইনজীবী

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি নূর হোসেনকে জুমার নামাজের পর আদালতে হাজির করা হলে ওই মামলায় নূর হোসেনের বিপক্ষে আদালতে দাঁড়াবেন রাষ্ট্রপক্ষের ৩০ আইনজীবী।

শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় সাংবাদিকদের এমন তথ্যই জানিয়েছেন জেলা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন। এর আগে সকাল সোয়া ৮টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ আনা হয়। তাকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে রাখা হয়েছে।

নূর হোসেনের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াচ্ছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ‘দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নূর হোসেনের পক্ষে আইনজীবী দাঁড়াতে পারেন। কিন্তু কোনো আইনজীবী আদালতে হাজির হবেন কি না বলা যাচ্ছে না। তবে সাত খুনের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ৩০ জন আইনজীবী আদালতে দাঁড়াবে। যাতে করে কোনোভাবে এ মামলা অন্য কোথাও হস্তান্তর না করতে পারে।’

এদিকে সকালে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, নূর হোসেনকে জুমার নামাজের পরে আদালতে ওঠানো হবে। ইতোমধ্যে নথি প্রস্তুত করা হয়েছে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, ‘পুলিশ এর আগে বলেছিল নূর হোসেনের জন্য তারা অপেক্ষা করছে। নূর হোসেন দেশে ফিরলেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে। কিন্তু পুলিশ নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন মামলার বাদী নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দাখিল করেছিলেন। কিন্তু আদালত তার নারাজি খারিজ করে দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাব। নূর হোসেন আলোচিত সাত খুনের পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতা। আমি মনে করি নূর হোসেনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে হলেও তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তা হলে আলোচিত সাত খুনের রহস্য উন্মোচিত হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন অনেক মামলার নজির রয়েছে যেগুলো আদালতে সাক্ষ্য শুরু হওয়ার পরেও পুনঃতদন্ত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জেই এমন নজির আছে। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ১৬ জুন চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা মামলার ক্ষেত্রে আদালতে সাক্ষী শুরু হওয়ার পর মামলাটি আবারো পুনঃতদন্তের দিকে গেছে।’

সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিউদ্দিন বলেছেন, আলোচিত ৭ খুনের দুটি মামলাতে গ্রেপ্তারকৃত ২১ আসামিই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ১৪ জন সাক্ষী স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা পেন্ডিং রয়েছে, যার মধ্যে ১১টি মামলা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ও ২টি ফতুল্লা মডেল থানায়। ১০টি জিআর মামলা, ২টি সিআর মামলা ও একটি কনভিকশন হয়েছে। ওই ১৩টি মামলাতেই নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। ১৩ মামলাতেই নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হবে।

নূর হোসেনের রিমান্ড চাওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘যেহেতু নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলাতেই আদালত থেকে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে সেহেতু তার রিমান্ড চাওয়ার সুযোগ নেই।’

১৫ thoughts on “নূর হোসেনের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছেন ৩০ আইনজীবী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *