কে আগে এসেছে – আইন না অপরাধ ?

১ -কে আগে এসেছে? মুরগী না ডিম?
২- কে আগে এসেছে ? অপরাধ না আইন ?
৩ – কে আইন বানিয়েছে? স্বৈরাচারী না দেশপ্রেমিক ?

#১ প্রশ্নের উত্তর আমি জানিনা।
#২ প্রশ্নের উত্তর প্রকাশিত হয়েছিল অনেকবার তাই আমি জানি অপরাধ আগে এসেছে। সেই অপরাধকে রোধ করার জন্য আইন, বিচার, ও শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
# ৩ প্রশ্নের উত্তর হলো একজন স্বৈরাচারী শাসক তার নিজের স্বার্থে আইন বানাবে। অথবা সমাজে যারা তার স্বার্থ সংরক্ষন করে তাদের স্বার্থে আইন বানাবে। স্বৈরাচারী প্রশাসক অবশ্যই জনকল্যান, দেশ বা দেশপ্রেমের কথা ভাবেনা। প্রশ্নই উঠেনা। যদি আফ্রিকার উন্নয়ন করার জন্য বৃটিশ, ডাচ, অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান, চীনারা আফ্রিকাতে যেতো তাহলে তো আর আফ্রিকা বাদে বাকী সব দেশের উন্নয়ন হতোনা। বৃটিশরা পাক ভারতে যেসব আইন তৈরি করে সব আইনই তাদের নিজেদের স্বার্থে তৈরি হয়।

পূর্ব বাংলা কোনদিন স্বাধীন ছিলনা বা হয়নি সেজন্য স্বাধীন দেশে দেশ্ প্রেমিক প্রশাসক ও আদালত দ্বারা জনকল্যানের জন্য আইন প্রনয়ন করা হয়নি সেজন্য কোথায় যেন একটা খেই হারিয়ে গেছে। জালিয়ানওয়ালা বাগ অমৃতসরে পুলিশে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিল ১৯১৯ সালে সেই পুলিশ এখনও গুলি করে মানুষ হত্যা করছে ২০১৫ সালে। সেদিন ১৪৪ ধারা জারি হয়েছিল। এখনও ১৪৪ ধারা জারি হয়। ১৪৪ ধারা জারি করা হয় জনগনের জানমাল রক্ষা করার জন্য। জনগনের জানমাল রক্ষা করার জন্য পুলিশ গুলি করে জনগনকে। জিনিষটা খুব সহজ। স্বৈরাচারী সরকার যেহেতু ব্যক্তি ও বিদেশি স্বার্থে নিয়োজিত তাই পুলিশও তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে।

জালিয়েনওয়ালাবাগের কথায় মহাত্মা গান্ধির কথা মনে পড়লো। ১৩ই এপ্রিল ১৯১৯ সালে অমৃতসরের এই পার্কে মহাত্মা গান্ধির আসার কথা ছিল। সেদিন পাঞ্জাবে নববর্ষের দিন। নববর্ষ উৎযাপন করার জন্য অমৃতসরসহ আশেপাশের এলাকার অনেক মানুষ এসে এই পার্কে সমবেত হয়েছিল। গান্ধীজীর অহিংসবাদ মেনে নিয়েই নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশুরা এসে এই পার্কে সমবেত হয়। এই পার্কটি ৭-৮ একর জমির উপরে অবস্থিত। সারাটা পার্ক উঁচু দেওয়াল দিয়ে ঘেরা। পার্ক থেকে বেড়ুবার পথ পাঁচটি বিশাল গেট। এই পাঁচটি গেটে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং গুলি চালানো হয়। পার্ক থেকে মানুষেরা দলে দলে ছুটে বেরুতে থাকলে গুলির মুখে একটার পর একটা লাশ পড়তে থাকে। লাশের উপরে লাশ জমতে থাকে। মা বাবা ছেলে মেয়ে একের উপরে এক লাশের পাহাড় জমে। এমনটি হবে মহাত্মা গান্ধী জানতেন তাই তিনি সেখানে আসেন নাই। ১৯৭১ সালে পূর্ব বাংলাতে গনহত্যা হবে সেটা শেখ মুজিব জানতো তাই সে পাকিস্তানে পালিয়েছিল। শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়নি পাছে ভারত হেরে যায় আর মুজিবকে দেশদ্রোহী হিসাবে আবার ফাঁসীর মঞ্চে উঠানো হয়। সব দিক বেঁচে গেছিল সেদিন। জালিয়েনওয়ালা বাগে সেদিন লাশের স্তুপে নিচে মহাত্মা গান্ধির সুনাম হারিয়ে যায়নি। কারণ যাদের লাশ পড়েছে তারা নিরীহ গ্রামবাসী আর যারা লাশ ফেলেছে তারা বৃটিশরাজ। গান্ধী সম্পর্কে বেশীরভাগ বই লিখেছে বৃটিশ লেখক। কারণ গান্ধী ছিল বৃটিশের বন্ধু । পাক ভারতের স্বাধীনতার জন্য গান্ধির কোন অবদান ছিলনা। খাজনার চেয়ে বাজনা বেশী হওয়াতে বৃটিশেরা পাক ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে বৃটিশদের দালালদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে কেটে পড়ে। উপনিবেশ লাভজনক ব্যবসা ণয়। লুটপাট যা করার সব করা হয়ে গেছিল। দূর থেকেও দালাল দিয়ে সাড়া বিশ্বকে নিয়ন্ত্রন করা যায়। উপনিবেশ এভাবেই আউটসোর্সড হয়েছিল।

প্রসংগ ছিল অপরাধ দমন করার জন্য আইন, নাকি অপরাধ করানো ও অপরাধীকে রক্ষা করার জন্য আইন? সাড়া বাংলাদেশে ভুয়া মামলাতে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ জেলের ভেতরে পচছে । বাংলাদেশের সব আইন এখন অকেজো। নতুন আইন হলো – এক একটি দেশে অনেকগুলো দালাল থাকবে। দালালেরা জনসেবার নামে রাজনৈতিক দল গঠন করবে এবং জনগনের চোখে ধুলা দিবে। অনেক দালালের মধ্য থেকে একজন দালালকে দেশ শাসন করার জন্য মনোনিত করা হবে। অন্যান্য দালালেরা সবাই তাদের দালালীর সুযোগের অপেক্ষা করবে। সব চাইতে দক্ষ দালাল বা সেবক যে হবে তাকেই ক্ষমতায় রাখা হবে । বাকীরা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতায় যেতে চাইবে । ফলে শ্রেষ্ট সেবক বাকী দালালদেরকে দমন করবে। আর এই দমন করার সময় উলুখাগড়া অর্থাৎ জনগন নানাভাবে বিপদগ্রস্থ হবে। এঁকে অন্যের প্রতি দোষারোপ করবে। অপরাধীদের সমাজে প্রতিষ্টিত করা হবে এবং নিরীহ মানুষের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠবে। এটা হলো Imperialism outsourcing laws উপনিবেশ বিশ্বায়ণ আইন। জনগনের হাতে একটি পতাকা ধরিয়ে দেওয়া হবে। সেটা মাঝে মাঝে কফিনের উপরে বা মাথায় বেঁধে যাতে নাচ গান করতে পারে। জনগনের গলাতে একটি জাতীয় সংগিত বেঁধে দেওয়া হবে। যা বাজালেই সব খাড়া হয়ে যাবে।

দালাল অনেক রকমের হয় – গাড়ী বিক্রির দালাল। বাড়ি বিক্রির দালাল। দেহ বিক্রির দালাল। দেশ বিক্রির দালাল। এই দালালি চলছে চলবে। দালালী একটি চিরন্তন সত্য। দাসত্বের আধুনিক সংস্করণ হলো স্বাধীন সার্বভৌম দালালতন্ত্র যাকে একটি মনোহর পোষাক পরিধান করিয়ে রাখা হয় । পোষাকের নাম গনতন্ত্র।
সেদিন একটা ভিডিও ক্লিপিং দেখলাম একজন মহিলা বিদ্যুৎ গতিতে পুরা শহরের সবার জন্য ভোট দিলো। মাঝে মাঝে কিছু লোক আমাকে বলে – আপনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। ফেসবুকে কেনো এইসব লিখেন। আইন আসলে আমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছে সেজন্য ফেসবুকে লিখি।

ফেসবুক একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এখানে লেখা হলে সমাজের সবাই পাঠ করবে। সমাজের সবাই জানবে আপনি কে? আমি আপনার সম্পর্কে লিখছি কারণ আমার কাছে প্রমান আছে আপনি একজন চোর বা প্রতারক সেজন্য প্রমানসহ সবাইকে দেখাচ্ছি যে “দেখো সমাজে তোমরা কোন চোর, প্রতারক, ধর্ষক, দুর্নীতিবাজের সাথে বসবাস করো”। আদালতে এখন আর অপরাধীদের বিচার হয়না । আদালতে এখন নিরীহ মানুষের উপরে আরোপিত ভুয়া মামলার ভুয়া বিচারে পূর্বপরিকল্পিত শাস্তি দেওয়া হয়। সমাজের মধ্য যেমন সুন্দর সুন্দর পোষাক পড়ে ভালভাল খাবারের সামনে দাঁড়িয়ে সুসজ্জিত ড্রইয়িংরুম আছে তেমনি গার্বেজ আছে আর সেই সুন্দর সুন্দর ফটোতে সুন্দর সুন্দর খাবারের ছবি পোস্টের আগে বা পড়ে অপচয়কৃত খাবার ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে সুন্দর সুন্দর বহুতল ভবন থেকে আর নীচে সেই খাবার খাচ্ছে মানুষ আর কুকুর – সমাজের সেই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তেমন একটা আসেনা। তবে মাঝে মাঝে কোন এক দুষ্টু ছেলে তা পোস্ট করে ফ্যালে।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক এখন আমার ভারচ্যুয়াল আদালত। অভিযোগ কেন্দ্র। এখান থেকেই সবাই জানবে সবার চরিত্র। বিচারের বানী নীরবে নিভৃতে কাঁদে – আর কিভাবে কাঁদে তার ছবি আঁকার চেস্টা করছি মাত্র।

সেই ছবি আঁকা চাট্টিখানি কথা নয়। মাঝে মাঝে ছবি আঁকি কেউ বুঝেনা। আমার মাথা দিয়ে কেউ ভাবেনা আবার চোখ দিয়ে কেউ দ্যাখেনা তাই জটিল মনে হয়। কেউ বুঝেনা।




One thought on “কে আগে এসেছে – আইন না অপরাধ ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *