ব্যবহৃত ফোন কেনার কৌশল

ঢাকা: দ্রুত বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তি। বদলাচ্ছে হাতের মুঠোতে থাকা স্মার্টফোন। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে একটু হালনাগাদ তো থাকতেই হয়। বাড়ছে মানুষের চাহিদা। আগে যেখানে কথা বলাই ছিলো ফোনের প্রধান কাজ এখন সে ধারণা বদলে গেছে। সারাদিন ফোন না এলেও শেষ হয়ে যাচ্ছে অন্য কাজে ব্যবহৃত প্রিয় ফোনটির ব্যাটারি। নতুন নতুন ফোন কিনতেও দরকার অনেক টাকার। সাধ্যের সঙ্গে সাধের সমন্বয় করতে কিনে নিতে পারেন যেকোন ব্যবহৃত ফোন। কিনলেই তো শুধু হবে না, যার কাছ থেকে কিনবেন তার ফোনটার যে কোনো সমস্যা নেই তা বুঝবেন কি করে? অরিজিনাল না রেপ্লিকা, নিজের না চোরাই, সচল না অচল এই সবগুলো দ্বিধার সমাধান হতে পারে নিচের কিছু কৌশল জেনে নেয়ার মাধ্যমে।

বিক্রয় সংক্রান্ত ওয়েবসাইট
পরিচিত কারো কাছ থেকে কিনতে গেলে এই ধাপ অনুসরণের প্রয়োজন নেই। দাম যাচাইয়ের জন্য ওয়েবসাইটগুলো ভালো ভুমিকা রাখতে পারে। এখানেই ডট কম, বিক্রয় ডট কম, ওএলএক্স ডটকম সাইটগুলোতে প্রচুর বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়। দাম এবং পণ্যের গুণাবলী আগেই জেনে নিতে পারেন পণ্য সংক্রান্ত এসব ওয়েবসাইট ঘুরে এসে।

লেনদেনের জন্য নিরাপদ স্থান
ফোন সেটটি যখন কিনবেন তখন নিজের কাছাকাছি নিরাপদ স্থান পছন্দ করুন। বিক্রেতাকে নিজের পছন্দের কথা নিঃশঙ্কোচে জানান। অনুরোধ করতে পারেন তাকে আপনার পরিচিত জায়গায় আসতে অথবা দু’জনের মধ্যবর্তী কোন স্থান বেছে নিতে পারেন। নগদ লেনদেন করার ক্ষেত্রে টাকা ভালো ভাবে গুনে নিন। এসব লেনদেনে জাল টাকার মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

যাচাই করে নিন সেটটির কার্যকারিতা
সেট কিনতে গিয়েই সঙ্গে সঙ্গে ফোনটি কিনে ফেলবেন না। সময় নিন। নিজের হাতে নিয়ে পরখ করে দেখুন। টাচস্ত্রিন পরীক্ষা করুন। সাউন্ড শুনে দেখুন। সিম ব্যবহার করে কল করুন। স্পষ্টভাবে কথা শুনতে পারছেন কি না বা যা বলছেন তা অপর প্রান্তে শুনতে পাচ্ছে কি না, নিশ্চিত হোন। সেটের ব্যাক কভার খোলার অপশন থাকলে ব্যাটারি চেক করে নিন। ব্যাটারি ফুলে থাকলে সে ব্যাটারি বেশিদিন টেকে না। ফোনে দৃষ্টিকটু এমন কোন স্ক্র্যাচ আছে কি না দেখে নিন। গেইম খেলে অথবা টাইপ করে টাচ রেসপন্স চেক করুন। ভিডিও দেখার সময় সেট গরম হয় কি না লক্ষ্য করুন। চার্জার পোর্টে চার্জার লাগিয়ে চার্জ হয় কি না দেখে নিতে পারেন। সঙ্গে ল্যাপটপ থাকলে ডাটা ট্রান্সফারও করে দেখতে পারেন।

ফোন সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র
ফোনটি যে প্রথম কিনেছিলো, সে একটি ক্যাশমেমো পেয়েছিল। ক্যাশ মেমোআপনাকে সেট কতদিন ব্যবহৃত হয়েছে সে ব্যাপারেও নিশ্চয়তা দিবে। সেটের সঙ্গে এক্সেসরিজ গুলো দেখে নিন। হেডফোন যেহেতু গান শোনার একটি উপকারী মাধ্যম, হেডফোনটা সেটে লাগিয়ে দু’কানে শব্দ যায় কিনা পরীক্ষা করে নিন। সব মোবাইল ফোনের সঙ্গে একটা কার্ডবোর্ড থাকে। বিক্রেতা থেকে বাক্সটি চেয়ে নিন। পরবর্তীতে আপনি যখন সেট টি বিক্রয় করবেন, এটা আপনার সেটের ভালো দাম পেতে সাহায্য করবে। ওয়ারেন্টির সময় থাকলে ওয়ারেন্টি কার্ড চেয়ে নিতে ভুলবেন না যেন!

আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি
যদি সম্ভব হয়, মোবাইল ফোন বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি চেয়ে নিন। পাললে তার কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্সও নিয়ে নিন। এজন্য তিনি যে আপনার কাছে মোবাইল ফোনটি বিক্রি করেছেন তা লিখে তার স্বাক্ষর নিয়ে নিন। একটি সাদা কাগজে মোবাইল ফোনের নাম, দাম, সময় লিখে নিন। এই ফোন দিয়ে যদি আগে কোন অপরাধ করা হয়ে থাকে, তাহলে আইনি জটিলতা থেকে এই প্রমাণপত্রগুলো আপনার অবলম্বন হবে।

বর্তমান সময়ে ১.৫ গিগাহার্জের অক্টা কোর প্রসেসর, ৩ জিবি র‌্যাম, ৩২ জিবি বিল্ট ইন মেমোরির সঙ্গে অতিরিক্ত কার্ড স্লট, ডুয়েল সিম, ৩০০০ এম্পিয়ারের ব্যাটারি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ১৩ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরা, ৫ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরার ব্র্যান্ডের মোবাইলগুলো বেশ হালনাগাদ এবং জনপ্রিয়। কেনার আগে ডিভাইসের ফিচারগুলো দেখে, শুনে পরখ করে নিন।

৮ thoughts on “ব্যবহৃত ফোন কেনার কৌশল

Leave a Reply to Reaz Uddin Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.