ছিনতাই – বাংলাদেশে একটি প্রাত্যহিক বিনোদনের নাম

বাংলাদেশে “মানুষ হত্যা” যেমন একটি স্বাভাবিক ঘটনা বা স্বাভাবিক বিনোদন তেমনি ছিনতাই একটি প্রতিদিনের বিনোদন।

চট্রগ্রাম থেকে মোনা তার ভাইবোনের সাথে ঢাকা গিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাতে অংশ নিতে। মোনা খুব ভাল ছাত্রী। খুব ভাল পরীক্ষা দিয়েছে সে। অনেক খুশী মনে ফিরে আসছিল চট্রগ্রামে। গতকাল শুক্রবার, অক্টোবর ৩০, ২০১৫ মতিঝিলে মোহামেডান ক্লাবের সামনে প্রধান সড়ক ধরে আরামবাগ বাস স্টান্ডে আসার সময়ে চলন্ত রিকশার পেছন থেকে মোনার ব্যাগ ধরে টান দেয় ছিনতাইকারীরা। রিকশা থেকে মোনা ছিটকে পড়ে হাটুর চামড়া ছিলে যায় আর কুনুইতে ব্যাথা পায়। মোনার সাথে রিকশায় তার বড় ভাই মোহন ছিল। ছোটবোনকে সে মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার বিভিন্ন বিল্ডিং গুলো সম্পর্কে বলছিল। কোন বিল্ডিং এ কোন কোন অফিস আদালত ইত্যাদি। ছিনতাইকারীরা মটোর বাইকে ছিল। ব্যগ নিতে পারে নাই। সামনেই পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল কিন্তু পুলিশ কিছুই করেনি। কিছু দূরে পড়লেই মোনার মাথা ফেটে যেতে পারতো আইল্যান্ডে ধাক্কা খেয়ে।

মোনা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও ভর্তি হবেনা। এই দুর্ঘটনাতে মোনার মন খারাপ হয়েছে। অনেক ব্যাথা পেয়ে সে সাড়া রাত কাঁদতে কাঁদতে চট্রগ্রাম ফিরে গেছে। ঢাকা শহর মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। ঢাকা শহরের স্থানীয় বাসিন্দারা শহরের চারিধারে অপরাধীদের অবাধে অপরাধকর্ম চলতে থাকায় অস্থির হয়ে আছে কিন্তু কেউ প্রতিকারের জন্য এগিয়ে আসছেনা। ঢাকা শহরে সবাই যে অপরাধী তা নয়। সেখানে ভাল মানুষও বাস করেন। পুলিশ যদি কোন সাহায্য সহযোগিতা না করে অপরাধীদের সাথে থাকে তাহলে দেশের যেখানেই অপরাধ কর্ম সংঘটিত হচ্ছে সেখানেই স্থানীয় জনগনের উচিৎ হবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। অপরাধী কারা সেটা সবাই জানে। অপরাধীরা সংখ্যায় কতজন সেটা সবাই জানে। অপরাধীরা শক্তিশালী কারণ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়নি। অপরাধীরা জানে সবাই তাদের অন্যায় সহ্য করে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। বেশীরভাগ অপরাধীর বাবা বা দাদা অপরাধী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিল বা আছে বলেই এরা অবাধে অপরাধকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
বাইক সন্ত্রাসী


সেদিন এমন একটি ঘটনা ঘটিয়েছে এজিবি কলোনীর বাইক সন্ত্রাসীরা। এই সময়ে বাইক সন্ত্রাসীরা একটি মেয়েকে রাস্তার মধ্যখানে হত্যা করে। মেয়েটি হেটে যাচ্ছিল বাইক থেকে তার ওড়না ধরে টান দেয় এবং তাঁকে ফেলে দিয়ে বাইকে পিষ্ট করে হত্যা করা হয়। পুলিশ এবং স্থানীয় সবাই এই বাইক সন্ত্রাসীদের চিনে কিন্তু কেউ কিছু করেনি। জনগন এগিয়ে আসে এই বাইক সন্ত্রাসীদের একজনকে ধরে পুলিশে দেয় বাকীরা পালিয়ে যায়। পুলিশে কিছুই করেনি। সাড়া বাংলাদেশ এখন অপরাধীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। এই অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে এই অপরাধিদের শাস্তির জন্য সমাজে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যেহেতু পুলিশ এখন অপরাধীর ভূমিকা পালন করছে তাই জনগনকে এখন পুলিশের ভূমিকা পালন করে নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেদেরকে করতে হবে।
BIKERS

৯ thoughts on “ছিনতাই – বাংলাদেশে একটি প্রাত্যহিক বিনোদনের নাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *