চীনের গা ঘেঁষে অত্যাধুনিক হেলিপ্যাড বানালো ভারত

সময়টা কম নয়! অবশেষে দীর্ঘ ৫ দশক ধরে বন্ধ থাকার পরে ফের চালু হল ওয়ালংয়ের ‘অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড’ বা এএলজি। যার জেরে চীনের গা ঘেঁষে থাকা অরুণাচল প্রদেশের এই এএলজি বিমান বাহিনীর হাত আরও শক্ত হলো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও বিমান বাহিনীর দাবি, সামরিক কোনো কারণ নয়, প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা স্থানীয় মানুষদের সাহায্যের জন্যই ওয়ালংয়ের গুরুত্ব বেশি।

অরুণাচল প্রদেশের আনজাও জেলায় রয়েছে ওয়ালং। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত সে এলাকায় হেলিকপ্টার, হালকা বিমান ওঠানামা করত। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর মোতাবেক, একেবারে চীন সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে থাকা ওয়ালংয়ে ১৯৬২ সালে ভারতীয় বাহিনীর ‘১১ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড’ চীনের পিএলএ বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিল। ভারতীয় বাহিনীর পরাজয়ের পর থেকেই ওই ওয়ালং বন্ধ হয়ে যায়।

যদিও বিমান বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, চীন সীমান্তে নজরদারি, প্রহরা ও সেনা তথা বিমান বাহিনীর শক্তি বাড়াতে এএলজিগুলো ফের সক্রিয় করে তোলার জন্য ২০১৩ সালে কাজ শুরু করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই মতো ওয়ালংয়ের পাশাপাশি, মেচুকা, জিরো, টুটিং, আলং ও বিজয়নগরের এএলজিগুলোও সক্রিয় করে তোলা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয়।

বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত সরকার ‘বোয়িং’ সংস্থা থেকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত আক্রমণকারী হেলিকপ্টার ‘অ্যাপাচে এএইচ ৬৪-ই’ এবং সাড়ে নয় টন ওজনবাহী হেলিকপ্টার ‘সিএইচ ৪৭-এফ চিনুক’ কিনতে চলেছে। আপাতত বিমান বাহিনীর জন্য ১৫টি চিনুক ও ২২টি অ্যাপাচে কেনা হবে। পরে সেনাবাহিনীর ‘অ্যাভিয়েশন কোরের জন্যও ৩৯টি অ্যাপাচি কেনার প্রস্তাব রয়েছে। চিনুক হাতে এলে সীমান্তে সেনা, সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে যাওয়া ও সড়ক নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ভারি সামগ্রী এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুবিধা হবে। অন্যদিকে অ্যাপাচি বাহিনী সীমান্তে প্রহরা ও হানাদারিতে ভারতের ক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দিতে চলেছে। এই অবস্থায় চীন সীমান্তে এএলজির সংখ্যা যত বাড়বে ততই ভারতের সুবিধা।

ইস্টার্ন এয়ার কমান্ডের মুখপাত্র গ্রুপ ক্যাপ্টেন অমিত মহাজন জানান, চীন সীমান্তে যে কোন অভিযান শুরু করায় ‘ওয়ালং এএলজি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। পাশাপাশি দুর্গম গ্রামগুলোতে ত্রাণ বা রেশন পৌঁছে দেওয়া, পাহাড়ের ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা সেনাকর্মীদের জন্য রসদ পৌঁছে দেওয়া এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেও ওয়ালং থেকেই হেলিকপ্টার পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

৫ thoughts on “চীনের গা ঘেঁষে অত্যাধুনিক হেলিপ্যাড বানালো ভারত

Leave a Reply to Moin Ahmed Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.