গ্রেফতার এড়াতে বাড়ি ছেড়ে সস্ত্রীক আত্মগোপনে শাহাদাত

গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে গ্রেফতার এড়াতে জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী নিত্য শাহাদাত  বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করেছেন। পুলিশ তাদের বাসভবনে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে পায়নি।

শাহাদাতের গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপিকে রোববার রাতে (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কালশী থেকে  উদ্ধার করে পল্লবী থানা পুলিশ। ১১ বছর বয়সী হ্যাপি তার ওপর অমানবিক নির্যাতনের জন্য শাহাদাত ও তার স্ত্রীর কথা জানায়।

রাত সাড়ে দশটার দিকে সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হক মিরপুর মডেল থানায়  শাহাদাত ও তার স্ত্রী নিত্য শাহাদাতকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তাদের বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পুলিশের মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভুইয়া মাহবুবুর রহমান  জানান, মিরপুরের সেকশন-২ এর এইচ ব্লকের পাঁচ নম্বর রোডের ছয় নম্বর বাসার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন। তার বাসায় এখন তালা ঝুলছে। বাসায় কেউ নেই। তবে তাকে আটক করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেফতার করা হবে।

তিনি আরো বলেন,  বলেন, ‘রোববার দুপুরে শাহাদাত হোসেন নিজেই মিরপুর মডেল থানায় তার গৃহকর্মী নিখোঁজ মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর রোববার রাত সাড়ে দশটার দিকে পল্লবী এলাকা থেকে হ্যাপি নামে ১১ বছরের ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তার চিকিৎসা চলছে। চোখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কে তাকে নির্যাতন করেছে তা প্রাথমিকভাবে কেউ জানাতে পারেনি।’

এ বিষয়ে পুলিশের মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) কাইয়ুমুজ্জামান খান বলেন, মামলা হয়েছে, যতই প্রভাবশালী হোক না কেন আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। ইতিমধ্যে অভিযান চলমান আছে।

শাহাদাতকে গ্রেফতারে ইতিমধ্যে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছে পুলিশ। তিনি যেন দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে না পারেন তাই এত দ্রুত এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

শাহাদাত ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, হ্যাপির শরীরের অধিকাংশ স্থানে গুরুতর জখম ও ফুলে গেছে, দু’চোখে আঘাতের চিহ্ন ও ফোলা, দু’পায়ে জখম ও দাহ্য পদার্থ ও গরম খুনতির ছ্যাকার দাগ রয়েছে।

গৃহকর্মী হ্যাপি তার ওপর নির্যাতনের ঘটনা জানিয়ে পুলিশদের জানায়, শাহাদাত কিছুদিন আগে মোটা একটি লাঠি কিনে আনে। ওই লাঠি দিয়ে তাকে পেটানো হয়। তার গাড়িতে সবসময় একটি লাঠি থাকে, সেটি দিয়েও তাকে পেটানো হয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করতো।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে হ্যাপির শারীরিক পরীক্ষা ও চিকিৎসা চলছে।

এদিকে মামলার বাদী সাংবাদিক মোজাম্মেল হক জানান, হ্যাপির সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক না থাকলেও সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে তিনি মামলাটি করেছেন।

১৮ thoughts on “গ্রেফতার এড়াতে বাড়ি ছেড়ে সস্ত্রীক আত্মগোপনে শাহাদাত

Leave a Reply to Moin Ahmed Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.