ছবি আর ভিডিও তো আরও অনেক ছিল!

হবিগঞ্জে রাহুল নামে এক ছেলে এক ছাত্রীকে সবার সামনে মার-ধর করে আর সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুক এবং পুলিশের সাহায্যে খুব দ্রুত ধরা পড়ে যায় এই আসামী। খুবই আনন্দের কথা দেশের জনগণের এবং পুলিশের দুরদর্শীতায় আমর মত অতি সাধারণ আমজনতা মুগ্ধ।

ছেলেটা বেশি না নবম শ্রেনীর ছাত্র। দেশের মানুষের কাছে সে এখন দাগী আসামী। আর তার ঠিক ২/৩ দিন আগে শিক্ষকদের সকলের সামনে মেরেও কিছু ছেলেপেলে(ছাত্রলীগ) তারা হয়ে গেল “মিসগাইডেড বাচ্চা”।তাদেরও কিন্তু ভিডিও ছিল, ছিল অনেক ছবিও। আম জনতা কিন্তু দুই ভাগ হয়ে কেউ এদের হেদায়েতের কথা বলছেন আবার কেউ কেউ মূরগীর ছানার মত চি চি করে এদের বিচার চাইছেন। চি চি বলার কারণ তাদের বিচার চাওয়াটা পৌছায়নি ৫৭ ধারা ওয়ালাদের কান পর্যন্ত।

বাদ দিলাম এটার কথা ইহা নাহয় মিসগাইডেড ছেলে-পেলে ছিল। কিন্তু ঐ যে সেবার পহেলা বৈশাখে যা ঘটেছিল তারও তো ভিডিও ছিল, ছিল ছবিও তারাও তো কেউ দাগী আসামী হননি আর কেউ কিন্তু গ্রেফতারও হননি। হয়তো তারাও মিসগাইডেড ছিলেন। আরও হয়তো বললে বা খুঁজলে এমন অনেক ভিডিও আর ছবি পাওয়া যাবে কিন্তু এই ছবি বা ভিডিওর মানুষগুলোকে গ্রেফতার পাওয়া যাবে না।

থাক না এসব কথা কি বলতে আবার কি বলে বসবো দেখা যাবে সামনে এসে আবার ৫৭ ধারাওয়ালারা হাজির হবে। আসুন আমার মত আম জনতার কথা বলি। যারা সব ভুলে যায় আর নিজের খাইয়া বনের মোষ তাড়ায়। এই যেমন ধরুন বাংলাদেশী রোহিঙ্গারা যখন সমূদ্রে ভেসেছে কিংবা থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবরে স্থান পেয়েছে তখন যতটা না চিল্লাইছি তার চেয়ে বেশি এখন ইউরোপের বিরুদ্ধে চিল্লাইতেছি কারণ ওদের কিছু বলা দরকার ওরা ইহুদী কিনা ওদের হেদায়েত করতে হবে।

আমাদের ফেসবুক জুড়ে শুধু আইলানের ছবি আর শোক প্রকাশ। কেন এদেশের মানুষ কি ফেলানী হত্যার বিচার পেয়ে গেছে নাকি নবজাতককে গুলি করে মেরে ফেলার বিচার কিংবা চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের টেন্ডার নিয়ে গোলাগুলিতে যখন দুই বছরের শিশুর নিথর দেহ পড়ে ছিল তার কি বিচার হয়ে গেছে। আর বেশি বলা যাবে না ৫৭ ধারাওয়ালারা আবার কি থেকে কি দেখে বসে।

তার চেয়ে আসুন আমরা ফেসবুকে বড় বড় পোস্ট দিয়ে ইউরোপকে হেদায়েত করি কিংবা কিছু না বলে চুপচাপ নিজের কাজ করে যাই কারণ বাংলাদেশে যারা মরছে তারা তো আমার-আপনার কেউ না। যখন আমার উপর এসে পড়বে তখন নাহয় জাফর স্যারের মত একটু বৃষ্টিতে ভিজে লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলে পরের দিন বলবো আসলে এরা মিসগাইডেড ছিল কিনা।

যাই হোক গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান।
ধূমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর।
শেষ কথাটা ৫৭ ধারার বাইরে এসে বলে যাই, বাংলাদেশকে কিন্তু মা এর সাথে তুলনা করুন অতএব মা অসুস্থ থাকলে নিজে দাঁত বেড় করে হাসেন কিভাবে? ভিডিও আর ছবি যাদের আছে সবাইকেই ধরুন না দেখি দেশ মা কিভাবে অসুস্থ থাকে।

লেখক: মুনওয়ার আলম নির্ঝর
27nirjhor@gmail.com

৯ thoughts on “ছবি আর ভিডিও তো আরও অনেক ছিল!

Leave a Reply to Sahabuddin Ahmed Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.