সেন্টমার্টিন, টেকনাফে আঘাত হেনে দুর্বল কোমেন

সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে আঘাত হেনে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় কোমেন। সন্ধ্যার পর চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি।

আবহাওয়া দফতরের বিশেষ বুলেটিন নং ১৪-এ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ৭ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর অতিক্রম করতে পারে। এ সময় স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে তিন থেকে পাঁচ ফুট পানি উপকূল প্লাবিত হতে পারে। একারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এ্যালার্ট-৩ জারি করেছেন। বহিঃনোঙ্গরে অবস্থানরত জাহাজগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বিমান সরিয়ে নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কোমেন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০৫ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্ব ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছিলো।

এদিকে ঝড়ো বাতাসে উপড়ে যাওয়া গাছের চাপায় টেকনাফের সেন্টমার্টিনে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দ্বীপের অর্ধশতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল আমিন জানিয়েছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এ ঘূর্ণিঝড় আরও পূব-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে দুপুরের পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, নোয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বুধবার থেকেই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে অতি ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কক্সবাজার জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হলেও চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর এখনো চালু আছে।

ঘূর্ণিঝড় ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খোলা নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব উল আহসান বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাত থেকে চট্টগ্রাম জেলা ও আশপাশের এলাকায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। নগরীর অনেক এলাকায় সকাল বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে দুর্যোগময় পরিস্থিতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে তৃতীয় মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

জেলা ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের সম্ভাব্য যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও সিপিপির সদর দপ্তর সার্বক্ষণিক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি।

৭ thoughts on “সেন্টমার্টিন, টেকনাফে আঘাত হেনে দুর্বল কোমেন

Leave a Reply to Nur Hossain Nur Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.