ক্রশফায়ারে বাংলাদেশের প্রথম শিশু

তবে তাই হোক। নদী ভরাট করে সড়ক হোক। কৃষকেরা সব সুখিয়ে যাওয়া চিড় খাওয়া মাঠে কঙ্কাল হয়ে পড়ে থাকুক। অথবা চলে যাক শহরের কোন রেললাইনের পাশে। পলিথিনের ছাদের নীচে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখুক মাঠভরা ধান, খালভরা মাছ, গোয়ালভরা গরু আর ঘরভরা চাঁদের আলোর। মসজিদ ভেঙ্গে খেলার মাঠ হোক। প্রতিবন্ধী নারীকে গনধোলায় দিয়ে মেরে ফেলা হোক। মানুষ জবাই করে রাস্তার মোড়ে ভাগা দেওয়া হোক। শিশুদের নির্যাতন করে হত্যা করা হোক। সবাই ক্রিকেট খেলা দেখুন। ক্রিকেট খেলার পরে আসছে বিশ্বকাপ ফুটবল। তারপর আসছে সানি লিউন । তারপর সবাই ঘুমিয়ে পড়ুন।

কে যেন শুনেছি এই রকম একটি প্রতিবন্ধি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল। এখানে “টাকা” হলো একমাত্র মূল্যবান কাগজ। বাকী সব কিছুই মূল্যহীন। সবাই বিবশ। সবাই নির্বিকার। সবাই চুপচাপ। তবু কোন কিছু থেমে নেই। হজরত আজরাইল আঃ ওভারটাইম করছে বাংলাদেশে। লর্ডঃ ক্লাইভ হাসছে বিদ্রুপের হাসি । এক সম্ভবনাময় বাংলাদেশের বুকে পা রেখে দাঁড়িয়ে আছে সেই মুখোশ পরিহিত দানব। কেউ কেউ তাকে মনে করে দাতা, ত্রাণকর্তা, কেউ ভাবে মাবাপ আর কেউ ভাবে খোদা।

সবাই তাকে ভয় করে। কেউ প্রতিবাদ করেনা। সবাই দাঁড়িয়ে থাকে কড়জোরে মাথা হেট করে। দানবের খুশীতে সূর্য উঠে। দানব ক্ষুব্ধ হলে সূর্য ডুবে যায়। দানবের খামখেয়ালীতে লেখা থাকে ১৭ কোটি মানুষের জীবনমরণ। মুখোশ পরিহিত দানব ছবি আঁকে ধবংসের। হাতে হাতে উঠিয়ে দেয় হাতিয়ার। আত্মঘাতি হবার। শিখিয়ে দেয় কৌশল একে অপরকে আঘাত করার। তারপর সবাই শুরু হয়ে যায়। তাকেই আঘাত করে যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল। তাকেই মিশিয়ে দেয় মাটিতে যে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনা। বাকীরা ভীত হয়। করোজোড়ে ক্ষমা চায়। মাথা হেট করে হেটে যায়। জীবনকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দূরে বহু দূরে। বাংলাদেশ বিরান হয়। মুখোশ পরিহিত দানব হাসে তৃপ্তির হাসি। ডেকে আনে তার সৈন্যদের। শুরু করে দেয় লুটপাট।

মায়ের পেটে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকা শিশু শিউরে উঠে। বুলেট এসে বিধে তার  ছোট্ট পিঠে। স্বাগতম সুন্দর!! বুলেট বিধিয়ে বের করে আনে তাকে বরশী বিধিয়ে উঠিয়ে আনা ডিমে ভরা মাছের মতোন। শিশু ককিয়ে ওঠে। সময় হয়নি তবু দেখতে হবে কুৎসিত পৃথিবীর মুখ। মুষ্টিবদ্ধ হাতে ধরিয়ে দেওয়া হলো এক দীর্ঘ তালিকা। নির্ধারিত সময়ের আগেই অবতরণ – প্রাথমিক প্রশিক্ষণের সময়ই বুঝিয়ে দেওয়া হলো এই বুলেট এখন বের করা হলো কিন্তু ভ্রমণের যেকোন সময় যেকোন জাগায় আবার এসে বিধতে পারে। তখনই হবে ভ্রমণের পরিসমাপ্তি। ভ্রমণের মাঝে থাকবে কর্দমাক্ত পথ ঘাট, হতাশা, মিথ্যাচার, প্রতারণা, চুরি, দুর্নীতি, ভ্রষ্টাচার, ইত্যাদি। দেখা হবে জগতের বিখ্যাত হিপোক্রিটসদের সাথে। ধান্দাবাজ মিথ্যুক নর্দমার কীটেরা বিজ বিজ করবে চারিধারে সুন্দর সুন্দর পোষাকে আবৃত হয়ে। পরিশোধ করতে হবে জীবনের ঋন তারপর আবার একটি বুলেট এসে মৃত্যু ধরিয়ে দেবে হাতে।




২৭ thoughts on “ক্রশফায়ারে বাংলাদেশের প্রথম শিশু

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *