ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৮ রানের লিড নিয়েও সুবিধা করতে পারলো না বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন অতিথিদের দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো উইকেট নিতে না পারায় লিডের সুবিধা হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
বৃহস্পতিবারের খেলা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৬১ রান। স্টিয়ান ফন জিল ৩৩ ও ডিন এলগার ২৮ রানে ব্যাট করছেন। তবে এখনও ১৭ রানে পিছিয়ে রয়েছে অতিথিরা।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে ১৭৯ রান নিয়ে খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে অলআউট হওয়ার আগে ৩২৬ রান করে স্বাগতিকরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটি টাইগারদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ২০০৮ সালে এই মাঠেই করা ২৫৯ রান ছিল আগের সর্বোচ্চ।
টানা দ্বিতীয় দিনও সকাল থেকে আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে নয়টায় খেলা শুরু হয়। এদিন বড় সংগ্রহ গড়তে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের দিকে তাকিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। আত্মবিশ্বাসী সূচনা করলেও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি মুশফিক।
আগের দিন ১৩ ওভার করে উইকেট পাননি ডেল স্টেইন। তবে তৃতীয় দিনের তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানেন আইসিসি টেস্ট র্যাংঙ্কিংয়ের এই শীর্ষ বোলার। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মুশফিককে।
অতিথিদের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেন হাশিম আমলা। তাতে সিদ্ধান্ত পাল্টে মুশফিককে আউট দেন জুয়েল উইলসন।
দিনের ষষ্ঠ ওভারেই অধিনায়ককে হারানো বাংলাদেশ লিড নিতে তাকিয়ে ছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব ও তরুণ লিটন দাসের দিকে। হতাশ করেননি এই দুই জনে। ৮২ রানের জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপেক্ষে দলকে দ্বিতীয়বারের মতো লিড এনে দেওয়ার সঙ্গে অতিথিদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ায়ও সহায়তা করেন তারা।
৮১তম ওভারে দ্বিতীয় নতুন বল নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। সে সময় ৩৭ রান পেছনে ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় নতুন বলেও কোনো সমস্যা হয়নি সাকিব-লিটনের। কিন্তু চার হাঁকিয়ে অর্ধশতকে পৌঁছাতে গিয়ে আউট হন তিনি।
অফ স্পিনার সাইমন হারমারের শর্ট বলে মিডউইকেট দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলেন সাকিব। তিন বল আগে একবার শর্ট বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করেও বেঁচে যান। এবার ব্যাটের কানায় লেগে অনেক উঁচুতে উঠা বল শর্ট মিডউইকেটে তালুবন্দি করেন জেপি দুমিনি।
এসেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন মোহাম্মদ শহীদ। লিটনের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়ে দলের সংগ্রহ তিনশ’ পার করেন তিনি। ১৯ বলে ২৫ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলার পথে হারমারের এক ওভারে ১৮ রান নেন তিনি।
ভার্নন ফিল্যান্ডারের বলে উড়িয়ে মারতে স্টিয়ান ফন জিলের ক্যাচে পরিণত হয়ে বিদায় নেন শহীদ। তার বিদায়ের পর বেশি দূর এগোয়নি বাংলাদেশের স্কোর। ১৫ রানে শেষ চার উইকেট হারানোয় লিড আর বড় হয়নি স্বাগতিকদের।
শহীদের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকেননি লিটন। দারুণ সব শট খেলে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকে পৌঁছেই ফিরে যান ২০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। হারমারের বলে কুইন্টন ডি ককের ভালো একটি ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ১০২ বলে খেলা লিটনের ৫০ রানের ইনিংসটি গড়া ৭টি চারে।
শেষ দিকে বোলিংয়ে এসে পরপর দুই ওভারে তাইজুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দেন স্টেইন। ৭৮ রানে তিন উইকেট নেন এই পেসার। টেস্টে চারশ’ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছাতে আর একটি উইকেট চাই তার।
তৃতীয় দিন মধ্যাহ্ন-বিরতির সময় বৃষ্টি হলে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু হতে আধ ঘণ্টা দেরি হয়। তৃতীয় সেশনে আলোক স্বল্পতার জন্য বেলা ৪টা ২০ মিনিটে খেলা বন্ধ হয়ে যায়, পরে বৃষ্টিও নামে; এর পর আর খেলা হয়নি। এদিন ২৪.৫ ওভার খেলা হতে পারেনি, এর আগে বুধবার বৃষ্টির কারণে ২৫ ওভার খেলা কম হয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৮৩.৪ ওভারে ২৪৮ (এলগার ৪৭, ফন জিল ৩৪, দু প্লেসি ৪৮, আমলা ১৩, বাভুমা ৫৪, দুমিনি ০, ডি কক ০, ফিল্যান্ডার ২৪,হারমার ৯, স্টেইন ২, মরকেল ৩*; মুস্তাফিজ ৪/৩৭, জুবায়ের ৩/৫৩,মাহমুদউল্লাহ ১/৯, সাকিব ১/৪৫, তাইজুল ১/৫৭) ও ২১.১ ওভারে ৬১/০ (এলগার ২৮*, ফন জিল ৩৩*)
বাংলাদেশ: ১১৬.১ ওভারে ৩২৬ (তামিম ৫৭, ইমরুল ২৬, মুমিনুল ৬, মাহমুদউল্লাহ ৬৭, মুশফিকুর ২৮, সাকিব ৪৭, লিটন ৫০, শহীদ ২৫, তাইজুল ৯, মুস্তাফিজুর ৩, জুবায়ের ০*; স্টেইন ৩/৭৮, হারমার ৩/১০৫, ফিল্যান্ডার ২/৪০, এলগার ১/৬, ফন জিল ১/২৩)
Kamrul Huda Luis liked this on Facebook.
Jafar Khan liked this on Facebook.
Halim Hossain liked this on Facebook.
Surmin Begum liked this on Facebook.
K.s. Hossain Tomas liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Ishaque Meah liked this on Facebook.
Laltu Hossain liked this on Facebook.
Kawsar Ahmed liked this on Facebook.