টাইগারদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে সতর্কভাবে ব্যাট করতে থাকে বাংলাদেশের দুই বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান । সিরিজ জয়ের জন্য টাইগারদের প্রয়োজন ১৭০ রান। বৃষ্টি খাড়ায় পড়ে কার্টেল ওভারের ম্যাচে নির্ধারিত ৪০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা।

টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতেই চাপের মুখে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। মুস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৫০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে প্রোটিয়ারা।

এরপর বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন জেপি ডুমিনি ও ডেভিড মিলার। কিন্তু তাদের প্রচেষ্টাও গুঁড়িয়ে দেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাশরাফি বিন মর্তুজার ২০০তম উইকেটে নিজেদের পঞ্চম উইকেট খোয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দলীয় ৩০ ওভারের শেষ বলে বাংলাদেশ অধিনায়কের বলে মারতে গিয়ে সাব্বির রহমানের ক্যাচে পরিণত হন ডেভিড মিলার। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৪০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান সংগ্রহ করতে পারেন হাশিম আমলার বাহিনী।

বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকে চাপের মুখে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশী বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করায় নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারেনি প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা।

এর আগে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে সাকিব-মাশরাফি-মুস্তাফিজ-রুবেলেদের বোলিংয়ে চাপের মুখে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ৩৬ ওভারের প্রথম বলে সাকিবের শিকার হন ফারহান বেহারদিন। পরের ওভারের চুতর্থ বলে কেগিসো রাবাদাকে সরাসরি বোল্ড করেন মুস্তাফিজুর রহমান।

তবে ডেভিড মিলার ও জেপি ডুমিনির পঞ্চাশ রানের জুটিতে দলীয় শতক পার করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টির হানার পর খেলা শুরু হলে চাপের মধ্যে থাকা সফরকারীরা দেখে শুনে খেলতে থাকে। বাংলাদেশী বোলাররা কয়েকটি সুযোগ তৈরী করলেও উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থাকেন এ দুই ব্যাটসম্যান।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আবারো খেলা শুরু । বৃষ্টিতে ১০ ওভার কমে খেলা হয় ৪০ ওভারে।

বিকেলে বৃষ্টির হানায় বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। সিরিজের জন্য রিজার্ভ ডে না থাকায় বুধবারই (১৫ জুলাই) শেষ করতে হবে ম্যাচটি। পরে সিদ্ধান্ত হয় খেলা ১০ ওভার কর্তন করে শুরুর।

প্রায় দু’ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হওয়ার পর অবশেষে থামে। সন্ধা সাড়ে ছয়টার সময় বৃষ্টি বন্ধ হয়।CRICKET-BAN-RSA

ইনিংসের ২৩ ওভার শেষে বৃষ্টি নামে। বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে বৃষ্টি হানা দিলে ম্যাচ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন, দুই ফিল্ড আম্পায়ার মাইকেল গফ এবং শরফুদৌল্লা।
ম্যাচের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই মুস্তাফিজের অসাধারণ বোলিংয়ে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন কুইন্টন ডি কক। আউট হওয়ার আগে ওপেনার ডি ককের ব্যাট থেকে আসে ৭ রান। এরপর সাকিব আল হাসানের অসাধারণ ঘূর্ণিতে ফেরেন ফাফ ডু প্লেসিস। দলীয় অষ্টম ওভারের প্রথম বলেই সাকিবের বলে মারতে গিয়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে ধরা পড়েন প্লেসিস। সাকিবের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৯৯তম উইকেট হিসেবে আউট হওয়ার আগে প্লেসিসের ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে মাত্র ৬ রান।

এগারোতম ওভারে রুবেলের করা ‘নো-বল’ থেকে ফ্রি-হিটে ধরা পড়েন আমলা। বারোতম ওভারে সাকিবের বলে তুলে মারতে গিয়ে আবারো ধরা দেন আমলা। তবে, সাব্বিরের হাত ফসকে বল বেড়িয়ে যায়। দুইবার বেঁচে গেলেও সাকিবের বলেই অবশেষে বিদায় নেন হাশিম আমলা। এ উইকেটের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২০০তম উইকেটের মালিক হন সাকিব। আমলাকে সাজঘরে পাঠাতে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। আমলার ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান।

ইনিংসের ১৬তম ওভারে দলীয় ৫০ রানের মাথায় প্রোটিয়াদের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। মাহমুদুল্লার বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ১৭ রান করা রিলে রুশো।

সিরিজে ১-১ এ সমতা থাকায় ‘অঘোষিত ফাইনাল’ বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে শেষ ওয়ানডে ম্যাচটিকে।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিবা-রাত্রির এ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন সফরকারী অধিনায়ক হাশিম আমলা। প্রোটিয়াদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে ব্যাট হাতে নামেন হাশিম আমলা এবং কুইন্টন ডি কক। টাইগারদের হয়ে বোলিং সূচনা করেন মুস্তাফিজুর রহমান।

দ্বিতীয় ওয়ানডের স্কোয়াডটি রেখে দিয়েছে টাইগাররা। অপরদিকে প্রোটিয়াদের একাদশে একটি পরিবর্তন হয়েছে। ক্রিস মরিসের স্থলে দলে ঢুকেছেন মরনে মরকেল।

এ মাঠে সর্বশেষ ১০ ওয়ানডের আটটিতেই জিতেছে টাইগাররা। এ কারণে ‘লাকি ভেন্যু’তে টাইগাররা খেলতে নামবে ফেভারিট হয়ে। এবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ঘরের মাঠে টানা চার সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়ার হাতছানি মাশরাফি বাহিনীর সামনে।

৭ thoughts on “টাইগারদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

Leave a Reply to Md Monir Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.