এটাকে স্রেফ ষড়যন্ত্রই বলা যায়! ক্রিকেটীয় ষড়যন্ত্র! বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির সূচিতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো খেলা নেই। অথচ জিম্বাবুয়ে আগস্টে আয়োজন করতে চলেছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। স্বাগতিকদের সঙ্গে খেলবে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দল দুটি ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে ১-১৯ জুনের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে আপাত দৃষ্টিতে বাংলাদেশের সঙ্গে লড়াইয়ে ছিটকে পড়েছে। কারণ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আয়োজক ইংল্যান্ডসহ র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ সাত দলকে নিয়ে হবে ওই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।
ভারত সিরিজের আগে বাংলাদেশের সামনে সমীকরণটা এমন ছিল— ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের ছয়টি ওয়ানডের দুটি জিতলেই বাংলাদেশ খেলবে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ২-১ ব্যবধানে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করে। কারণ বাংলাদেশ এখন ৯৩ পয়েন্ট নিয়ে র্যাঙ্কিংয়ের সপ্তম স্থানে রয়েছে। টাইগারদের এই অবস্থানের কারণে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ওই আসরে খেলার লড়াই চললি। ৮৮ পয়েন্ট নিয়ে ক্যারিবীয়রা বর্তমানে অষ্টম। আর ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান নবম। পাকিস্তানের সামনে শ্রীলঙ্কা সফর থাকলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো খেলা নেই।
এজন্য বলা হচ্ছিল- বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিশ্চিত। ঠিক তখনই নতুন এই বাধা দাঁড় করানো হচ্ছে মাশরাফিদের সামনে। আর আগস্টে এই ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজনের মূল পরিকল্পনাকারী জিম্বাবুয়ে। আসলে আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল জিম্বাবুয়ের। অবশ্য ওই সিরিজের সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এখন এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যোগ হওয়ায় বিষয়টি বেশ গোলমেলেই হয়ে গেছে। এফটিপি অনুযায়ী, আগামী মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ রয়েছে পাকিস্তানের। এরপর আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কোয়ালিফাইয়ের ‘ডেডলাইন’ অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো ম্যাচ ছিল না।
এখন হিসাবটা গোলমেলে করে দিতে পারে আলোচিত এ ত্রিদেশীয় সিরিজ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির হিসাবের বাইরে থাকা জিম্বাবুয়ে এ ত্রিদেশীয় সিরিজের মূল উদ্যোক্তা। তারাই উদ্যোগী হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে। তবে এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।’ শর্তসাপেক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে রাজি হয়েছে বলেও সূত্র দাবি করেছে। কিন্তু হঠাৎ কেন এ পরিকল্পনা? বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দুটো ম্যাচ জয়ের পর। তবে কি জিম্বাবুয়েকে সামনে রেখে আড়ালে কলকাঠি নাড়ছে অন্য কেউ?