ঢাকা: ফের শুরু হলো ভারত-পাকিস্তান বাকযুদ্ধ। মায়ানমারে জঙ্গি দমনে অভিযানের পর প্রথমে পাকিস্তানকে ইঙ্গিত করে ‘ঢিল’ ছোঁড়েন ভারতীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর। তার জবাব দেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলী খান। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) আবার কথার ‘ইট’ ছোঁড়েন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পাড়িকর। এবার তার জবাবে ‘পাটকেল’ ছুঁড়লেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ।
জঙ্গি দমনে মায়ানমারে অভিযান চালানোর পর প্রয়োজনে যে কোনো স্থানে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে নয়াদিল্লি পিছপা হবে না- এ মর্মে রাজ্যবর্ধনের দেওয়া বক্তব্য সমর্থন করে বৃহস্পতিবার সকালে মনোহর পাড়িকর বলেন, ভারতের নতুন নীতিতে যারা ভীত, তারা ইতোমধ্যেই প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছে। তবে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ত্রাস দমনে আমরা সম্ভাব্য সব করতে প্রস্তুত।
পাকিস্তানকে ইঙ্গিত করে পাড়িকরের এমন হুঁশিয়ারির পর ভারতকে পাল্টা হুমকি দিয়ে পারভেজ মোশাররফ বলেন, ‘আমরা শব-ই-বরাতে ফাটানোর জন্য পরমাণু বোমা বানাইনি। এই অস্ত্র দেশের নিরাপত্তা বিধানের জন্যই বানিয়েছি’।
ভারত পরিস্থিতি উস্কে দিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পরমাণু সক্ষমতা কাজে লাগাতে চাই না। কিন্তু যদি আমাদের অস্তিত্বই হুমকিতে পড়ে যায়, তাহলে এই পরমাণু অস্ত্র দিয়ে কী করবো? এখন আমি যদি চৌধুরী সুজাতের মতো করে বলি, আমরা কি শব-ই-বরাতে ফাটানোর জন্য পরমাণু অস্ত্র বানিয়েছি?’
একাধিক হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে পারভেজ মোশাররফ গৃহবন্দি থেকে কারাভোগ করেন। এরপর অনেকদিন আড়ালে থেকেছেন তিনি। তবে, মায়ানমারের উত্তরাঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানের পর গত ক’দিন ধরে চলা বাকযুদ্ধে শামিল হয়ে দীর্ঘদিন পর বৃহস্পতিবার মিডিয়ার সামনে এলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে যুদ্ধংদেহী সাবেক সেনাপ্রধান।
স্বদেশের দুনিয়া নিউজ টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে পারভেজ মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের বিদ্ধ করো না, আমাদের অখণ্ডতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করো না, কারণ আমরা ছোট নই, আমরা প্রধানতম ও পারমাণবিক শক্তিধর। আমাদের ধাক্কাও দিয়ো না!’
ভারত পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত যে, তারা আমাদের যে সক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইছে তা সম্ভব নয়। আমরা তাদের মতো খেলতে দেবো না।’
পারভেজ মোশাররফ তার দেশের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে হুমকির সাধ্যমতো জবাব দেওয়ারও পরামর্শ দেন অনুষ্ঠানে।
১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত শাসন করা পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতা নেওয়ার পরপরই ভারত সীমান্তে কারগিল যুদ্ধ বাধিয়েছিলেন। যুদ্ধবাজ নীতির জন্য এখনও তাকে শ্রেষ্ঠ সমরবিদ বিবেচনা করে পাকিস্তানের উগ্র জাতীয়তাবাদীরা।