আমিরাতের রাস আল খাইমাহ ও আজমানে বাংলাদেশিদের জন্য ইনভেস্টার ভিসা

দীর্ঘ আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিক ভিসা বন্ধ রয়েছে। যেভাবে ভিসা খোলার দিন গুনছেন প্রবাসীরা, তেমনি দেশ থেকে আমিরাতে যেতে আগ্রহীরাও ভুগছেন হতাশায়। তবে আনন্দের খবর হচ্ছে, আমিরাত সরকার সরাসরি শ্রমিক ভিসা প্রদান প্রক্রিয়া চালু না করলেও সাম্প্রতি আমিরাতে অন্যতম বিভাগ রাস আল খাইমাহতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে পাওয়া যাচ্ছে ইনভেস্টার ভিসা। বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে একান্ত সাক্ষাতে এমন তথ্য জানালেন রাস আল খাইমাহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি পেয়ার মোহাম্মদ।

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ থেকে যারা একবার হলেও আমিরাতে এসেছেন, তারা চাইলে রাস আল খাইমাহ চেম্বার অফ কমার্সের অনুমতিক্রমে ইনভেস্টার ভিসা নিয়ে আমিরাতের আসতে পারবেন। তবে শর্ত হচ্ছে তারা প্রকৃত পক্ষে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যেই এখানে আসতে হবে। কারণ বাংলাদেশিরা যেটা পায় সেটা নিয়ে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে, যার জন্যে এদেশে ইনভেস্টার ভিসাও বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। যেমন ধরুন, একটি সেলুন দোকানে দুই-তিনটি ইনভেস্টার ভিসা, একটি গ্রোসারী দোকানে তিনজন ইনভেস্টার, এটা কি হতে পারে! এছাড়াও সম্প্রতি আমিরাতের সিআইডি রাস আল খাইমাহ থেকে ২৭ জন বাংলাদেশি ব্যালেন্স বিক্রেতাকে আটক করেছে, যাদের ভিসাও ইনভেস্টার! এদেশের সরকার তো বলবেই, এরা কেমন ইনভেস্টার! সামান্য কিছু লোকের কারণে আমরা এমন বিপদে আছি।’

পেয়ার মোহাম্মদ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ওয়াল্টন কোম্পানি তাদের পণ্য বাজারজাত করণের লক্ষ্যে রাস আল খাইমাহ চেম্বার অফ কমার্স থেকে অনুমোদন নিয়েছে। এখন আমরা চাই এদের মতো প্রকৃত পক্ষে আমিরাতে যারা ব্যবসা করতে চান, তারাই যেন চেম্বার অফ কমার্সে ভিসার জন্য আবেদন করেন। এতে অন্তত দেশের বদনাম গুছিয়ে আমাদের হারানো ইমেজ ফিরে পাবো। তাতে হয়তো শ্রমিক ভিসাও খুলে দিতে পারে আমিরাত সরকার।’

বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাতের কনসাল জেনারেল মাসুদুর রহমান জানান, ‘চেম্বার অফ কমার্স ভিসা দিতে পারে না, তবে রাস আল খাইমাহ ফ্রি-জোন থেকে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের ভিসা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা পনের-বিশ বছরের মতো এখানে রয়েছেন, চাকুরী করতে করতে আর ভাল লাগছে না বা দেশে যাচ্ছেন না তারা মূলধন খাটিয়ে এখানে ব্যবসা করতে আমিরাত সরকার এমন সুযোগ দিচ্ছে। আরএকে ফ্রি-জোনে বর্তমানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের অবস্থান পঞ্চম। তিন বছরে ৩৪টি বাংলাদেশি কোম্পানি ফ্রি-জোন থেকে অনুমোদন নিয়েছে। এর আগে গত দশ বছরে ছিল মাত্র ১২টি। এ জন্য বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রতি সেখানকার সরকারের আগ্রহ বাড়ছে। এটা আমাদের ব্যবসায়ীদের দারুণ সাফল্যও বলা যায়। এ ধরেণর প্রায় দশ হাজার বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আছেনও আমিরাতে।’

মাসুদুর রহমান আরও বলেন, ‘এমনিতে ব্যবসায়ীদের ভিসা এখন অনেকটা সহজ করে দিয়ে আমিরাত সরকার। বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের পাসপোর্টে ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোর সীল পড়েছে তারাও ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা হিসেবে আমিরাতের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারছেন। রাস আল খাইমাহ ছাড়াও আমিরাতের আজমানেও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা চাইলে ব্যবসা করার সুযোগ নিতে পারে।’

আতিক/ প্রবাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *