পরিস্থিতি খারাপ হলে শ্রমিকদের ফেরত আনা হবে : শ্রমমন্ত্রী

শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, লিবিয়ায় অবস্থা আরো খারাপ হলে দেশটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত আছে সরকার।

আজ বুধবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে রেড ক্রস, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), আন্তর্জাতিক অভিবাসনবিষয়ক সংস্থার (আইএমও) সাথে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ। মন্ত্রী লিবিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের কোনো জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছেন এবং ঘরে শুকনা খাবার মজুদ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

লিবিয়ার আল-ঘানি তেলক্ষেত্র থেকে গত শুক্রবার দুই বাংলাদেশি ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে অপহৃত হওয়া প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আইএস হয়তো বাংলাদেশিদের টার্গেট করেনি, তাঁরা এই ঘটনার শিকার। তিনি জানান, লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস অপহৃতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই বাংলাদেশি নাগরিক দ্রুত মুক্ত হবেন।

এর আগে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আভাস দিয়েছিল দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে ইউএনবি জানায়, লিবিয়ায় বর্তমানে ১০-১৫ হাজার বৈধ বাংলাদেশি রয়েছেন। তবে বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে অনেক বাংলাদেশি লিবিয়ায় এসেছেন। সব মিলিয়ে ৩০ হাজারের মতো বাংলাদেশি অবস্থান করছেন দেশটিতে।

২০১১ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরুর পর লিবিয়া থেকে প্রায় ৩৬ হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে অনেকেই দেশটিতে থেকে যান। পরে অবস্থার উন্নতি হলে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো শুরু হয়। ২০১৪ সালের ৩১ মে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে লিবিয়ার পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত কর্মী না পাঠানোসহ দেশটিতে ভ্রমণ না করতে বাংলাদেশি নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়।

দেশটির দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি সরকারের পতনের পর থেকে থেকে লিবিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। দেশটির রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সেখানে দুটি সরকার রয়েছে। দুই গ্রুপই নিজেদের দেশটির মূল ক্ষমতাসীন বলে দাবি করে আসছে এবং একে অপরকে প্রতিপক্ষ হিসেবে হামলা-পাল্টাহামলা করছে। শুধু তাই নয়, মিলিশিয়া বা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীও একে অপরের প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করছে। গত শুক্রবার লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলক্ষেত্র ঘানিতে হামলা চালায় আইএস বিদ্রোহীরা। এতে ১১ জন নিরাপত্তারক্ষী নিহত ও দুই বাংলাদেশিসহ বেশ কয়েকজন অপহৃত হয়েছেন।

৬ thoughts on “পরিস্থিতি খারাপ হলে শ্রমিকদের ফেরত আনা হবে : শ্রমমন্ত্রী

Leave a Reply to Ali Imran Shamim Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.