সুশীল সমাজ মানুষ পুড়িয়ে মারাকে বৈধতা দিচ্ছেন: জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে দোষারোপ করে আমাদের ‘সুশীল সমাজ’ মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারাকে চূড়ান্তভাবে বৈধতা দিচ্ছেন।
আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের ‘সন্ত্রাসের’ প্রতিবাদ করতে না পারলে নাগরিক সমাজকে মুখ বন্ধ রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয়।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে দোষারোপ করে আমাদের “সুশিল সমাজ” মানুষ জীবন্ত পুড়িয়ে মারাকে চূড়ান্তভাবে বৈধতা দিচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াতকর্তৃক অব্যহত জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার মাঝে সরকারের প্রতি ছাড় দাবী করা এবং সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে তারা মূলত ভাবছে ভয় দেখিয়ে কৌশলে দাবী আদায়ে বাধ্য করবে।”
অবরোধে নাশকতার মধ্যে ‘মধ্যপন্থা’ বলে কিছু নেই- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা হয় পুড়ে যাওয়া নিরীহ মানুষগুলোর পক্ষে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে দাবী করেন যে এই সন্ত্রাস বন্ধ করো নতুবা আপনি সন্ত্রাসীদের পক্ষে। এখানে মধ্যপন্থা অবলম্বনের কিছু নাই। যখন একটি শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় তখন মধ্যপন্থা বলে কিছু থাকে না।’
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারছে। এটা এমন একটি জঘন্য এবং নৃশংস কাজ যে যুদ্ধের সময়ও জেনেভা কনভেশন দ্বারা একে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে নিষিদ্ধ করা রয়েছে। আপনি এই বিষয়ে বলতে গেলে সবার আগে যারা দায়ী তাদের নাম বলতেই হবে এবং এই জঘন্য কাজ বন্ধে নিঃশর্তভাবে দাবী জানাতে হবে।’
“এখনো আমাদের তথাকথিত “সুশিল সমাজ” সেটি করেনি। তার পরিবর্তে তারা প্রথম দিন থেকে এর নাম দিয়েছে রাজনৈতিক বিরোধ এবং দায়ী করছে উভয় পক্ষকে। আবার কেউ কেউ আছেন যে বিএনপি জামায়াতের এইসব দুষ্কর্মের যৌক্তিতা ব্যাখ্যা করছেন।”
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কিছুই নাই যা মহিলা ও শিশুদের পুড়িয়া মারাকে যথার্থ বলতে পারে। এমনকি যদি বিএনপি মনে করে তাদের প্রতি জুলুম করা হয়েছে তবুও সেটা যথার্থ বলতে পারে না, কোন অযুহাতেই না। এমনকি যদি তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় এবং আর কোন উপায় নাও থাকে তবুও মানুষ পুড়িয়ে মারা যথার্থ হতে পারে না।’
বিএনপিকে সংলাপে আনতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে- উল্লেখ করে জয় বলেন, ‘আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০১৩ সালে আমরা অব্যহত চেষ্টা করেছি বিএনপিকে সংলাপে আনতে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ তাদের যেকোন মন্ত্রণালয় দিতে রাজী হয়েছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে খালেদা জিয়াকে ফোন দিয়েছিলেন। বিএনপি কি তখনও মানুষ পুড়ানো বন্ধ করেছিলো? তারা করেনি।’
“এইবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলেন যখন তার পুত্র মারা যায়, কিন্তু তাকে ঢুকতেই দেয়া হলো না। এরপরও আমাদের তাদেরকে বলতে হবে যে, “আসো আলোচনা করি”, যখন তারা মানুষ পুড়িয়েই যাচ্ছে?”
এরপরও সংলাপের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হতে পারে না- জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় বলেন, “যারা সংলাপের কথা বলে তাদের বলছি, তোমরা যদি আসলেই মানুষের কথা ভাবো তাহলে যাও হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটগুলো দেখে আসো। দেখো কীভাবে একটা ছোট শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপর প্রথমেই যারা দায়ী তাদের নাম বলো এবং নিঃশর্তভাবে দাবী জানাও ‘খালেদা জিয়া, মানুষ জীবন্ত পুড়িয়ে মারা বন্ধ করুন’, এতটুকুই। আর কিছু না।”
“যদি তোমাদের সেটা বলার সাহস না হয়, তবে তোমাদের মুখ বন্ধ রাখো। সংলাপের দাবী করে তোমরা ঐসব সন্ত্রাসীদের আশা দিচ্ছো যে তাদের অপকৌশল কাজে দিতেও পারে। উভয়পক্ষে দোষারোপ করে তোমরা মূলত তাদের দোষটিকে আড়াল করতে চাইছো।”
সংলাপ আহ্বানকারীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয় বলেন, “তাদের নাম না বলে, তাদের নিঃশর্তভাবে থামার দাবী না করে তোমরা তাদের নাশকতা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিচ্ছো। এইসব করে আমাদের তথাকথিত “সুশিল সমাজ” পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসীদের সাহায্য করছে।”

৩ thoughts on “সুশীল সমাজ মানুষ পুড়িয়ে মারাকে বৈধতা দিচ্ছেন: জয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *