ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিচ্ছিন্ন করা বিদ্যুৎ সংযোগটি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
শনিবার রাত ১০টার দিকে ডেসকোর ৫ কর্মী এসে সংযোগ পুনঃস্থাপন করেন। এরআগে শুক্রবার রাত পৌনে ৩টার দিকে এই কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর শনিবার সকালের দিকে এই কার্যালয়ের ডিশ ও ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কেও বিভ্রাট দেখা দেয়।
শনিবার বিকেলে কার্যালয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বেগম জিয়া বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনাটি নিকৃষ্ট ও নিষ্ঠুর আচরণ বলে অভিহিত করেছিলেন।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষেদের এক সমাবেশে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছিলেন, আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবরোধ ও হরতাল প্রত্যাহার না করলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলাশান কার্যালয়ের গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে।
শাজহান খানের এমন বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই বেগম জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর শনিবার বাগেরহাটে এক অনুষ্ঠানে শাজাহান খান আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার খাবারও বন্ধ করে দেয়া হবে। বিএনপি নেতাদের সরবরাহ করা খাবার শ্রমিকরাই কেড়ে নিয়ে খাবে।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়ে শনিবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ডেসকোর কাছে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। তবে প্রেসক্লাবে হকার্স লীগের এক মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার আগে অবরোধ প্রত্যাহার না হলে গুলশানের ওই বাড়ির পানি, গ্যাসসহ সব কিছুর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’
গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশানের এই কার্যালয়েই আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরমধ্যে ৫ জানুয়ারি ওই কার্যালয়ের গেটে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয় পুলিশ। অবশ্য বরাবরই তালা লাগানোর বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে তারা। ৫ জানুয়ারি তালাবদ্ধ গেটের ভেতর থেকেই অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেন বেগম জিয়া। ওইদিন থেকে শুরু হওয়া নাশকতার ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীনরা বিএনপি-জামায়াত জোটকেই দায়ী করছেন। অন্যদিকে এই জোট দায়ী করছে আওয়ামী লীগকে। এরইমধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গাড়িতে আগুন দেয়ার দুটি মামলায় বেগম জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
২০ দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রোববার থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয় এই জোট। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে হরতালের ঘোষণা আসার পর গভীর রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বেগম জিয়ার ওই কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অনেকে বিভিন্ন সময় নানা তির্যক মন্তব্য করেছেন। তবে ১৯ জানুয়ারি সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছিলেন, এটি তার অফিস। সেখানে তার কাজ আছে। কাজের জন্যই তিনি কার্যালয়ে অবস্থান করছেন।
সেই সঙ্গে তিনি এমন কথাও বলেছিলেন, যখন তিনি তার ইচ্ছে মতো চলাফেরা করতে পারবেন তখন বোঝা যাবে তিনি অবরোধমুক্ত।