ঢাকা: মমতাময়ী মা আর আদরের ছেলের দিনকাল ভালোই যাচ্ছিল। মা সারা দিনমান ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকেন, আর দিনভর কর্মব্যস্ততার ফাঁকে সংগীত চর্চা করেন ছেলে।
হঠাৎ অদৃশ্য ঝড়ের তাণ্ডব। স্মৃতিঘাতী আলঝেইমার আক্রান্ত হয়ে প্রিয় মুখগুলি-প্রিয় সময়গুলো ভুলতে থাকেন ৭০ বছর বয়সী মা জুডি। সন্তান ৩৩ বছর বয়সী জো ফ্র্যালি অনেকদিক দৌঁড়ঝাঁপ করেও মায়ের আলঝেইমার সারানোর পথ পাননি।
একসময় প্রায় সব ভুলে যান জুড়ি। তার স্মৃতির দৃশ্যপটে অস্পষ্ট হয়ে ওঠে পরম স্নেহের সন্তানের ছবিও। অন্য স্বাভাবিক আচরণ ভুলে কেবল অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করতে থাকেন জুডি, আবার নীরব থাকেন কোনো প্রশ্নেও।
মায়ের হৃদয়ের দুঃখ লাঘবের চেষ্টায় একদিন ফ্র্যালি গিটার বাজিয়ে গান গাইতে থাকেন। তখন তিনি খেয়াল করেন, মা গিটারের তালে তালে মাথা দোলাচ্ছেন এবং গান উপভোগ করছেন, চেষ্টা করছেন গাইতেও।
কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। একসময় ফ্র্যালি মা জুডির স্মৃতির পাতা থেকে মুছে যান।
সম্প্রতি জুডিকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি আলঝেইমার নিরাময়কেন্দ্রে। ফ্র্যালি প্রায়ই মার সঙ্গে দেখা করতে যান, কিন্তু জুডি তাকে চিনতে পারেন না। তবে, ফ্র্যালি গিটার নিয়ে গান গাইতে শুরু করলে সাড়া দিতে থাকেন মা। ফ্র্যালির গিটার ও গানের তালে তালে মাথা দোলান, হাত দোলান, এলোমেলো কিছু বলার চেষ্টা করেন, গাওয়ার চেষ্টা করেন গানও। আর এতেই দারুণ খুশি সন্তান।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা ফ্র্যালি জানান, তিনি কেবল মাকে আনন্দ দিতেই গান করেন না, বরং মায়ের হৃদয়ের যন্ত্রণা উপশম আর স্মৃতি ফেরানোর জন্য সুর তোলেন।
এক দশকেরও বেশি সময়ের সংগীত সাধক ফ্র্যালি মনে করেন, সংগীতের ক্ষমতা ভাষাতীত এবং রীতিমত গবেষণার বিষয়।
নিরাময়-অযোগ্য রোগের ক্ষেত্রে গান দারুণ মহৌষধ হতে পারে বলেও অভিমত মায়ের স্মৃতি ফেরানোর প্রচেষ্টারত ফ্র্যালির।
ভিডিও: