বাহরাইনে পান পেলেই ২ লাখ টাকা জরিমানা

পান বিক্রি নিষিদ্ধ পারস্য উপসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইনে। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার মুসলিম সংস্কৃতিতে এই পান ভুরিভোজের অন্যতম অনুসঙ্গ হলেও মধ্যপ্রাচ্যের বাহরাইনে এর বেচাকেনা দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ পান বিক্রি করলে তাকে ২ লক্ষাধিক টাকা (এক হাজার ডিনার) জরিমানার বিধান রয়েছে আরব লীগের এই সাংস্কৃতিক রাজধানীতে।

পানের পাশাপাশি গুলও নিষিদ্ধ সৌদি আরবের আল খলিফা পরিবার শাসিত এই দেশে।

এমন নিষেধাজ্ঞার মুখে তাই কৌশল পাল্টে পান আর গুল বিক্রি চালু রেখেছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। চোরাই পথে সৌদি আরব সীমান্ত দিয়ে এখনও ভারতের পান আসছে দেদারছে।

বিক্রেতারাও লুকিয়ে বিক্রি করছেন এই পান। এক্ষেত্রে কোথাও পানের কোনো প্রদর্শনী থাকার কথা নয়, নেইও। তবে নির্দিষ্ট দোকানে গিয়ে চাইলেই পাওয়া যাবে রসালো পান।

যদিও বাংলাদেশে যেমন রাস্তাঘাটে পানের প্রদর্শনী থাকে, তেমনটি এখানে দেখতে পারওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। বিক্রেতারা সুপারি মোড়ানো পানের সঙ্গে চুন আর জর্দাও বিক্রি করছেন। প্রতিটি খিলি তাই রূপ নিয়েছে কাগজ মোড়ানো পান প্যাকেজে।

এমন প্রতিটি পানের খিলির দাম ২০ টাকা। কোল্ড স্টোর নামী অনেক মুদি দোকানেই এখন এমন প্যাকেজ পান বিক্রি হচ্ছে। কেউ চাললেই কেবল মিলছে কাঙ্খিত পান।

পারস্য উপসাগরের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ বাহরাইনে পান অবশ্য এক সময় উন্মুক্তই ছিলো। কিন্তু পান খাওয়া মানুষগুলো পান খেয়ে রাস্তাঘাট আর দেওয়ালে পিক ফেলায় বাহরাইন সরকার ২০০৭ সালে পান ও গুল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই সময়ে নিষিদ্ধ হয় খোলা সিগারেট বিক্রিও। এখানে সিগারেট কিনতে হলে তাই প্যাকেট ধরেই কিনতে হবে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের কাছেও সিগারেট বিক্রি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সৌদি সীমান্ত পেরিয়ে চোরাই পথে আসছে রসালো পান। পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে পাঁচশ’ থেকে হাজার টাকা কেজি দরে। আর খুচরা বাজারে এসে প্রতি খিলির দাম হয়ে যায় ২০ টাকা।

সরকারের নিযুক্ত্ পরিদর্শকরা যখন এসব দোকান পরিদর্শনে আসেন তখন মান পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি পান আছে কি না তাও দেখে নেন তারা। আর এমন পরিদর্শনে ২ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়া পান রসিকের সংখ্যা নেহায়েত কম দাঁড়ায়নি।

ফেনী হোটেলের মালিক লিটন চৌধুরী জানান, নিজের চোখেই কয়েকজনকে অর্থদণ্ডের আদেশ পেতে দেখেছেন তিনি।

প্রথমে জরিমানা করে অভিযুক্তের হাতে নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়। তারপর যথাযথ স্থানে জরিমানার টাকা দিয়ে আসতে হয় অভিযুক্তকারীকেই।

কিন্তু শখের তোলা ৮০ টাকা বলে কথা। বাহরাইনের পান রসিকরা তাই বন্ধ করেননি পান্ খাওয়া। বন্ধ হয়নি চোরাই পথে আসাও। একইভাবে গুল আসাও বন্ধ হয়নি বাহরাইনে। এখানে বিশেষ করে পাকিস্তান আর ভারতের মানুষই গুল মাখছেন বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *