অচলাবস্থা কীভাবে নিরসন হয় সেদিকেই দৃষ্টি বিদেশিদের

প্রবীণ কূটনীতিক ফারুক চৌধুরীর মতে, সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হওয়ায় কূটনৈতিক সম্পর্কে বিরূপ প্রভাবের ভীতি দূর হয়েছে। দেশের একটি ভালো ভাবমূর্তিও তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভাবমূর্তি ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ। এখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অচলাবস্থা আগামী বছরে কোন প্রক্রিয়ায় নিরসন হয় সেদিকেই বিদেশিদের দৃষ্টি নিবদ্ধ। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ মন্তব্য করেন। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক চৌধুরীর মতে, বাংলাদেশের সর্বশেষ নির্বাচন যেহেতু সর্বজনগ্রাহ্য হয়নি সেহেতু অনেকের মনে ভীতি ছিল এর প্রভাব বাংলাদেশের কূটনীতিতে পড়বে। তবে এ ভীতি ইতিমধ্যে অমূলক প্রমাণিত হয়েছে। কারণ কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ছিল যথেষ্ট তৎপর। এক কথায়, বিদায়ী বছরটি কূটনৈতিক তৎপরতার মাপকাঠিতে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলদায়কই ছিল। তিনি বলেন, বিদায়ী বছরে সমুদ্র সীমান্ত বিরোধ নিষ্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে একটি ভালো অবস্থানে রয়েছে। এ অঞ্চলের কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে যথেষ্ট আন্তরিক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। পানি-বিদ্যুতের মতো  ক্ষেত্রগুলোতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর সধ্যে সমঝোতার ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যমান সমস্যাদি সমাধানের স্পষ্ট ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে। আমার মতে, বিদায়ী বছরে বাংলাদেশ কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঙ্গনে সাফল্য লাভ করেছে। বর্ণাঢ্য কূটনৈতিক জীবনের অধিকারী ফারুক চৌধুরী বলেন, দেশে গত ১২ মাস শান্তিপূর্ণ অবস্থায় থাকার কারণে বিদেশে একটি ভালো ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। তবে সেটা ধরে রাখা যাবে কিনা তা আমি জানি না। এখন সবকিছুই নির্ভর করছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর। দেশের উত্তপ্ত রাজনীতি যদি সহিংসতায় রূপ নেয় তাহলে সেটি বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলদায়ক হবে না। অতএব আমি আশা করব, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কথাবার্তার মাধ্যমে তাদের যার যার অনড় ভাব কাটিয়ে উঠবে এবং একটি সার্বিক সমঝোতার মাধ্যমে রাজনৈতিক শান্তির দিকে ধাপে ধাপে এগোবে। তবেই তো বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। আমি বলব, এখন বাংলাদেশের ওপর বিদেশিদের দৃষ্টি নিবদ্ধ এ কারণে যে, তারা দেখতে চায় বাংলাদেশ কীভাবে বর্তমান অচলাবস্থা নিরসন করে। আগামী বছরের জন্য সেটাই হবে বাংলাদেশের বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেন ফারুক চৌধুরী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *