সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসামাজিক কার্যকলাপ

এখানে অবশ্যই ক্লিক করবেন

“অসামাজিক”  কার্যকলাপ কি কি ? বেশ্যাবৃত্তি ছাড়াও বাংলাদেশের সমাজে অন্যতম অসামাজিক ও অপরাধ কাজ হলো “প্রতারণার” মাধ্যমে জীবিকার্জন করা।  সমাজে যারা যৌতুক আদায় করে বিয়ে করতে পারেনা বা যৌতুক আদায় করার মত যোগ্যতা রাখেনা তারা ফেসবুকে একাউন্ট খুলে প্রবাসী বাংলাদেশী বয়স্কা মহিলা খুঁজে। তারপর তাদের কাছে খুলে বসে নিজেদের না পাওয়ার বেদনা আর স্বপ্নভঙ্গের দুঃখের কথা। টাকা পেলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতো, তার আইনজীবি হবার স্বপ্ন পূরণ হতো। আইনজীবি হতে পারলে যে বিয়ের বাজারে ভাল একটা পাত্র হয়ে ভাল যৌতুক নিয়ে বিয়ে করে ঘর সংসার করতে পারতো।
অসামাজিক কার্জকলাপ ফিল্টারঃ

১ – স্বপ্ন ভঙ্গের মিথ্যা গল্প বলে টাকা আদায়
২ – সেই টাকা দিয়া ভুয়া সার্টিফিকেট কিনে নিজেকে আইনজীবি বলে দাবী করা (যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ডিগ্রী সার্টিফিকেট বিক্রি করছে তারাও প্রতারক যারা কিনছে তারাও প্রতারক)
৩- সেই ভুয়া ডিগ্রী দেখিয়ে নিজেকে শিক্ষিত বলে সমাজের অন্য একটি পরিবারের কাছ থেকে যৌতুক নিয়ে বিয়ে করছে ( যারা যৌতুক দিচ্ছে তারাও অপরাধি যে যৌতুক নিচ্ছে সেও অপরাধী)
৪ – উপরোক্ত সবাই ফেসবুকে একাউন্ট করে বসে আছে। 

এই ধরণের প্রতারকেরা সবাই অশিক্ষিত। এরা সবাই নিজেদের শিক্ষিত বলে দাবী করে। এরা স্কুলের চৌকাঠে পা রাখেনি, রাখার দরকার হয়নি। বাংলাদেশে ডিগ্রী সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায়। সার্টিফিকেট কেনার টাকাও ফেসবুকের বন্ধুদের সাথে প্রতারণা করেই সংগ্রহ করা যায়।

অন্য একজন প্রতারকের গল্প হলো তার আর্মী অফিসার বাবার ক্যানসার ছিল। ২০ বছর ক্যান্সারে ভুগেছে । চিকিৎসার জন্য সব বাড়িঘর বিষয় সম্পদ বিক্রি হয়ে গেছে। রানা প্লাজাতে দোকান ছিল। প্লাজা ধবসে গেছে । ব্যবসাও ধবংস হয়ে গেছে। অনেক পাওনাদার চারিদিকে । সবাই টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছে। বাড়িওয়ালা বাড়ী ভাড়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছে। মুদি দোকানী বকেয়া টাকা না পেলে আর চাল ডাল দিচ্ছে না । মায়ের অসুখ, বোনের বিয়ে দিতে হবে ,ভাইয়ের পেটে স্টো্‌ন, সবাই না খেয়ে আছে । যেকোন সময় মারা যাবে। হাতে কিছু  টাকা পেলে  বা কিছু পূঁজি হাতে এলে তার ভেঙ্গে যাওয়া ব্যবসাটি পুনঃরায় দাঁড় করাতে পারতো, ব্যবসায়ী হবার স্বপ্ন পূরণ হতো। টাকা পেলে সে অনেক কিছু করতে পারতো।  

এইসব প্রতারকেরা তাদের পরিবার সম্পর্কে খুব সুন্দর সুন্দর গল্প বানায়। যেমন তাদের বাবা একজন সৎ ইউনিয়ন কাউন্সিলের মেম্বার অথবা আর্মী অফিসার। ইউনিয়ন কাউন্সিলের মেম্বার তার সততাঁর জন্য কাজ হারিয়েছে । সমাজে সৎ মানুষের ভাত নাই। আর্মী অফিসার দীর্ঘ বিশ বছর ক্যান্সারে ভুগেছে তারপর তার বিশাল সম্পত্তি সব বিক্রি করে দিয়েছে ক্যান্সারের চিকিৎসা করার জন্য , তবু সে বাঁচতে পারেনি। সে মরেছে আর তার পরিবার পথে বসেছে।

এখন ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রবাসী মহিলাদের এইসব বলে তাদেরকে মা খালা ডেকে আবেগে আপ্লুত করে যদি কিছু টাকা ধার হিসাবে পাওয়া যায়।

এছাড়াও। প্রতারণার আরো অনেক বুদ্ধি আছে। যেমন প্রেমের অভিনয় করা । বিয়ে করা। বিয়ের পরে টাকা চাওয়া। টাকা পাওয়া হয়ে গেলে তালাক দেওয়া। এবং ফেসবুক একাউন্ট ব্লক, রিপোর্ট করা এবং বদনাম করা।

ফেসবুকের মাধ্যমে যারা প্রতারিত হয় তারা সবাই চুপচাপ থাকে। কেউ কোন সাড়া শব্দ করেনা কারণ প্রতারিত হওয়া একটা লজ্বার ব্যাপার। প্রতারণা করা লজ্বার ব্যাপার না। প্রতারকেরা ফেসুবক লাইভে লম্বা লম্বা কথা বলে । সমাজ সুধারক হিসাবে অন্যের টাকা মেরে খাওয়া বিশাল দেহ দেখিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে নানা রকমের হাসিকান্না করে আরো অনেক দর্শক শ্রোতা জড়ো করে যাতে তাদের মধ্য থেকে যারা সহজ সরল বোকা তাদেরকে অন্য আর একখানা গল্প বলে টাকা আদায় করে প্রতারণা করা যায় ।

আর এক ধরণের প্রতারক আছে যারা ভাগ্নীর বা ভাইজির ক্যানসার দেখিয়ে সবার থেকে টাকা আদায় করে। এরা সবাই বাংলাদেশে ভাল ভাল সরকারী চাকুরী করে । বিদেশে বেড়াতে যায়। ফেসবুকে রান্না খাওয়া বেড়ানোর ছবি পোষ্ট করে। বিদেশে যে টাকা দিয়া বেড়াইতে যায় সেই টাকা ভাইজির ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যয় করলে আর ফেসবুকের বন্ধুদের থেকে টাকা ভিক্ষা করা লাগতোনা।

এরা সবাই দেশের বড় বড় সেলিব্রিটির সাথে দাঁড়িয়ে ছবি পোষ্ট করে। অথবা সেলিব্রিটির সাথে ছবি ফটোসপের মাধ্যমে কম্পোজ করে পোস্ট করে । এই সেলিব্রিটিরাও জানে যে তারা কেন এইসব প্রতারকদের সাথে দাঁড়িয়ে ছবি পোষ্ট করছে। এইসব সেলিব্রিটিরাও প্রতারক। এরা প্রতারক বলেই জেনেসুনে প্রতারকদের সাথে ছবি উঠিয়ে ফেসবুকে সেইসব ছবি পোষ্ট করে ফেসবুকের অন্য সব বন্ধুদের বিশ্বাস অর্জন করতে সাহায্য করছে।

কেউ রুনা লায়লার সাথে ছবি উঠায় কেউবা মেহরিন মাহমু্দের সাথে ছবি উঠায় আবার কেউ সার্টিফিকেট নিচ্ছে ঢাকার মেয়রের কাছ থেকে এমন একটা ভাব ধরা ছবি ফটোসপের মাধ্যমে এডিট করে বানিয়ে ফেসবুকের টাইম লাইনে কভার ফটো হিসাবে লাগিয়ে রাখে। প্রতারণা করার অনেক বুদ্ধি আছে কিন্তু প্রতারকদের সাইজ করার কোন বুদ্ধি নাই। প্রতারকদের সবাই সহায়তা করে । তাদের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের অপরাধ জেনেও চুপচাপ থেকে।

অনেকেই তাদের অসুস্থ মেয়ে বা ছেলের ছবি পোষ্ট করে ফেসবুক বন্ধুদের থেকে টাকা নেয়। তারপর সেই টাকা দিয়ে গরু কেনে । গরুর দাম যখন কম থাকে তখন গরু কেনে আর গরুর দাম যখন বৃদ্ধি পায় তখন বিক্রি করে দেয়। এইভাবে মুনাফা বৃদ্ধি করে। মেয়ে যাচ্ছে ভারতে চিকিৎসার জন্য। টাকা আসছে ফেসবুকের দরদী বন্ধুদের কাছ থেকে। মুনাফা হচ্ছে। স্বামী গরুর ব্যবসা দেখছে। স্ত্রী ফেসবুকের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের ব্যবসাটা দেখছে। মেয়ের চিকিৎসা হচ্ছে। সব চলছে। ব্যবসা , বেড়ানো, চিকিৎসা। এইভাবেই প্রতারিতের কষ্টার্জিত রক্তঘাম এক করা টাকা অপরাধীদের জীবনে আরাম আয়সে কাজে লাগছে।

প্রতারকেরা একে অন্যকে সহায়তা করে।
অন্যদিকে প্রতারিতেরা চুপ থাকে।  প্রতারিতদের নীরবতা প্রতারকদের অনুপ্রেরণা যোগায়। সবদিক থেকেই বাংলাদেশের সমাজে প্রতারকেরাই লাভবান। প্রতারকেরা লাইভ কবিতার আড্ডা করে। তাদের আড্ডাতে অনেক ভীর – ভীরের ভেতর অনেকেই জানে স্টেজে প্রতারক বসে আছে। সমস্যা নেই। কে কার ক্ষতি করেছে বা করছে সেটা দেখে কি হবে? নিজের ক্ষতি যতক্ষণ না হবে ততক্ষণ উপভোগ করতে দোষ কি!

এইভাবেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে সমাজে অসামাজিক প্রতারণা, চুরি, মিথ্যাচার, অন্যদের আর্থিক ক্ষতি করে প্রতারকের জীবনে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। প্রতারকদের  প্রতারণা খরচা তেমন কিছু না ।  ইন্টারনেট সংযোগের জন্য যা কিছু খরচা । ব্যাস।  অনেকে আবার ইন্টারনেট সংযোগও চুরি করে। ইন্টারনেটও ফ্রি।

ফ্রি ইন্টারনেট । ফ্রি ফেসবুক একাউন্ট। শুধু কিছুক্ষণ সময় ইনবক্সে দুঃখের আলাপ ব্যাস।

তারপরই প্রতারিতের রক্তঘাম ঝরা উপার্জন এসে উপচে পড়ছে প্রতারকের কোলে একেবারে ফ্রি ফ্রি।

৩ thoughts on “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসামাজিক কার্যকলাপ

  1. An impressive share, I just given this onto a colleague who was doing somewhat evaluation on this. And he actually bought me breakfast because I found it for him.. smile. So let me reword that: Thnx for the deal with! However yeah Thnkx for spending the time to discuss this, I feel strongly about it and love reading more on this topic. If possible, as you grow to be expertise, would you thoughts updating your weblog with extra details? It is extremely useful for me. Huge thumb up for this weblog post!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.