অনেকদিন হলো গল্প লিখিনি। ব্যস্ততার জন্য নয়। ইচ্ছা হয়নি সেজন্য। আমার গল্প হয়না সত্য হয়ে যায় । আসলে সব গল্পই কোথাও না কোথাও সত্যি হয়ে থাকে। সত্য হয়েছে বলেই গল্প হয়েছে। অথবা গল্প হয়েছে বলেই সত্য হয়েছে। আমরা যা ভাবি তা অনেকসময় করতে পারিনা। তবে অন্য কেউ হয়তো সেটা করতে পারে।
ভাবনাগুলো অনেকসময় কমন হয়ে যায় যদিও সব মানুষই স্বতন্ত্র। ভুল নিয়ে গল্প লিখবো । ভুল কখন ভুল হয়? যখন আমরা প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে ব্যর্থ হই। আমি কি ভুল করেছি! বলে কান্নাকাটি করার কোন অর্থ হয়না। কারণ সব কাজেরই যে প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া যাবে সেটা ভেবে নেওয়া অবাস্তব। বাস্তবতা হলো এই যে প্রতিটি মানুষ তার অস্তিত্বরক্ষার জন্য লড়াই করছে। সবার লড়াইয়ের ধরণ আলাদা হলেও লড়াইয়ের ময়দান এক। লড়াইয়ের ময়দান হলো এই পৃথিবী। আকাশ একটাই। এক আকাশের নীচে অসংখ্য মানুষ যার যার মাথার উপর আর একটি নিজস্ব আকাশ তৈরি করতে চাইছে। সে আকাশের নাম ছাদ। সেই ছাদের চারিপাশে আছে দেওয়াল।আর এই দেওয়ালের আশে পাশে আরো অসংখ্য দেওয়াল। দেওয়ালের মধ্য প্রতিটি মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার কৌশল ভিন্ন।
কারুকে কথা দিয়ে কথা না রাখা কি ভুল? যে কথা দিয়েছে সে তার কোন স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তাৎক্ষনিকভাবে “কথা দিয়েছে” এবং যে কথা দিয়েছে সে কথা দেবার সময়ই জানে সে “কথা রাখবেনা”। তবে “কথা দিয়েছে” সে সেই স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যাকে “কথা দিয়েছে” তার ভেতর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। “প্রতিজ্ঞা বিশ্বাস করানোর” কৌশলের উপরে প্রতিজ্ঞা “বিশ্বাস করা” নির্ভর করে।
পূর্ণিমা সেদিন মন খারাপ করে বসেছিল। পূর্নিমার ব্যক্তিগত গাড়ী আছে। ড্রাইভার আছে। পূর্ণিমার স্বামী সামন্ত একজন ব্যবসায়ী। তবে পূর্নিমার সাথে থাকেনা। ওরা পৃথক থাকে। পৃথক থাকলেও পূর্নিমার স্বামী পূর্নিমাকে বাড়ি, গাড়ি, ড্রাইভার, এবং ভরণপোষন প্রদান করে। মন খারাপ হবার কারণ হলো আবহাওয়া। সকাল থেকেই প্রচন্ড গরম । গাড়িতে এসি আছে । কিন্তু তবু কেমন যেন অস্থির লাগে। দম বন্ধ হয়ে আসে। আসলে চারিপাশে এতকিছু থাকার পরে কি যেন নেই। সব সময় বুকের ভেতর হাহাকার করে পূর্নিমার। জীমে এসেছিল । সেখানেও ভাল লাগেনা। কিছুদিন সে নামায পড়া শুরু করেছিলো তবুও মন বসেনি। নামায পড়তে বসলেই সে আল্লাহ্কে কষাঘাত করে দোয়দরুদের সুরে। মনে মনে ভাবে তার জীবন এত শূণ্য হবার জন্য আল্লাহই দায়ী । পূর্নিমার স্বামী সামন্তের বেশ কয়েকটা গার্মেন্টস আছে। সপিং মলের শেয়ার আছে। জাহাজ ভাঙ্গার ব্যবসা আছে। পূর্নিমার দুই ছেলেই বিদেশে থাকে। উচ্চশিক্ষার জন্য গেছিল আর ফিরে আসেনি। বিয়েসাদি করেনি। পূর্নিমা আর সামন্তের সাথে যোগাযোগ আছে। কথা হয় প্রায়ই। ছেলেরা ভাল । মাবাবাকে ভালবাসে। বাইরের গুমোট আবহাওয়া ভেতরের এসি ড্রাইভারের নির্লিপ্ত মুখ দেখা যায় সামণের আয়নাতে। ড্রাইভার ছেলেটি ভাল। শান্ত। কথা শোনে। ভাল গাড়ি চালায়। ড্রাইভারের সাথে গাড়িতে পূর্নিমা নিরাপদবোধ করে।
একটা সময় ছিল যখন পূর্ণিমা সামন্তের সাথে প্রেম করতো তখন সামন্তের তেমন কিছু ছিলনা। সামন্ত তেমন পড়ালেখা জানেনা তবে খুব চতুর। মফস্মল থেকে ঢাকাতে আসে, তারপর এক আত্মিয়ের বাসাতে সেই আত্মিয়ের গারমেন্টস সে চাকুরী করা শুরু করে। সামন্ত খুব বিস্বস্থ কর্মচারী ছিল। সড়ক দুর্ঘটনাতে আত্মিয়ের মৃত্যু হলে সামন্ত সেই আত্মিয়ের স্ত্রীর সাথে সহবাস শুরু করে এবং তাঁর সব গার্মেন্টসের মালিক হয়ে যায়। সেই আত্মীয়ের বউয়ের নাম তমে। তমের সাথে সামন্তের সম্পর্ক বৈষয়িক। প্রথম প্রথম পূর্ণিমা এই সম্পর্কের কথা জানতোনা। ধীরে ধীরে জেনেছে। তমের একটা কিশোরী কন্যা আছে। কন্যাটির নাম অধরা।
প্রেমিক যখন অন্য কারু সাথে সম্পর্ক করে তখন প্রেমিকা সেটা বুঝতে পারে। বলা লাগেনা। তার প্রতিদিনের আচরণ বদলে যায়। কিছু না বল্লেও প্রেমিকের আচরণে স্পষ্ট এক অজানা অপরাধবোধ অনুভূত হয়। টাকা না সংগি – কোনটা বেছে নেবে পূর্নিমা। ভালবাসা তো ছিলনা ।বিয়ের কিছুদিন পরেই আর দুজনের মাঝে ভালবাসা ছিলনা। অথবা হয়তো আগেও ছিলনা। প্রেমের শুরুতে ভালবাসা আছে কি নেই বোঝা যায়না। হয়তো সে বুঝতে চায়নি। অভাবের সংসার থেকে এসে সবাই স্বচ্ছল হবার জন্য সারাজীবন ব্যয় করে দেয়। স্বচ্ছল হবার পরেও সে দৌড়াতে থাকে । সেটা থেমে যায় মৃত্যু এলে। টাকা বানাবার ম্যারাথন দৌড়ে সামন্ত যখন দৌড়াচ্ছে তেমন একদিনে সামন্ত আর ঘরে ফিরে এলোনা। বলে দিলো সে তমের সাথেই থাকবে। আর ফিরবেনা। বলে দিলো একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা সে দেবে ভরণপোষণের জন্য। আর বাড়ী, গাড়ি, ড্রাইভার, গৃহকর্মীরা থাকবে যেমন ছিল। পূর্নিমার টাকা, বাড়ি, গাড়ি দেখে অনেক অভাবী ছেলেই এসেছে সখ্যতা করার জন্য । ভালবাসার অভিনয় করেছে। পূর্ণিমা বলেছে – বিয়ে করতে পারে তবে বিয়ের সাথে সাথে প্রতিমাসের টাকা আসবেনা। গাড়ি থাকবেনা। চাকর রাখার ক্ষমতা থাকবেনা । এটা শুনে সব প্রেমিক পালিয়ে গেছে। টাকার বিনিময়ে সঙ্গ, দেহ ফ্রি, ভালবাসা বোনাস।
ড্রাইভার ফার্মেসীতে গেছিল ওষুধ কিনতে। ওর মেয়েটার সর্দিকাশি হয়েছে বেশ কিছুদিন । কিছুতেই সারছেনা। ওষুধ নিয়ে ফিরে আসে। গাড়ি স্টার্ট দেয়। আকাশে মেঘ করেছে। ঘন ধূষর মেঘ। যেকোন সময় বৃষ্টি নামবে ধুপধুপ করে। দূরের গার্বেজের স্তুপের মাঝে জনা পাঁচেক ছেলেমেয়ে পরম তৃপ্তিতে আহার করছে। পূর্ণিমা ভাবে সে আর সামন্ত আর তাদের দুইছেলেও এভাবেই গার্বেজ থেকে আহার করতো যদি কোন কাজ না পেতো। যদি আত্মীয়টি মরে না যেতো। অথবা সামন্ত যদি পূর্নিমাকে ছেড়ে দিতো শূণ্য হাতে। পূর্নিমা কি তাহলে গার্মেন্টসে কাজ নিতো? সামন্তের মত কোন মালিকের অধীনে। পূর্নিমা সেলাই জানেনা। তাহলে সে কি করে জীবিকা নির্বাহ করতো ? পূর্নিমা বাসন মাজতে পারে। ঘর মুছতে পারে। রান্না করতে পারে। তাহলে সে গৃহকর্মী হতো। যদি কেউ তাকে কাজ না দিতো? তাহলে সে গার্বেজ থেকে খাবার সংগ্রেহ করে খেতো । এইসব ভাবনা পূর্নিমার বুকের ভেতরের গুমোট অবস্থা বেশ হালকা করে দিলো । পূর্নিমা অনেকের চেয়েও অনেক ভাল আছে। এই বোধ তার মনে শক্তি সঞ্চার করলো। অনেকের তুলনায় পূর্ণিমা অনেক ভাল আছে। তার সংগি নেই কিন্তু খাদ্য আছে, মাথার উপর ছাদ আছে, ব্যক্তিগত গাড়ি আছে, অর্থনৈতিক নিরপত্তা আছে। সামন্ত আসলে লোক খারাপ না। চলে গেছে তাকে ছেড়ে উপায় ছিলনা তাই। সামন্ত পূর্ণিমাকে না ছেড়ে দিলে তবে অন্য কারুকে নিয়োগ দিতো ব্যবসাতে আর অন্য কারুকে মালিক বানাতো তখন সামন্ত ভাল থাকতোনা পূর্নিমাকেও ভাল রাখতে পারতোনা। খাদ্যের জন্য, ছাদের জন্য, পোষাক, নিরাপত্তার জন্য “সংগী”কে সমর্পণ করতে হয়েছে তমের কাছে।
পূর্ণিমার সংগী এখন বুকের ভেতরের সেই শূন্যতা সেই হাহাকার। প্রতিটি মানুষই একা। হাজার মানুষের ভীরে সবাই একা। তমে আর অধরার মাঝে বসবাসরত সামন্তও একা। এই অবস্থানের একটি শর্ত আছে । তা হলো ব্যবসায়ের দেখাশোনা করা অনেকটা কেয়ার টেকারের মত। দেহকে প্রশান্তি দেওয়া, ব্যবসায়ের দেখাশোনা করা আর মেয়ের বাবা হবার প্রক্সি দেওয়া। টাকা মানুষকে যেকোন অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। “ক্রয়ক্ষমতা” তমেকে শক্তি দিয়েছে। তমের “ক্রয়ক্ষমতা” অনেকগুলো মানুষকে ছাদ দিয়েছে।
সবার সংগি থাকেনা। সবার টাকা থাকেনা। সবার ক্রয়ক্ষমতা থাকেনা।
তবে সবাই দৌড়ের উপরে থাকে। এই টাকার জন্য । এই ক্রয়ক্ষমতাঁ প্রাপ্তির জন্য। জীবনের জন্য, ভালবাসার জন্য, সহজ সরল সময় কাটাবার জন্য, খুব কম প্রাপ্তিতে নিয়ে পরিতৃপ্ত হতে চায় না কেউ। কারু সময় নেই “সময়ের” সাথী হবার।
সেই মেয়েটি আজও বসে আছে পথের ধারে। প্রতিদিন জীমে আসার পথে ওকে দ্যাখে পূর্নিমা। মেয়েটি পূর্ণিমার বয়সি হবে। পথেই ঘুমায়। ওর পায়ের চামড়া শুকিয়ে গেছে। রোদে ঝলসে গেছে। ভাবলেশহীন বসে থাকে। চারিপাশি অনেক গাড়ি রিকশা বাস অনেক শব্দ ধুলো এইসবের মাঝে মেয়েটি বসে থাকে চুপচাপ উদাসীন। ওর জগতে এইসব শব্দের প্রবেশ নিষেধ। ঝমঝম করে বৃষ্টি নামে। মেয়েটি বসে থাকে। মেয়েটির দৃষ্টিসীমা পেড়িয়ে গাড়ি এসে থামে ট্রাফিকের লাল আলোতে। লাল আলোতে কেউ কেউ থামেনা। সবাই নিয়ম মানেনা। কেউ কেউ নিয়ম মানে।
certainly like your web site but you need to check the spelling on several of your posts. Many of them are rife with spelling issues and I find it very bothersome to tell the truth nevertheless I’ll certainly come back again.
ll3z68
I am really impressed along with your writing talents and also with the structure on your blog. Is this a paid theme or did you modify it your self? Anyway keep up the nice high quality writing, it is uncommon to see a nice weblog like this one nowadays..
You made some nice points there. I did a search on the subject and found most persons will agree with your blog.
Way cool, some valid points! I appreciate you making this article available, the rest of the site is also high quality. Have a fun.
I think this internet site contains some real superb info for everyone :D. “Morality, like art, means a drawing a line someplace.” by Oscar Wilde.