আমার তুমি

https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html

তুমিরা সব সময়ই তুমি থাকে। কিন্তু “আমার তুমি” থাকেনা। আমার কোনকালেই “আমার তুমি” নেই। এমন হতে পারে কেউই কারুর তুমি হয়না কখনো। সবাই মিথ্যা মিথ্যা তুমি থাকে। তাই বদলাতে থাকে মিউজিক্যাল চেয়ার যেমন বদলে যায় সুযোগ আর সময় এর মাঝামাঝি সংগীত থেমে গেলে।  তুমি একবার বলেছিলে তুমি “আমার তুমি” তারপর ৩৬৫ দিনে তুমি কতজনের তুমি হয়ে গেলে। কারণ সেই গোলচক্রে সংগিতের তালে তালে তুমি ঘুরছো ঘুরছো আর ঘুরছো। মাঝে মাঝে অসুস্থ হলে তুমি থেমে গেছো । তখন বাকী খেলোয়ারেরা যার যার কাজে অন্য কোথাও চলে গেছে। তখন বিষন্ন সন্ধ্যা নেমেছে। পৃথিবী ঘুরে গেছে সূর্য নেমে গেছে তখন তুমি অবসন্ন ঘুরে ঘুরে সংগিতের তালে তালে খেলোয়াড়দের পিছে পিছে সময় আর সুযোগের সন্ধিক্ষণে স্বার্থের দ্বন্দ্বের খেলাতে পরাজিত হয়ে অকস্মাৎ “আমার তুমি” হয়ে গেছো।

আমি এভাবে “আমার তুমি” চাইনি জানো ? আমি “আমার তুমি” চেয়েছি স্বেচ্ছায় – নিরুপায় অসুস্থ ক্ষুধার্ত সমস্যাতে জর্জরিত হয়ে নয়। সুসময়ে স্বেচ্ছায় সূর্যের সাথে চাঁদের সাথে গনগনে রোদ তাপ খরা বৃষ্টিতে আমি তোমাকে “আমার তুমি” হতে দেখতে চেয়েছি। তুমি চলে গেছো। অন্য কোথাও অন্য কোন খেলাঘরে অন্য কোন জুয়ার আসরে । তারপর আবার অসুস্থ হলে তুমি ফিরে এসেছো । তারপর আবার দুর্যোগে অভাবে শুন্যতাই তুমি খেলেছো “আমার তুমি” হবার খেলা।

ছেলেবেলার মত একবার আমি এক ঘর বেঁধেছিলাম তোমার সাথে “আমার তুমি” লুকোচুরি খেলবো বলে। সেই ঘরে তুমি সবাইকে ডেকে নিয়ে এলে যাদের পিছে ছুটে যাও  অজানা আকর্ষণে। তারপর ঘর ভর্তি চেয়ার বসিয়ে সবাই মিলে ঘুরতে থাকলে সুযোগ আর সময়ের মাঝামাঝি বিজয়ী হবে বলে । তোমার তুমি কে খুঁজে পাবে বলে । আমি একদিন সেই ঘরে এক ঝাক বোলতাকে নিয়ে এলাম তোমাদের সাথে খেলবে বলে। তারপর তোমার সাথীরা সব চলে গেলো । ওরা ঝুঁকি নিতে তৈরি নয় সেজন্য। তুমিও চলে গেলে তোমার তুমি খোঁজার রোজকার কর্মসূচীতে। ঘাসে জলে সাঁকো লতা পাতা ফুল কাক আকাশের চারিপাশে ঘুরে ঘুরে খুজলে অনাদিকাল ধরে। আবার ফিরে এলে আমার কাছে ক্লান্ত হয়ে। ক্ষুধা আর দারিদ্রে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা নিয়ে অসুস্থতায় সাড়া জীবনের না পাওয়া বেদনার গল্প বল্লে আমায়। যা পেয়েছো তার সবটাকে অবহেলা করে না পাওয়ার বেদনার গল্প দিয়ে ঢেকে দিলে সমস্ত বর্তমান।

আমি এই প্রশ্ন আর করবোনা । কেন এমন হয়? আমি এখন এই খেলা ছেড়ে চলে যাবো অনেক দূরে। দেহ রয়ে যাবে শুধু মন নিয়ে চলে যাবো অন্য এক গ্রহে যে গ্রহে কেউ কারুকে খোজেনা অমাবস্যাতে । আমি আমার দেহ রেখে যাবো মন নিয়ে চলে যাবো অন্য এক মনে যে মনে ঘর আছে কিন্তু ঘরে কোন আগল নেই আড়াল নেই খেলা নেই জয় পরাজয়ের বেদনা নেই ক্ষুধা নেই দুঃখ নেই ।  যে ঘর দাঁড়িয়ে আছে চোরাবালির উপরে। যে ঘরে দাড়ালে শুধু টেনে নেবে শুষে নেমে অথচ হারিয়ে যাবার বেদনা থাকবেনা।

আজও তুমি গেছিলে সেই চৌরাস্তার মোড়ে? সেই বন্ধ দোকানের সামনে? সেই সাঁকোর উপরে? সেই নৌকাতে ? ঘাসের উপরে শুয়ে আকাশ দেখেছিলে তুমি তোমার প্রেয়সীকে পাশে নিয়ে ? যার কথা তুমি অন্য কারুকে বলো না। যাকে তুমি অন্য কারু কথা বলোনা। সে যে গল্প জানে সে গল্প অন্য কেউ জানেনা । যাও নি? অসুস্থ সেজন্য? সে আসেনি? আসেনি ভয়ে? অসুস্থ হয়ে যাবার ভয়ে ? সবার জীবন সবার কাছে প্রিয় । সবাই যার যার জীবন বাঁচাতে কেউ কারু খবর রাখেনা সেই সব তোমার তুমিরা যারা ছিল তোমার সারাদিন রাতের সাথী তারা সবাই যার যার জীবন বাঁচাবার জন্য এখন বন্দি হয়ে আছে নিভৃতে নির্জনে।  আজ তো শুক্রবার । যাবেনা সেখানে ? সেই বন্ধ দোকানের সামনেটাতে ? প্রতি শুক্রবার যেখানে বসে তুমি তোমার প্রেয়সীর জন্য অপেক্ষা করতে।  সে তার জীবনকে তোমার চাইতে বেশী ভালবাসে বলে আসেনি আজ । সেও তোমার তুমি নয়। তোমার মতই সেও তোমার সাথে মিথ্যা বলেছিল। সেও তার না পাবার বেদনার বিশাল ইতিহাসের জানালা খুলে রেখেছিল তোমাকে দেখাতে তুমি যেমন তাকে দেখাও । না পাবার বেদনার গল্প শুনতে শুনতে রাতভোর হয়ে যায়। আজকের ঝকমকে রোদ্দুরে আজ যা কিছু পাওয়া গেছে সব ম্লান হয়ে যায় বিগত জীবনের না পাওয়ার বেদনাতে ।

আমি অসুস্থ হলে কারুকে খুঁজিনা কখনো । ৩৬৫ দিনে আমি একা । কেউ নেই চারিপাশে। সবাই যার যার প্রয়োজনে আমার কাছে আসে। কাজ ফুরিয়ে গেলে চলে যায় না পাওয়ার বেদনার গল্পের ঝাপি খুলে রেখে। আমার কাছে যে কারণে এসেছিল তা পাওয়া হয়ে গেলে ধুয়ে মুছে যায় অন্য এক গ্রহে যেয়ে পৌঁছুলে । সে গ্রহে যেয়ে আমার যা কিছু সব অন্য কারু হয়ে যায়। আকাশ আর মাটিতে আমার কোন অস্তিত্ব নেই । তুমি আছো তোমার তুমি আছে – আমি নেই। আমি ছিলাম না। আমি থাকিনা। না মনে না দেহে না ঘরে না বাইরে না স্বপ্নে না জাগরণে। সেটাই স্বাভাবিক। কারু কারু থাকা বা না থাকাতে কিছু যায় আসেনা। বার বার ফিরে এসে কাজের সময় কাজ হলেই হয়।

শুধু দরকারে কাছে আসা। দরকার ফুরিয়ে গেলে চলে যাওয়া। আমি আজও বুঝিনি কার দরকারে সেদিন সৃষ্টিকর্তা কিছু শামুক সৃষ্টি করেছিলেন। সম্যক গতিতে ওরা ধীরে ধীরে বয়ে বয়ে অবশেষে পেটে মুক্তো ভরে মুখ থুবড়ে রইলো আর ওদের বুক চিড়ে মুক্তো নিয়ে গেলো যার যার দরকারে।  কার দরকারে  নদী হলো ? সাগর  হলো ? আকাশ হলো? কার দরকারে এত ফুল এত পাখী এত জন্ম এত মৃত্যু ? কার দরকারে মাটি এতো ব্যাথা সইলো? বলো ?

আমি তো দেখি তোমার চোখে অস্থিরতা। কাকে যেন হারাবার ভয়। চলে যাবার ব্যাকুলতা। আগামীকালের অনিশ্চয়তা। সব কিছু তুমি দম্ভভরে ঢেকে রাখো মিথ্যা দিয়ে। আমার চোখ মন আর মগজ – এরা রাতদিন ষড়যন্ত্র করে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। আমি আমার তুমিকে চাই। ওরা হাসে। আমার চোখ দেখিয়ে দেয় তোমার চোখে আমার তুমি নেই। আমার মন ক্ষুব্ধ হয় আর বলে তোমার বুকের ভেতর আমার তুমি নেই। আমার মগজ বিরক্ত হয় বলে তোমার মনের ভেতর আমার তুমি নেই। নেই নেই নেই কোত্থাও নেই। আমাগীকাল থেকে আমি আমার তুমিকে খোঁজা বন্ধ করে দেবো। আজকে এই লেখা দিয়ে আমি আমার তুমি কে কবর দিয়ে দেবো। তারপর আমার মন মগজ আর চোখের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করবো।

৪ thoughts on “আমার তুমি

  1. What i don’t realize is in fact how you are not actually much more smartly-preferred than you might be right now. You’re very intelligent. You know therefore significantly in relation to this subject, produced me individually imagine it from so many varied angles. Its like men and women don’t seem to be interested until it is one thing to accomplish with Lady gaga! Your own stuffs excellent. Always handle it up!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.