খোলস

https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html

কেনো এমন হয় সে প্রশ্ন আর করবোনা। এমন হয়। এমন হতে পারে। সব সময় সবার সাথে সবখানেই এমন হতে পারে। ব্যস্ততা মানুষকে অনেককিছু থেকে দূরে রাখে। একাকীত্ব থেকে। কষ্ট থেকে। অনেক কিছু বুঝতে যাওয়া বুঝতে পারার বেদনা থেকে। আজ আমি যে গল্প লিখছি সে গল্পে কোন শুরু নেই এবং শেষ নেই। এই একই গল্প বহুদিন ধরে চলে আসছে সেজন্য আমি এই গল্প শুরু করেছি সে দাবী করতে পারিনা। আর আমি এই গল্পে উপসংহার টানতে পারবোনা । সে ক্ষমতা আমার নেই।

একজন মানুষ টিকে থাকার জন্য অনেককিছুই করে। এই টিকে থাকার প্রতিযোগীতা এত তীব্র যে তা মানুষকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় স্বাভাবিক জীবন থেকে অস্বাভাবিক জীবনে। টিকে থাকার জন্য যখন ভাত, কাপড়, বাসস্থানের উপায় খুঁজে পায় তখন লেগে যায় অন্যদেরকে দেখাতে যে সে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এখন প্রাথমিক ধাপ থেকে আরো উপরে উঠে গেছে । অনেকদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের ধাপে এসে প্রথমে সে একটি প্রদর্শনির ব্যবস্থা করবে ।

একজন অলস মানুষ যখন রুপকথার মত টিকে থাকার রসদ অদৃশ্য এক শক্তির সাহায্যে পেয়ে যায় তখন সে চিৎকার করে সারা বিশ্বকে জানাতে চায় এই প্রাপ্তি তার অর্জন তার পূর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া গুপ্তধণ। আসলকে নকল, নকলকে আসল জগাখিচুড়ী গুছিয়ে এক কাহিনী বানিয়ে ফ্যালে। স্বপ্ন পূরণের আরো অনেক অংশ বাকী। স্বপ্ন পূরণে যে অদৃশ্য হাত আছে সেই হাতকে বিলুপ্ত করে দেওয়া কোন ব্যাপারই না। সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রদর্শনীতে দেখাবে তার সকল শিল্পকর্ম । কত কত বছর ধরে কত কত রাত ধরে কত কত চাদের সামনে দাঁড়িয়ে ভাবা সব গান সে গাইবে সেই প্রদর্শনীতে । সবাইকে সে আবৃতি করে শোনাবে প্রিয় কবির কবিতার পংতি। প্রিয় মুখের সামনে আয়না রেখে গাইবে আগামীর গান। সেই আয়নাতে অকস্যাৎ দেখা গেল অগুনিত মুখ । সবগুলা চেহারা এক রকম। সবার এক রকম হাসি। সবার এক রকম চোখ। সবাই একই গল্প বলে। সবাই একই গান গায় একই সুরে। আয়নাটি কি চূর্ণ বীচূর্ণ হয়েছিল? একটি ভিজে দীর্ঘস্বাস এসে ভেংগে দিয়ে গ্যাছে কাঁচের স্বপ্ন। সেই যে বল্লাম আমি কেউ নই শুরু বা শেষ করার। সব পাখী ঘরে আসে সব নদী ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন। অন্ধকারও থাকতে পারেনা সর্বক্ষণ আলোর মতই তারও ছুটি চায় কিছুক্ষণ। সেইসব মুখ, সুখ, চাওয়া, সেইসব সময় রাতজাগা একই গল্প বারে বারে বলা এভাবেই শহরের সবাই জেনে গেল সেই গল্পটি। তার জীবনের মত স্বপ্ন আছে সকলের জীবনে। কেউ পেরেছে কেউ পারেনি সেসব স্বপ্ন পূরণ করতে আপন আপন বলয়ে কঠোর পরিশ্রমে জীবন ক্ষয় করেও সেজন্যই সেই অদৃশ্য হাত অর্থহীন। সব কিছু পাবার পরে তাকে আর প্রয়োজন নেই। সেজন্যই এই প্রদর্শনীর আয়োজণ । পূরণ করতে স্বপ্নের বাকীভাগ। কি আছে সেই বাকী অংশের প্রথম ধাপে ? দিঘীতে ছোট ছোট কেউটে সাপ থাকে। কচুরিপানার নীচে পাশে উপরে খাদ্য খোঁজে চুপচাপ থাকে সবুজের সাথে মিশে। অন্যমনস্ক কোন দেহ কেপে গেলে দংশন করে নিমেষে।

সাপেরা ভীতু থাকে। দংশন হলো সাপের প্রতিরক্ষা । সবাই পেতে চায়। কেউ কিছু হারাতে চায়না। সবাই লুকিয়ে ফেলতে চায় প্রাপ্তির পেছনের ইতিহাস। সেই ইতিহাসের মুখে কুলুপ এঁটে দেয় এক কুৎসিত কাদাকার আঠা দিয়ে যাতে কেউ ভুল করেও এই খাম না খুলতে পারে। আঠাতে লেখা থাকে অভিশাপের নাম। এই শীলালিপিতে খোদায় করা সব কথা ভুল মিথ্যা বিভ্রান্তিকর কৃত্রিম নেগেটিভ ক্লান্তিকর এই পথে শুধু অমাবষ্যা । ফিরে যাও। যে পথে আলো আশা আকাঙ্ক্ষা ।

এখানে এই আকাশে চাঁদ তারা খেলা করে অনাদীকাল ধরে। দেখো কুৎসিত পাথরকে কিভাবে ঢেকে রেখেছে ঝকমকে সূর্যের কীরন দিয়ে ডাকছে সাথীকে পাশে । সাথী হতে গেলে শর্ত থাকে । শুনতে হবে। মানতে হবে। বুঝতে হবে। নদীও বিক্ষুব্ধ হয়। ভালবাসা না পেয়ে শুখিয়ে যায়। বদলে যায়। বদলে দেয় সভ্যতা।

প্রদর্শনী চলতে থাকে শহরের নানা প্রেক্ষাগৃহে। সত্য মিথ্যা লুকোচুরি খেলে স্বপ্ন পূরণের মাঝামাঝি এসে। অদৃশ্য হাত পংগু হয়ে যায় অবহেলা অনাদরে অবমূল্যায়িত হয়ে। বহতা নদী মরে যায় ভালবাসা না পেয়ে।

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *