https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html
Paranoia is an instinct or thought process believed to be heavily influenced by anxiety or fear, often to the point of delusion and irrationality.[1] Paranoid thinking typically includes persecutory, or beliefs of conspiracy concerning a perceived threat towards oneself
াপ্যারানয়েড বা উদ্বিগ্নতা যা নাকি এক ধরনের উদ্ভট চিন্তা বা ভীতি থেকে মনের ভেতর আসে । দুঃশ্চিন্তা, ভয়, থেকে মাথার ভেতর এক ভাবনা আসে যা মনকে অস্থির করে তোলে। আর এই ভাবনা কেন আসে ? কে আমাকে মারতে আসছে? কে আমার ক্ষতি করতে আসছে? অথবা এখনই বোধহয় এমন একটা কিছু হবে যা আমার ক্ষতি করবে তাই আমি পালিয়ে যাবো এই ভয় থেকে অনেক দূরে। এমনই একটি চিন্তা মাথায় এসেছিল ক্যামব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এলানা কাটলান্ডের মাথায়। এলানার বয়স ১৯ বছর। বায়োলজীক্যাল ন্যাচারাল স্টাডিজের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্রী ছিল সে । নিজের খরচে মাদাগাস্কারের আনজাজাভীতে সে প্রকৃতির উপর রিসার্চ করতে যায় এবং সেখান থেকে লন্ডনে নিজ বাসভূমে ফেরার পথে ছোট একটি প্লেনের দরজা খুলে ১১৩০ মিটার উপর থেকে ঝাপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে। প্লেনে তার পাশে রুথ জনসন ছিলেন। তিনি এলানার পা ধরে রাখার চেস্টা করেন কিন্তু এক পর্যায়ে রুথ ক্লান্ত হয়ে যান, তার স্বাসরোধ হয়ে আসে এবং তিনি হাল ছেড়ে দিলে এলানা ইচ্ছাকৃতভাবেই ঝাপ দেয়।
মাদাগাস্কারের আনজাজাভিতে প্রকৃতির উপর রিসার্চ শেষ না করেই আলানা ফিরে আসছিল ইংল্যান্ডে। এখন দেখি মাদাগাস্কারের আনজাজাভি কেমন দেখতে ? যেখান থেকে ফেরার পথে এলানাকে ১১৩০ মিটার উচ্চতা থেকে লাফ দিয়ে মরতে হয়েছিল।
বাংলাদেশের সেই অসহায় ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর কথা মনে পড়ে গেল। পথেই ছিল তার বসবাস। ডেঙ্গু এখন হাঁসপাতাল আর ডাক্তারদের টাকা কামাই করার মৌসুম এনে দিয়েছে। তাই পথশিশুর চিকিৎসা হয়নি। এলানা স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেছে কারণ সে তার উদ্বিগ্নতাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনি। কার কোথায় কখন কিভাবে মৃত্যু হবে তা কেউ জানেনা। প্লেনের দরজা খুলে ঝাপ দেবার আগে কি ভাবছিল এলেনা? মাদাগাস্কারে নিজের খরচে গবেষনা করতে যাওয়া অনেক খরচের ব্যাপার। অর্থের অভাবে মৃত্যুবরণ করেনি এলেনা। সেদিন একটি ভিডিওতে দেখলাম রাঙ্গামাটিতে শিশুরা গার্বেজ থেকে খাবার খাচ্ছে। ইয়ামেনে সৌদী বোমা হামলাতে মরেছে লাখো মানুষ । আমরা সবাই একদিন মরে যাবো। কেউ অনাহারে কেউ পুঁজিবাদী সন্ত্রাসী বোমার আঘাতে কেউ ডেঙ্গুতে কেউ প্লেন থেকে ঝাপ দিয়ে কেউ চুপচাপ বিছানায় অথবা পথে বার্ধক্যের কারণে । বিগত চল্লিশ বছর আমি অনেক যুদ্ধ করেছি – প্রতারণার সাথে, আর্থিক অনটনের সাথে, ক্ষুধার সাথে, বৈবাহিক বিচ্ছেদের সাথে, বৈবাহিক সম্পর্কের সাথে, ভাবনার সাথে, আবেগের সাথে, অর্থনীতির সাথে, চাকুরী বাজারের সাথে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, পোষ্ট গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেশন, কম্পিউটার আর প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে চলার জন্য, নিজেকে চাকুরী বাজারে টিকিয়ে রাখার জন্য, সন্তান লালন পালন তারপর সন্তানের বড় হয়ে যাওয়া, যার যার নিজের জীবনে ব্যস্ত থাকা, মায়ের সাথে সন্তানের পরোক্ষ বিচ্ছিন্নতা, সব কিছুর সাথে যুদ্ধ করে এখনো টিকে আছি। ভোরে উঠে বাস, ট্রেনে চড়ে অফিসে যাচ্ছি, সপ্তাহে সাতদিন কাজ করছি একটানা বারো থেকে চোদ্দ ঘন্টা। বার্ধক্য আমার সাথে পেরে উঠছেনা। হতাশা, উদবিগ্নতা, ডিপ্রেশন এরা সবাই আমাকে ধরার চেষ্টা করছে কিন্তু দৌড় পাল্লাতে আমি এখনো সবার আগে আছি। সেজন্য প্লেন থেকে ঝাপ দেবার কথা বা ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা বা বাসের নীচে শুয়ে পড়ার কথা বা বিষ খেয়ে মরে যাবার কথা এখনো ভাবিনি।
মরবো ঠিকই তবে স্বেচ্ছায় নয়। I am not a coward – অবস্থার সাথে মোকাবিলা করার চেষ্টা তো করতে পারি। এই যুদ্ধ যদি না থাকতো তাহলে জীবন পানসে হয়ে যেতো। যুদ্ধ আছে, চ্যালেঞ্জ আছে সেজন্যই বেঁচে থাকার আগ্রহ আছে। ভোরে উঠে দৌড় দেবার কারণ আছে। জীবন অনেক বিশাল যা খুব কম সময়ের ভেতর আটকে থাকে।
প্রতিটি মৃত্যুর কারনের কাছে আমি যেতে চাই। বুঝতে চেষ্টা করি – কি হয়েছিল মৃত্যুর আগে। আমিও একদিন হয়তো পথেই মরে পড়ে থাকবো। একাকী। যারা আমার টাকা মেরে খেয়েছে ওরা খুশী হবে। যারা আমার টাকা মারার চেষ্টা করেছে কিন্তু আমি তাদের টাকা মারতে সহযোগীতা করতে পারিনি তারা গালি দিবে। আমার সন্তানেরা স্বস্থির নিঃশ্বাস নেবে। আমি চাই আমার মৃত্যুর পরে সবাই আনন্দিত হোক। জীবনে আনন্দের দরকার আছে। অনেকেই আনন্দ করতে জানেনা। অনেকেই ভাবে আনন্দে থাকার জন্য বুঝি মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন। আমার মৃত্যু একটি আনন্দময় অনুভূতি। সবাইকে অগ্রীম আনন্দ করার জন্য অনুরোধ রেখে গেলাম। মরার পরে তো আর বলার উপায় থাকবেনা।
এলেনার মৃত্যু আমাকে অবাক করেনি। আর্থিকভাবে স্বচ্চলতা মানসিক শান্তি আনার গ্যারান্টি দেয়না। দুইবেলা খেতে পায়না এমন অনেকেই আছে যারা স্ট্রেসের ভেতর থাকেনা। না খেয়েও হাসিখুশি থাকে। আমার বাসার সামনে এক যুবতী হিজাব পড়ে ভিক্ষা করে। ব্যাপারটা আমার কাছে খুব বিরক্তিকর লাগে। এর কারণ কানাডাতে কারুকে ভিক্ষা করা লাগেনা। কি পরিমান অলস এবং অবিবেচক হলে এই মেয়েটি ভিক্ষা করতে পারে। তার কিছুদিন পরে দেখলাম একজন ভূড়িওয়ালা যুবক ভিক্ষা করছে ঠিক একই জাগাতে দাঁড়িয়ে। সম্ভবত এই যুবতীর স্বামী। ভিক্ষাতে কোন গ্রামার নাই। তাও আবার কানাডার মত জাগাতে যেখানে সামাজিক প্রগ্রাম রয়েছে, আর্থিক অনুদান দেওয়া হয় প্রশিক্ষন দেওয়া হয় কাজ করে খাবার যোগ্যতা অর্জন করার জন্য। ওরা হয়তো অনুদান পায়, ভিক্ষাটা বোনাস। এক্সটা ক্যাশ এলে সমস্যা কি?
যারা আত্মহত্যা করে তাদের আমি ঘৃণা করিনা। আত্মহ্ত্যা করার কারণ আছে। সেই কারণ যখন একজন মানুষের উপরে ক্ষমতায়ণ করে তখন তার আর কিছু করার থাকেনা। সে সেই কারনের কাছে আত্মসমর্পন করে। একজন ভিক্ষুককে আমি ঘৃণা করি একজন প্রতারকের মতই। ভিক্ষা করা আর প্রতারণা করে কারু থেকে টাকা নেওয়া একই ব্যাপার – দুইটাই ঘৃণিত ।
এলেনা নেই। এলেনা পরাজিত । ভীতি বিজয়ী। বিষন্নতা বিজয়ী হয়েছে।
আমি একজন যুবককে জানি যে দুঃখী হবার অভিণয় করে বিভিন্ন মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দূঃখ তার পূঁজি । ব্যাপার না। সুখী মানুষেরা কিছু পাবার জন্য যখন দুঃখির অভিনয় করে, অনেক অভিযোগ করে তখন সেটা বুঝা যায়। সেটাও এক ধরনের প্রতারণা। সূখি হতে টাকা লাগেনা। নিজেকে জানা লাগে। নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে যদি নিজের ধারণা থাকে তাহলে সে জানে এই ক্ষমতা দিয়ে সে কি কি অর্জন করতে পারে। প্রতারণা , অভিনয়, মিথ্যাচার এইসব দক্ষতা কি কারুকে সুখী করে? হয়তো পারে। এই পথে যাইনি সেজন্য জানিনা। সোজা পথ দিয়া হাটি। সোজা কথা বলি। সরল চিন্তা করি। দূঃখ পেলে চিৎকার করে দুঃখের কারণ জানিয়ে দেই সবাইকে। বাকী সময় সুখেই থাকি। এই সুখের জন্য আমি যুদ্ধ করছি আজীবন। সুখ এমন এক অনুভূতি যা টাকা দিয়ে কেনা যায়না । এলেনা কিনতে পারেনি। তাই সে আত্মহত্যা করেছে। প্লেন থেকে ঝাপ দিয়ে।