https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html
সমুদ্র গুপ্তের দেহান্তরের পরে আমি লিখলাম – আজ বা কাল আমাদের সবাইকেই
মরতে হবে। জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে! মৃত্যু কোন খারাপ ঘটনা নয়। মরলে শোক
করার নিয়মটাও এক অদ্ভুত বাণিজ্য। মানুষ স্বভাবগতভাবেই বণিক। বিয়া বাণিজ্য । জন্ম
বাণিজ্য। ভালবাসা বাণিজ্য। মাতৃত্ব বাণিজ্য। পৃত্যিত্ব বাণিজ্য। এইসব বাণিজ্যের
সাথে খাদ্যে ফরমালিন লাগিয়ে মুনাফা বাণিজ্যের সাথে তেমন কোন পার্থক্য নেই।
দুঃখজনকভাবে হলেও সত্যি সব হৃদয়হীনেরাই বেশী বেশী লোকদেখানো শোক করে আর কেঁদেকেটে
ভাসিয়ে দেয়। কারণ হৃদয় নাই যা আছে সবই বাহ্যিক লোক দেখানো। আসেন কিছু গল্প শুনি।
আজ থেকে ঠিক ৪০ বছর আগে একটি শিশুর জন্ম হয়েছিল। শিশুটির বাবা শিশুটিকে ফেলে চলে
গেলে শিশুটির মা শিশুটিকে একাকি মানুষ করে বড় করে তোলে। এই শিশুর বাবা কেন
শিশুটিকে ছেড়ে চলে গেছিল ? কারণ শিশুটির নানা অর্থাত মায়ের বাবা শিশুটির বাবাকে
সম্পত্তি লিখে দেয়নি যৌতুক দেয়নি তাই যে যৌতুক দেবে তার সাথে বিয়ে করে শিশুটির
বাবা শিশুটিকে ছেড়ে চলে যায়। শিশুটির ভরণপোষন করেনা । এখানে আমরা কি দেখি ? – বাণিজ্য । এই শিশুর বাবা
অন্যত্র যেখানে বিয়ে করে সেখানে যৌতুক নিয়েই বিয়ে করে এবং সেই ঘরে যে সন্তান হয়
তাদের ভরণপোষন করে। কেন? কারণ যৌতুক পেয়েছে বলেই সেই মায়ের পেটের সন্তানেরা
ভরণপোষন পাবার যোগ্যতালাভ করেছিল।
এখন ফিরে আসি শিশুটির মা প্রসঙ্গে। শিশুটির মাকে কেউ বিয়ে করতে রাজী হয়না শিশুটি
সাথে থাকার কারণে। ঘটনা কি? এখানেও ব্যানিজ্য। অন্যের সন্তানের ভরনপোষন কেউ কেন
করবে ? একটি শিশু সবার কাছে এক বিশাল বোঝা হয়ে গেল। কোথায় গেল তথাকথিত ভালবাসা?
প্রেমিকার পেটে অন্যের সন্তান জন্ম লাভ করার ফলে প্রেমিকার প্রতি ভালবাসা উবে গেল?
আহা !! কি ভালবাসা!! তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে! অন্য এক পুরুষকে দেহ দিলে! তার
সন্তান নিলে ! সে তোমাকে প্রত্যাখান করলো। সন্তানসহ তুমি একাকী রয়ে গেলে। আহা! আমি
তোমাকে কত ভালবাসতাম যদি তুমি অন্যকে দেহ না দিতে।
তাতে কার কি এসে যায়?
শর্ত থাকলে তাকে “ভালবাসা” বলেনা।
শুধু মাত্র আমাকেই চাহিবামাত্র দেহ দিতে বাধ্য থাকিবে – সেটা ভালবাসা নয়। যেকোন এরেঞ্জ ম্যারেজেই যেকোন পুরুষই প্রত্যাশা করে একটি ভার্জিন রমনীকে সে বিয়ে করছে। যার সাথে সে ব্যতীত অন্য কেউ দেহ ভোগ করে নাই। তবে যে পুরুষটি এই আশা করে সে পুরুষটি বহুবার গঞ্জে গেছে যৌনকর্মিদের কাছ থেকে দেহ ক্রয় করতে, সে নিজে ভার্জিন নয় কিন্তু মেয়েকে ভার্জিন হতে হবে। এরেঞ্জ ম্যারেজে ভালবাসি বলা লাগেনা। বিসমিল্লা আলহামদুলিল্লাহ বলে সবার সামনে বিরিয়ানি খেয়ে আলো নিভিয়ে দিয়ে যৌনাচার করা যায়। এরেঞ্জ ম্যারেজে দেহভোগ করে বন্ধুবান্ধব পাড়া প্রতিবেশীকে সাক্ষী রেখে। সবই লোক দেখাণো। আর গঞ্জের যৌনকর্মী বেচারা একই কাজ করছে পার্থক্য শুধু সে বহু মানুষকে দেহ ভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে আর স্ত্রী শুধুমাত্র একজনকে বহুবার দেহ ভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে। গঞ্জের যৌনকর্মীর কাছে স্বামীরা যায় রাতের অন্ধকারে আর দিনের বেলা সে থাকে অস্পৃশ্য। স্ত্রী স্বগর্বে সমাজের সবার সন্মতিতে দেহভোগ করতে দেয় এবং সন্তান নেয় এবং সেই সন্তানকে কেউ জারজ বলে গালি দেয়না। বিবাহ প্রথা একটি সামাজিক এবং আইনগত বেশ্যাবৃত্তি। বিবাহের সাথে বাণিজ্য যেহেতু ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন বাবা তার মেয়েকে ভাল একজন পাত্র খুঁজে বিয়ে দেয় এই আশায় যে এই মেয়েকে ভোগ করার বিনিময়ে পাত্র দিবে মাথার উপরে ছাদ, ক্ষুধার জন্য ভাত, দেহ ঢাকার জন্য কাপড়, মোবাইল, টিভি, ক্যাবল, ইত্যাদি। গঞ্জের যৌনকর্মীও দেহ বিক্রি করে যে টাকা পায় তা দিয়ে বাড়িভাড়া দেয়, ক্ষুধা নিবারনের জন্য ভাত কিনে খায়, মোবাইল ফোণের ফ্লেক্সিলোড করে, দেহ ঢাকার জন্য কাপড় পড়ে আর রাতের অন্ধকারে সমুদ্রগুপ্তেরা যখন তার দেহভোগ করে দিনের বেলাতে সেইসব সমুদ্রগুপ্তদের সে আর সনাক্ত করার অধিকার রাখেনা। অন্যদিকে স্ত্রী বলতে পারে উনি আমার স্বামী, আমি প্রতিরাতে উনার জন্য পা উঠিয়ে দেই, বিনিময়ে উনি আমার মাথার উপরে ছাদের গ্যারান্টি দিয়েছেন, খাবার জন্য বাজার করেন, দেহ ঢাকার জন্য কাপড় কিনেন আর ফালতু কথা বলার জন্য মোবাইলের খরচা দেন আর ফালতু সময় নস্ট করার জন্য টিভি, ক্যাবল, ইন্টারনেট সবকিছুর টাকা দেন। সব খানেই ব্যানিজ্য। এমন তো হয়না – দেখিনা – স্ত্রী সঙ্গমে অক্ষম তবু স্বামী দিনরাত মুগ্ধ হয়ে তার সাথে আছে, তার জন্য পরিশ্রম করছে, তাকে ছাদ, ভাত, কাপড়, চিকিৎসা কিনে দিচ্ছে – শুধু ভালবাসে বলে ???? আমি এমন দেখিনি। আপনারা দেখেছেন? দেখে থাকলে ফেসবুকে একটি পেজ করুন সেই প্রেমিকের নাম ঠিকানা এবং ভালবাসার ভিডিও সহ। কেন করবেন না ?
মানুষ হত্যার ভিডিও করা হয়, মানুষের লাশের ভিডিও করা হয়, মানুষ পিটানের ভিডিও করা হয় – যৌন ক্ষমতাহীন মেয়ে মানুষ যার কানাডার পাসপোর্ট নাই ঋণ করে টাকা দেবার ক্ষমতা নাই নিজেরও টাকা নাই তাকে শর্তহীনভাবে ভালবাসার বিরল সৃষ্টান্ত যদি থাকে তাহলে কেন তা সাড়া বিশ্বের মানুষকে দেখানো হবেনা?
সবারই স্বপ্ন থাকে ভালবাসা পাবার। আর বাণিজ্যিক কারণে যদি কারু হৃদয় থেকে কারু জন্য ভালবাসা উবে যায় তাহলে সেটাকে ভালবাসা বলেনা। সেটাকে বাণিজ্যই বলে। সবাই কেনাবেচা করে। দেহ পচে যায়। অন্যের শিশু অগ্রহনযোগ্য হয়। বিনিময় মূল্য নেই তাই।
চলো যাই “ভালবাসার” সংজ্ঞা খুঁজতে যাই।
ভালবাসা তাকেই বলে যেখানে কোন শর্ত নাই।
ভালবাসা তো শুধু ভালবাসা
বাণিজ্যহীন ভালবাসা
আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি কিন্তু দিনরাত যখনই সুযোগ পাই নানা বয়সের মেয়েদের সাথে কথা বলি। তুমি তো দেখছোনা। এটা আমার স্বাধীনতা। প্রেম করিনা কারু সাথে । ফস্টিনস্টিও করিনা। শুধু সেলফি তুলি। কবিতা বলি, শুনি, গান শুনি, গান গায়, ফেসবুকের বুকে ভেসে বেড়ায়। শুধু কথা বলি। তাতে কি হয়েছে? তুমি তো আমার সাথেই আছো সর্বক্ষণ। চিরদিন আছো দূরে অজানার মত। কাছে আসো তবু আসোনা বহিয়া বিফল বাসনা। সুযোগ পেলেই ঘুরতে যাই। আমাকে ডাক্তার বলেছে ঘুরে বেড়াতে। দূরে কোথাও দূরে দূরে। আমার মন বেড়ায় গো ঘুরে ঘুরে। যে বাশিতে বাতাস কাঁদে সেই বাশীটির সুরে সুরে। বাংলাদেশে ঘুরতে টাকা লাগেনা। ট্রেন, বাস, রেস্টুরেন্ট, রিজোর্ট সব ফ্রি। অনেক ভালবাসি তোমাকে। নাঃ এখানেও বাণিজ্য আছে। টাকা, বিদেশের পাসপোর্ট, বাণিজ্য, শুধু বাণিজ্য – ভালবাসা ধূলো আর কাদা ।
আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা