বিবিধ

https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html

আজ অনেকদিন পর লিখছি। বহুদিন আগে একটা গান শুনেছিলাম। হিন্দি মুভির গান। বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়াবে – দুনিয়াতে মানুষের কত কত দুঃখ আর সেই তুলনায় আমার দুঃখ কত কম। দুঃখ সহ্য করার ক্ষমতা সবার এক রকম থাকেনা। অন্যের দুঃখ অনুভব করার মত ক্ষমতাও অনেকেরই থাকেনা। দখল এবং ভোগ আর তা না করতে পারলেই গাত্রদাহ তারপর অভিযোগ।

আমার খুব পরিচিত খুব কাছের একজন মানুষ আজ আমাকে বেশ কিছু কথা জানিয়েছে তার সারমর্ম হলো

সে একজন অত্যন্ত সহনশীল মানুষ কিন্তু রাগ উঠলে সে গালি দেয় । কিন্তু সবাইকে নয়। যাকে সে ভালবাসে শুধু তাকে সে গালি দেয়। দরকার হলে মারধোর করে। যে তাকে ছেড়ে চলে যায় তার কথা ভেবে নস্টালজিক হয় বা স্মৃতি রোমন্থন করে। এবং ফেসবুকের বন্ধুদের সাথে তা শেয়ার করে সমবেদনা আশা করে। পায়। এটা একটি সহনশীলতার নতুন পাণ্ডুলিপি ।

বলাই বাহুল্য আমার এই পরিচিত এবং খুব কাছের মানুষটি বাংলাদেশে বাস করে। আমার মতই সে বাংলাদেশেই জন্মগ্রহন করেছে।

বাংলাদেশ একটি প্রতারক প্রধান দেশ। বাংলাদেশের বহু মানুষই ধোঁকাবাজি করেই জীবিকানির্বাহ করে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ আর্মী, র‍্যপিড একশন ব্যাটেলিয়ন, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, বেশীরভাগ আইনজীবি, বাংলাদেশের সকল মিনিস্ট্রি, সংখ্যাগরিষ্ট আমলা, সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান, শিক্ষক, সকল হাসপাতাল, চিকিৎসক সব ধোঁকাবাজ । প্রতারক। দুর্নীতিবাজ। ক্রিমিনাল। বলা চলে বাংলাদেশ এখন অপরাধীদের হাতে জিম্মি। নিরীহ মানুষেরা জেলে পচে বা তাদের পাহাত বাঁধা লাশ পানিতে ভাসে। প্রতারণা , ধোঁকাবাজি, মিথ্যা, অপরাধ, খুন, ধর্ষ্‌ন যখন স্বাভাবিক তখন এটা ধরেই নিতে পারি যে নীতি, আদর্শ, ন্যায় ইত্যাদিরা সবাই ফেরারী।

খাদ্যের অভাবে বাবা তার মেয়েকে হত্যা করছে। ১০৪ বছরের অন্ধ বৃদ্ধাকে একজন কিশোর ধর্ষন করেছে। ঘরে ঢুকে স্বামী সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষন করা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীরা মিলে একজন ছাত্রীকে কেরোসিন দিয়ে জ্বালিয়ে হত্যা করেছে। আর মৃত বোনের ভাইকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকে চাকুরী দিয়েছে। অপরাধীদের শাস্তি হয়নি কারণ তারা ক্রিমিনাল রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সদস্য।

এই যদি অবস্থা হয় তাহলে আমার সহশীল প্রিয় মানুষটি ভেবে নিতেই পারে ভালবাসা অর্থ দরকার হলে প্রেমিকার দেহে আঘাত করা। ভালবাসা অর্থ প্রেমিকার সামনে প্রাক্তন প্রেমিকাকে নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করা।পুরানা প্রেমিকার কথা ভেবে আবেগে আপ্লুত হওয়া । নীতি বিবর্জিত একটি দেশের প্রতিটি মানুষই নীতিহীন হয়ে যায় যাতে সবার সাথে একটি সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায়। আমার প্রাক্তন স্বামীও খুব রাগী মানুষ ছিলেন । তিনিও রাগ হলে আঘাত করতেন। একদিন তিনি বলেছিলেন – আঘাত করেছি শুধু মেরে তো ফেলিনি। আমার অতি প্রিয় সব মানুষেরাই ভালবাসার মানুষকে দেহে এবং মনে আঘাত করতে বিশ্বাসী। সমাজের অন্যান্য মানুষের সাথে এরা অতি বিনয়ী। খুব সুন্দর ভাষাতে এরা কথা বলে । খুব রুচিশীল মানুষ। এদের দ্বারা যারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাদের কথা কেউ জানেনা। মানেনা। কি দরকার? এদের দ্বারা যারা প্রসংশিত তারা ধন্য। তারাও এদের প্রসংশাতে পঞ্চমুখ । কারণ এদের দ্বারা তাদের দেহে বা মনে আঘাত আসেনি। যতক্ষণ পর্যন্ত একজন মানুষ নিজে তার দেহে এবং মনে আঘাতপ্রাপ্ত না হয় শুধু অন্যকে আঘাত করেই যায় তারা কখনো অন্যের ব্যাথা অনুভব করেনা।

এখন রাত ১টা বেজে ৫৭ মিনিট টরেন্টো সময়। আমি সেহরী করেই ঘুমাবো। আমার জীবনের শুরু থেকে শেষ অবধি আমি নিপীড়কদের মুখোমুখি থেকে গেলাম। ভাবছি আমার মৃত্যুও কি একজন নিপীড়কের হাতেই হবে? সম্ভাবনা ১০০% । আমার খুব শখ ছিল আমার মৃত্যু হবে খুব স্বাভাবিক। ঘুমের ভেতর। রাতে ঘুমাবো ভোরে আর জাগবোনা। এটাই আমার মৃত্যু স্বপ্ন। আমি তো কত স্বপ্নই দেখেছি। কিছুই পূরণ হয়নি। আমার স্বপ্নগুলো ছিল নিম্নরুপ
আমার একটা খামার বাড়ী থাকবে
সেই খামারবাড়ীর পাশে নদী থাকবে
সেই নদীর ঘাটে আমার নৌকা থাকবে
সেই নৌকার চারিপাশে আমার অনেক হাঁস ভেসে বেড়াবে
সেই খামারবাড়িতে আমি আর আমার প্রেমিক স্বামী থাকবো
আমাদের একগাঁদা ছেলেপুলে হবে
আমরা সবাই মিলে ধান, আলু, গম চাষাবাদ করবো
তারপর জোছনারাতে আমি আর আমার প্রেমিক স্বামী নৌকার পাটাতনে শুয়ে মাঝনদীতে ভেসে যেয়ে গভীর ঘুমে আছন্ন হবো। ভোরে মোয়জ্জ্বিনের আযানে আমাদের ঘুম ভাংবে। তখন চাঁদ থাকবে কিন্তু সূর্যের প্রখরতা  চাঁদকে ম্লান করে দেবে।

উপরোক্ত স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আমার কোন প্রেমিক নাই।
প্রেমিকের বেশে বাংলাদেশী ধোঁকাবাজ প্রতারকেরা এসেছে। আমি প্রতারিত হয়েছি। প্রতারক সম্পর্কে লিখেছি।
সন্তান সেজে প্রতারক এসেছে। মায়ের পরেই আমাকে স্থান দিয়ে টাকা মেরে পালিয়েছে। কারণ এদের জন্ম হয়েছে ধোঁকাবাজ প্রধান দেশ বাংলাদেশে। মিথ্যা বলে প্রতারণা করে ধোকাবাজী করেই এদের দাদার জন্ম, বাপের জন্ম এদের জন্ম।

দোষ আমার। কোন সন্দেহ নাই।
সারাজীবন ধোঁকা খেয়েও যদি আমি মানুষ বিশ্বাস করতে থাকি তাহলে বিশ্বাসও লজ্বা পেয়ে যাবে।
মানুষকে বিশ্বাস করার প্রবনতা আমার ভেতরে মরেনা। সেজন্য আমি সবাইকে বিশ্বাস করি এবং ক্ষতিগ্রস্থ হই। আর্থিক এবং মানসিকভাবে।

যাকে আমি ভালবাসি তাকে আমি রক্ষা করি – খারাপ সময় থেকে ভাল সময়ে ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করি।
যাকে আমি ভালবাসি তাকে আমি দেহে আর মনে আঘাত করিনা। তবে সে যদি আমাকে আঘাত করে আমি প্রতিঘাত করি। নাহলে সে আমাকে লাথি ঘুষি মারার বালূর বস্তা ভেবে বসে থাকবে। সে আমাকে আঘাত করতেই থাকবে। সে আমাকে গালি দিতেই থাকবে । কোনকিছুই এক তরফা চলতে পারেনা। আঘাত করতে করতে আঘাত করার নিয়ম হয়ে যায়।

পুরুষের চাইতে নারীরা শারীরিকভাবে দুর্বল থাকে। যেসব পুরুষ নারীদের দেহে আঘাত করে তারা কাপুরুষ।
দুর্বল মনের ভীতু পুরুষেরা তাদের চাইতে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী পুরুষের হাতে মাইর খেয়ে এসে দুর্বল নারী যে নাকি থাকে ভালবাসে বিশ্বাস করে তাকেই আঘাত করে। এই পুরুষের ধারণা এই নারী প্রতিঘাত করতে পারবেনা সুতারাং একে আঘাত করা যেতেই পারে।

নারী বা পুরুষ যেকোন মানুষের দেহে আঘাত করার অধিকার কারু নেই। এটা অপরাধ। কেউ অপরাধ করলে তাকে পরিহার করা যেতে পারে। মনের মিল না হলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হয় আঘাত করে কারুকে ধরে রাখা যায়না । আমি চলে এসেছি। অনেক অনেক দূরে। আর কখনো ফিরে যাবোনা সেখানে যেখানে যেখানে আমি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি – দেহে বা মনে।

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *