বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের নির্যাতন কেন্দ্র

https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html

আমি দুর্বল মন বা স্বাস্থ্যের মানুষ নই। এই সংবাদটি যখন পড়ছিলাম তখন আমি অসুস্থবোধ করছিলাম। বাংলাদেশ কি মধ্যযুগে ফিরে গেছে? ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং বা র বাংলাদেশের মানুষের মগজ ধোলায়ে অসাধারণ সফলতা লাভ করেছে ফলে সবার মগজ অবশ। সবাই স্বৈরাচারী ভারতের রাজ্যসরকার আওয়ামীলীগের ভয়ে ভীত, কম্পিত, নিস্তব্ধ।

বর্তমানে বাংলাদেশের সবগুলো রাজনৈতিক দলই ভারতের রাজ্যসরকার হবার জন্য আকুল এবং ব্যাকুল। তবে আমি যে সংবাদটি পাঠ করেছি সেই সংবাদটি পড়ার পর আমার মনে হয়েছে ভারতের গোয়েন্দা বাহিনীর প্রপোগান্ডা আর মগজ ধোলায়ের সফলতা বাংলাদেশে ভারতের রাজ্যসরকারের অধীনে কর্মরত যারা ছিল বা আছে তারা আর মানুষ নেই। ভারতের রাজ্যসরকার হবার জন্য যারা রাজনীতি করে তারা কেউ আর মানুষ নেই। হিটলারের গ্যাস চেম্বার বা নির্যাতন কেন্দ্রগুলো যারা পরিচালনা করতো তারা সবাই ইয়াবা নিতো। ইয়াবা সেবনে মানুষ তার মানবিক সংবেদনশীলতা হারিয়ে ফ্যালে। রোবটের মত হয়ে যায়। সে যখন নির্যাতন করে তখন সে নিজেও জানেনা সে কি করছে। হিটলারের আমলের বা আরো আগের অমানবিক নির্যাতন সেলগুলোর মতো বা গুয়ানাতা মো বে কিউবাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্যাতন সেলের মতই নির্যাতন কেন্দ্র রয়েছে বাংলাদেশে। এই নির্যাতন কেন্দ্রগুলো পরিচালনা করার জন্য বাংলাদেশ র‍্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়নকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে।

রাজারানী রাজকুমার ও তাদের বিয়ে, বউদের গাউন, পা ভাড়ি, সন্তান প্রসবের রঙ্গিন ছবি দেখতে দেখতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাহাদুরের কথা আমরা সবাই সম্ভবত ভুলে গেছি। ৩০০ বছর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী শাসন থেকে আমরা দাসত্ব করতে শিখেছি, পদলেহন করতে শিখেছি, ঘুষের আদানপ্রদান করতে শিখেছি, প্রভুদের খুশী করার জন্য গোপাল ভাঁড় হতে শিখেছি, জাত পাত বর্ণ ধর্ম নিয়ে একে অন্যকে ঘৃণা, নির্যাতন, হত্যা, বিচ্ছেদ, নিয়ন্ত্রন করতে শিখেছি আরো শিখেছি নিরীহ মানুষদেরকে বিনা বিচারে বিনা সাক্ষ্যপ্রমানে দিনের পর দিন বেঁধে রেখে নির্যাতন করতে?

যুক্তরাজ্যের ওরা এখন হিউমান রাইটস এন্ড ফ্রিডমের কথা বলে শুধু নিজেদের জন্য আর বাংলাদেশে নির্যাতন কেন্দ্র পরিচালনা করার জন্য বাংলাদেশ থেকে অমানুষ এনে নির্যাতন করার জন্য প্রশিক্ষণ দেয় যাতে যুক্তরাজ্য নিরাপদ থাকে। বাংলাদেশে ভারতের রাজ্যসরকার নিরাপদ থাকে। বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং অন্য সকল পুঁজিপতিদের স্বার্থ সংরক্ষিত ও নিরাপদ থাকে। বাংলাদেশ এখনো সেখানেই আছে ৩০০ বছর আগে যেখানে ছিল। তখন দিনে দুপুরে রাস্তার মাঝখানে ফাঁসী দেওয়া হতো ভয় দেখাবার জন্য যাতে এই ফাঁসী দেখে কেউ আর উঁচু স্বরে প্রতিবাদ করতে সাহস না পায়। সবাই লেংটি পড়ে চড়কা কাটে বসে বসে।

বাংলাদেশে র‍্যাবের জন্ম হয় ২৬শে মার্চ ২০০৪। বাংলাদেশ পুলিশ, আর্মী, নেভি, এয়ারফোর্স, আনসার, বর্ডার গার্ড – থেকে সদস্য নিয়ে র‍্যাপিড এ্যাকশন টিম গঠিত হয়। তারপর এই টিমকে যুক্তরাজ্য প্রশিক্ষিত করে এবং ১৪ই এপ্রিল ২০০৪ সালে র‍্যাব মানবাধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘনকারী নির্যাতন শুরু করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলই র‍্যাব গঠন করে। যুক্তরাজ্যকে সহায়তা করে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী নাগরিকদের গ্রেফতার এবং নির্যাতন করা হয়। সেই একই র‍্যাব এখন ব্যবহৃত হচ্ছে বিএনপি এবং জামাতের সদস্যদের নির্যাতন ও হত্যা করার জন্য।

পহেলা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জন্ম হয়। ৩০শে মে ১৯৮১ সালে হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে ভারতের গোয়েন্দা বাহিনীর নির্দেশে জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্টাতা মেজর জিয়াকে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা শুরু হয় ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী থেকে। দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা হত্যা কালকে চারভাগে ভাগ করা হয়।

১০-১-১৯৭২ – ১৫-৮-১৯৭৫ মুজিব ও রক্ষীবাহিনী পরিচালিত দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকান্ড
১৬-৮-১৯৭৫-৩০-৫-১৯৮২  জিয়া, মোশাররফ, তাহের পরিচালিত দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ড
১৯৮২-১৯৮৮ – হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ পরিচালিত দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকান্ড
১৯৮৯- ২০১৮ —– খালেদা জিয়া এবং হাসিনা পরিচালিত দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ড

এভাবেই বিভিন্ন সময়ে মাছের কাটা দিয়েই মাছের কাঁটা সাফ করে দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শূন্য করে ফেলা হয় বাংলাদেশকে যাতে কেউ আর মাথা তুলে দাঁড়াতে সাহস না পায়। বাংলাদেশের মেরুদ্বন্ড ভেঙ্গে দিয়ে নতুন প্রজন্মকে পাঠ করানো হয় বিভ্রান্তকর ইতিহাস, প্রপোগান্ডা দিয়ে ধোলায় করা হয় মগজ। যার যার নিজের স্বার্থে মালপানি কামানের উদ্দেশ্যে গর্ত থেকে পুরানা ইঁদুরেরা একে একে বের হয়ে আসে । কেউ ইসলামকে ব্যবহার করে মগজ ধোলায়ের জন্য কেউ গণতন্ত্র শব্দের অপব্যবহার করে মগজ ধোলায়ের জন্য কেউ সরাসরি খুন, ধর্ষন, দুর্নীতিকে মুলা হিসাবে স্বগর্বে মেলে ধরে। দাসেদের আজন্ম প্রভু হবার স্বপ্নে আগুন লাগে সবাই টাকা কামাতে চায় – হানাহানি লেগে থাকে।

প্রজন্মের মোবাইল টেপা তরুনেরা যার যার মনের মাধুরী মিশিয়ে অমুক সেনা তমূক সেনা হয়ে কেউ পথে পুলিশের লাথি খায় কেউ নির্যাতন কেন্দ্রে যেয়ে র‍্যাবের নির্যাতনের শিকার হয় কেউ ক্রসফায়ারে ১৭টা গুলি বুকে নিয়ে খালেবিলে পথে বা থানা মর্গে শুয়ে থাকে। মাবাবার স্বপ্ন উবে যায়। তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ, সাতক্ষীরা থেকে সীতাকুন্ড ঘরে ঘরে কাফনের কাপড় দিয়ে মা অশ্রু মোছেন, স্ত্রী বিধবার বেশে উদাস হন, আর এতিম শিশুরা অসহায় চোখে প্রশ্ন নিয়ে অপেক্ষা করে উত্তরের – কেন তার বাবার হাতপাচোখ বাঁধা, হাত জোড় করে আছে মৃত বাবা সমস্ত শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে কোন অপরাধে খালেবিলে পানিতে ভিজে ঢোল হয়ে ভাসে???

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি শেষ হয়নি?
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাহাদুর কি চলে যায়নি?
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাহাদুরের দোসর পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী কি এখনো আছে?
না এসব কিছু না। হিটলার লজ্বা পেয়ে মাফ চেয়েছে – বাংলাদেশে আসতে অস্বকৃতী জানিয়েছে
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাহাদুর বলেছে – আমরা চলে এসেছি ঠিক তবে লর্ড ক্লাইভের আত্মা প্রতিটি উপনিবেশে জন্ম দিয়েছে হাজারো হিংস্র হায়েনার। ওদের সন্তানেরা যুক্তরাজ্যে এলে আমরা প্রশিক্ষিত করে র‍্যাব বানিয়ে পাঠিয়ে দেবো বাংলাদেশে যাতে হিটলার, বা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাহাদুর বা পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বা গুয়ানতানা মো বে কিউবাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্যাতনের কথা  বাংলাদেশের মানুষ ভুলে না যায়।

ভারত হেসেছে। ধন্যবাদ জানিয়েছে বাপেদের। সবার সহযোগীতা পেয়ে ভারত ধন্য। শেখ মুজিবের প্রেতাত্মা শেখ হাসিনার হাসিতে এসে নৃত্য করে ৩৬৫ দিনে। কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। এই সংবাদটি আমি এভাবেই রাখলাম। সংবাদটি পুরানা। তবে আমি পড়েছি গতরাতে। অনুবাদ করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমি। আমি ইংরেজী জানিনা।

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা

https://www.theguardian.com/world/2011/jan/18/bangladesh-torture-centre-map

হিটলারের নির্যাতন কক্ষ
GUANTANAMO BAY, CUBA – JANUARY 11: In this handout photo provided by the U.S. Navy, U.S. Military Police guard Taliban and al Qaeda detainees in orange jumpsuits January 11, 2002 in a holding area at Camp X-Ray at Naval Base Guantanamo Bay, Cuba during in-processing to the temporary detention facility. The detainees will be given a basic physical exam by a doctor, to include a chest x-ray and blood samples drawn to assess their health, the military said. The U.S. Department of Defense released the photo January 18, 2002. (Photo by Petty Officer 1st class Shane T. McCoy/U.S. Navy via Getty Images)
গুয়ানতানামো বে কিউবা – আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে নিরীহ মানুষ ধরে নিয়ে যেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্যাতন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে

One thought on “বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের নির্যাতন কেন্দ্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *