https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html
আমি মাঝে মাঝে ভাবি আমার সন্তানেরা যদি বাংলাদেশে জন্ম নিতো বড় হতো তাহলে ওরাও হয়তো রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়তো আর পুলিশ বা র্যাবে এসে একদিন উঠিয়ে নিয়ে যেতো তারপর আমি ওদের হাতপাবাধা লাশ পেতাম কোন এক সড়কের পাশে বা খালে বা বিলে ভাসছে। আমি যেমন একদিন মরে যাবো তেমনি আমার সন্তানেরাও মরে যাবে। সবারই মৃত্যু হয়। তবে কোন মা বাবাই তাদের সন্তানের ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখতে চায়না। রাজনৈতিক কারণে মৃত্যু এখন স্বাভাবিক মৃত্যু। ক্রসফায়ারে মৃত্যু এখন স্বাভাবিক মৃত্যু। কোন লাশ পাওয়া গেলেই আমরা ফেসবুকের পোষ্ট দেখি, লাশের নীচে সবাই দোয়াদরুদ পাঠ করত আল্লাহ্র কাছে বিচার চাইছে।
এইসব মৃত্যুর কি আদৌ কোন দরকার আছে?
দেশ যখন হানাদার বাহিনীর দখলে ছিল তখন দেশপ্রমিক সূর্যসন্তানেরা গেরিলাযুদ্ধ করেছিলেন
দেশ যখন থেকে ভারতের দালালের হাতে তখন আমরা আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি করতাম
আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি করার কারণ ছিলঃ
নিজেদের নিরাপদ রেখে ভারতের দালালদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, লড়াই করা, মানুষকে সচেতন করা যাতে জনগণ বুঝতে পারে তাদের দুর্ভোগের কারণ এবং আমাদের পাশে থাকে।
প্রথমে নিজেকে নিরাপদ করতে হবে
যদি আমি গ্রেফতার হই, লাশ হই তাহলে যুদ্ধ করবো কিভাবে?
আমার লাশ দেখে আমার কমরেডসরা নৈতিকভাবে, মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাবে, ভীত হয়ে যাবে, অথবা যাতে লাশ না হতে হয় সেই ভয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, আমাদের অবস্থানের কথা শত্রুদের জানিয়ে দেবে, স্বৈরাচারেরা শক্তিশালী হবে আর আমরা যুদ্ধে হেরে যাবো।
সন্মুখ সমরের সময় এটা নয়।
ভারতের অঙ্গরাজ্য বাংলাদেশে এখন দাসেদের নিয়ে চলছে খেলা খেলা নির্বাচন। আওয়ামীলীগের সাথে আওয়ামীলীগের লড়াই চলছে। কাদের সিদ্দিকী হলো শেখ মুজিবের ছেলে। ডঃ কামাল হোসেন হলো শেখ মুজিবের আইনী উপদেষ্টা এবং মন্ত্রী । শেখ হাসিনা শেখ মুজিবের মেয়ে। ডঃ কামাল হোসেন আর কাদের সিদ্দিকী চায় ক্ষমতা দখল করতে আর হাসিনা চায় ক্ষমতাই থাকতে। এই ক্ষমতালোভী আওয়ামীলীগ সব সময়ই বিদেশীদের দালাল হিসাবে বিদেশীদের প্রতিনিধি হিসাবে বিদেশীদের অঙ্গরাজ্য বাংলাদেশের সরকার হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত। ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের সাধারন নির্বাচন যা ভোলার ঘূর্নীঝড়ের কারণে ১৯৭১ সালের ১৭ই জানুয়ারী অনুষ্টিত হয় সেই নির্বাচন ছাড়া শেখ মুজিব বা শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ কখনো বাংলাদেশের কোন নির্বাচনেই জয়লাভ করেনি। ভোটকেন্দ্রগুলোতে সন্ত্রাস চালিয়ে স্বনির্বাচিত হয়েছে বারে বারে। ১৯৭২ সালে ভারতের অঙ্গরাজ্য বাংলাদেশে ভারতের রাজ্যসরকার হিসাবে ভারত আওয়ামীলীগকে প্রতিস্থাপিত করার পরে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাখান করেছিল।
কামাল হোসেন একজন আইনজীবি এবং রাজনীতিবিদ। সি আই এ এজেন্ট হোসেন শহীদ সোওয়ার্দীর সাথেও তিনি কাজ করেছেন আর সব চাইতে গুরুত্বপূর্ন বিষয় যেটা সেটা হলো আগরতলা মামলাতে তিনি শেখ মুজিবের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
আগরতলা মামলা ছিল রাস্ট্রদ্রোহিতা মামলা। শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে রাস্ট্রদ্রোহিতার মামলা করেছিল তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক সরকার। শেখ মুজিব ভারতের আগরতলা যায় এবং ভারতের সাথে দালালী চুক্তি করে। ১৯৭১ এর ২৬শে মার্চ থেকে আজ ১৭ই নভেম্বর ২০১৮ – পূর্ব পাকিস্তান ছিল পাকিস্তানের একটি খন্ড আর ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে একই ভূখন্ড বাংলাদেশ নামে ভারতের অধীনে রয়েছে ভারতের দালালদের দ্বারা শোষিত হয়ে – এই ব্যাপারে আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন এমন কে কে এখানে আছেন?
দেশ স্বাধীন হলে দেশে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকতো। দেশে আইন থাকতো। নিরাপত্তা থাকতো। দেশের সম্পদের উপর জনগনের মৌলিক অধিকার থাকতো। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের ভয়াল রাতে শেখ মুজিবের সাথে কামাল হোসেন পাকিস্তান চলে যান। এখন কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্য রচনা করেছেন মাঝে মাঝেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনা দিচ্ছেন, সবাইকে রাস্তাই দাঁড়িয়ে যেতে বলছেন – এখন উনি কি জনগনকে বলবেন – কেন উনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ না করে দেশ ও দেশের জনগণকে পাক হানাদার বাহিনীর বন্দুকের নলের মুখে ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ে পাকিস্তানে যেয়ে লুকিয়েছিলেন?
অধ্যাপক গোলাম আজম মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই
শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধে করে নাই
কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই
কামাল হোসেনও মুক্তিযুদ্ধ করে নাই
সেই কামাল হোসেন এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ভারতের রাজ্যসরকার নির্বাচিত হবার জন্য ক্ষমতাসীন হাসিনার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপিকে সাথে নেবার একমাত্র কারণ বিএনপীর নেত্রী জেলে যাবার পরে বিএনপীর বিশাল কর্মীবাহিনী এতিম এবং নেত্রীত্বের অভাবে দিশেহারা – এই সুবর্ণ সুযোগ হাত ছাড়া করেননি আওয়ামীলীগের সুবিধাবাদী আইন উপদেষ্টা ও প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের দালাল রাস্ট্রদোহি কামাল হোসেন। বিএনপির নেত্রীর জেল কামাল, কাদের, পার্থের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গেছে। সম্ভবত এই কারনেই খালেদা জিয়া জেল হলে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আগুন জ্বলে উঠেনি।
এক সাগর বিএনপীর কর্মীদের রক্তাক্ত লাশের মিছিলের উপর মঞ্চ করে দাঁড়িয়ে গেছে সুবিধাবাদী কামাল, কাদের, পার্থের দল। অন্যদিকে দাঁড়িয়ে হাসিনা হাসে । ভারতের অঙ্গরাজ্য বাংলাদেশে ভারতের রাজ্যসরকার হবার জন্য পদলেহনের যে দক্ষতা দরকার সেই দক্ষতাই চ্যাম্পিয়ণ শেখ হাসিনা আর এই চ্যাম্পিয়নশীপ রক্তসূত্রে অর্জিত।
স্বপরিবারে শেখ মুজিব রং মেখে শুয়ে গেলে কাদের সিদ্দিকী ভারতে গেছিল বিএনপির প্রতিষ্টাতা মেজর জিয়াকে হত্যা করার জন্য ভারতের সাহায্য চাইতে। এই তথ্য বিএনপির কর্মীদের অজানা নয়। বিএনপির নেত্রীকে জেলে বন্দী রেখে বিএনপির প্রতিষ্টাতার খুনীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনে যাবার এই মহাউতসব ধীরে ধীরে বিএনপির নাম মুছে দেবে।
সমস্যা নেই। ভারতের অঙ্গরাজ্য বাংলাদেশে ভারতের রাজ্যসরকার হিসাবে দরকার একটি মাত্র দলের। সেই দলের নাম আওয়ামীলীগ।
কামাল বা হাসিনা – যে কেউ হতে পারে সেই আওয়ামীলীগের নেতা বা নেত্রী।
রাস্ট্রদ্রোহীর রক্তে রাস্ট্রদ্রোহি জন্ম নেয়। আর রাস্ট্রদ্রোহি ছাড়া অন্য কেউই বিদেশীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় আর সেকারনেই আমরা দেখি মিছিলে গুলি, লাঠি চার্জ, জেল ভর্তি ভুয়া মামলার আসামী, মর্গ ভর্তি ক্রসফায়ারে মৃত লাশ। সমগ্র বাংলাদেশ এখন একটি সমন্বিত জেলখানা ও কবরস্থান।
১৯৬৬-২০১৮ – সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের, সকল দেশপ্রেমিকের আত্মত্যাগের এই ছিল সর্বমোট প্রাপ্তি।
আয়শা মেহের।
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা