https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html
শান্তি অশান্তি | 8:27pm Mar 21 |
কসাই, ক্ষমা, গনহত্যা ও শ্রদ্ধা
দেশে দেশে সরকার নির্বাচিত হয় জনগনের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য। বাংলাদেশে সরকার নির্বাচিত হয় জনগনকে গুলি করে হত্যা করার জন্য। পুলিশ গুলি করে মানুষ হত্যা করে খোলা আকাশের নীচে। প্রতিদিন পত্রিকাতে ছবি ছাপা হয় পুলিশে জনগনের রক্তাক্ত লাশ টেনে হেঁচড়ে টেনে তুলছে অথবা ফেলে রেখেছে রাস্তায়। এই জনগনের অপরাধ “সাইদীর মুক্তির দাবীতে হরতালে যোগ দেওয়া” । এই অপরাধে পুলিশ গুলি করে মানুষ হত্যা করতে পারে। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ, কিশোর, যুবক যাকে তাঁকে যখন তখন যেখানে সেখানে যে কেউ হত্যা করতে পারে – এই হত্যার ব্যাপক স্বাধীনতার দেশ বাংলাদেশ। পুলিশ আইন শৃংখলা রক্ষা করার জন্য গুলি করে সড়কের মাঝখানে হত্যা করে বা ঘরের টিনের দেওয়ালে গুলি করে আইন শৃংখলা রক্ষা করার জন্য হত্যা করে। এইভাবে পুলিশ ও আআমীলীগের গুন্ডারা হত্যা মানুষ হত্যা করে চলেছে সারা বাংলাদেশে সভ্য বিশ্বের মাঝখানে বসে। সবাই তাকিয়ে দেখছে । এই সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে চায়। সারা বাংলাদেশের হাজার হাজার ছেলেরা এই সরকারের গনহত্যাকে সমর্থন করে। এক গনহত্যার বিচার করা হবে আরও একটি গনহত্যা করে। কার স্বার্থে ?
গতকাল বা পরশু এক জন্তুর মৃত্যু হলে সারা দেশে আবার শোক নেমে আসে। বাংলাদেশে মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয় আনন্দের সাথে আর পশুর বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুর জন্য শোকের ছায়া নেমে আসে। এইসব জন্তুরা ১৯৭১ সালের শহীদের জন্য কান্না করে করে চোখের অশ্রু দিয়ে বুকের আগুন নিভিয়ে ফেলার পরে এই জন্তুর মৃত্যুতে ভারত থেকে গ্লিসারিন অর্ডার দিতে হয়েছিল। এই জন্তু একটি উপকারী জন্তু ছিল । সে আওয়ামীলীগের নাম করা ভয়াবহ খুনীদের ক্ষমা করে দেয় । এইসব খুনিরা বেশীরভাগ খুনই করে বিএনপীর নেতা ও কর্মীদেরকে। এই খুনিরা আওয়ামীলীগের ছেলে তাই আওয়ামীলীগের জন্তুরা এই খুনীদের ক্ষমা করে দেয় যাতে এরা আওয়ামীলিগের জন্য আরও বিএনপী ও অন্যান্য বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের খুন করতে পারে।
আইনে খুনের সাজা মৃত্যুদ্বন্ড দেওয়া হয় এই কারনে যাতে সমাজের অন্যান্যরা ভয় পায় আর সমাজে খুনাখুনির হার হ্রাস পায় । বাংলাদেশে খুনীদের ক্ষমা করে উৎসাহিত করা হয় আরও খুন করার জন্য ও এইসব খুনীদের রাজনৈতিক খুনের কাজে ব্যবহার করার জন্য। সব চাইতে ভাল হয় যদি একটি খুন বিষয়ক মন্ত্রনালয় করা হয়। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী নাম বদলিয়ে “খুনী কমিশন” রাখলেই সব চেয়ে উপযুক্ত নাম হয়। আমরা জনগনকে খুন করি । যারা খুন হবে তাদের আত্মীয় স্বজনকে গ্রেফতার ও ধর্ষন করা যেতে পারে যদি তারা খুনের বিচার চায়।
মরহুম জন্তু জিল্লু যেসব খুনীদের ক্ষমা করে তারা সবাই বিএনপীর নেতা কর্মীদের হত্যা করে । আর এই হত্যা আওয়ামীলীগের নেতাদের নির্দেশেই যেহতু করা হয় তাই জিল্লু জন্তু এই খুনিদের মাফ করে দেয়। কোন ব্যাপার না। এটা হতেই পারে। আমার সমস্যা হলো যখন দেখলাম বিএনপীর নেত্রী বেগম খালেদা এই জন্তু জিল্লুর কবরে ফুলের মালা দিচ্ছে। আমার মনে হয় এডভোকেট নুরুল ইসলামের আত্মীয় স্বজন খুনি বিপ্লবকে হয়তো ক্ষমা করতে পারে কিন্তু বিপ্লবের অপরাধকে যে ক্ষমা করেছে সেই জন্তু জিল্লুকে ক্ষমা করতে পারবেনা কোনদিন। কারন এই জন্তু জিল্লুর কারনেই খুনিরা আরও খুন করবে আর এখন তো জনগনকে খুন করার জন্য সবার হাতে হাতে লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে।
এডভোকেট নুরুল ইসলামের আত্বিয়স্বজন কি বিস্মিত হয়েছেন খালেদা জিয়ার বুকের কাছে কালো কাপড়ের টুকরো আর হাতে ফুলের তোরা দেখে ? আমার বাবার বা স্বামীর বা ভাইয়ের খুনিকে হয়তো আমি ক্ষমা করে দিতাম কিন্তু সেই খুনীকে যে ক্ষমা করেছে তাঁকে ক্ষমা করা আমার পক্ষে সম্ভব হতোনা । আমার বাবা, স্বামী বা ভাই যে রাজনৈতিক দল করার জন্য প্রান হারালো সেই রাজনৈতিক দলের নেত্রী যদি সেই ক্ষমাকারীর কবরে ফুল রাখে আর দুফোটা গ্লিসারিন ফ্যালে তাহলে হয়তো আমি সেই নেত্রিকে প্রানভরে ঘৃনা করতাম আর অনুধাবন করতাম কেন এই নেত্রী তার স্বামীর হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার জন্য অনুসন্ধান করেনি। বিএনপীর দুইজন নেতার খুনীকে ক্ষমা করেছে জিল্লু। সেই জিল্লুর কবরে খালেদা জিয়াকে ফুল রাখতে দেখে সহজেই বলা যায় জিয়ার খুনীর সাথে খালেদা জিয়া অনেকবার বসেছেন আর রাজনৈতিক আলাপ সালাপ করেছেন। খুনীদের জন্য উনার অনেক সমবেদনা । যারা খুন হয়েছে তাদের কথা উনার মনে নাই। কারন বাংলাদেশে সবচাইতে সস্তা যা তা হলো মানুষের জীবন। হরতাল ডাকলে পুলিশের গুলি খেয়ে মরার জন্য যে কেউ রাজী হয়ে যায় এখানে। পথে পথে মানুষ গুলি করে মারা কোন ব্যাপার না বাংলাদেশে । খালেদা জিয়া এটা নিয়ে চিন্তিতা নন। বিচলিত নন। এক গনহত্যার বিচারে আরেক গনহ্ত্যা হবে এটা স্বাভাবিক। জিয়া না মরলে খালেদা লাইম লাইটে আসতে পারতেন না । কি লাভ পুরানা কাসুন্দী ঘেটে। জন্তু জিল্লুর কবরে ফুল রেখে খালেদা দেখিয়ে দিলেন বিশ্বকে যে তিনিও কম কসাই নন। এখন দেখা যাক জন্তু জিল্লুর অন্যতম ক্ষমা পাওয়া জন্তু বিপ্লব কাকে কাকে কিভাবে কিভাবে খুন করেছেঃ
১৯৯৮ সালের ১ অক্টোবর রাতে জেলা সদরের দক্ষিণ মজুপুরের আবদুল খালেক ছাত্রদলের কর্মী ফিরোজ আলমকে ঘর থেকে ডেকে নেয়। পরে তাঁকে পৌর শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়ে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ফিরোজের লাশ মার্কাজ মসজিদের পাশে ফেলে দিয়ে যায় হত্যাকারীরা।
পুলিশ তদন্ত করে এ মামলায় বহুল আলোচিত আবু তাহেরের ছেলে এইচ এম বিপ্ল্লব, পৌরসভার সাহাপুর এলাকার মোরশেদ, শাঁখারীপাড়ার জাহিদুল ইসলাম, চাঁদপুর গ্রামের ছাদেকুর রহমান ও দক্ষিণ মজুপুর এলাকার আবদুল খালেকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিটি পেয়ে জেলা কমিটির সদস্যরা খুনের মামলা থেকে বিপ্লবের নাম প্রত্যাহারের করে। জাহেদ হত্যা ও এতিমখানায় অগ্নিসংযোগের মামলা থেকেও বিপ্লবের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় ।
লক্ষিপুরের বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে হত্যার পর তাঁর মৃতদেহকে টুকরো টুকরো করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় । বিপ্লব লক্ষিপুর জেলার আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের পুত্র। লক্ষিপুরে সে বহুদিনের ত্রাস। নাটোরের বিএনপি উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুর হত্যাকারীদেরকেও ক্ষমা করে দিয়েছিল জন্তু জিল্লু ।