ইতিহাস – যা জানতে, বুঝতে বা পড়তে আমরা ইচ্ছুক নই

https://bookkeepingnexus.com/Fraud_Anwar_Parvez/FraudBangladesh.html

ওয়াসিম ইফতেখারকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিএনপির কেউ জানেনা সে কোথায়। সবাই ওয়াসিমের হাতপাচোখ বাঁধা লাশের জন্য অপেক্ষা করছে। এখন লাশের ছবি ছাড়াই ফেসবুকে তার নামের নীচে মিলাদ চলছে। ঘনজনবসতিপূর্ন ছোট্ট বদ্বীপে সবার চোখের সামনে থেকে র‍্যাব, পুলিশ, বা খুনীরা কারুকে উঠিয়ে নিয়ে গেলে সবাই অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্টাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সমুদ্র মানুষের ভীরে একজন মানুষও জানেনা ওয়াসিম ইফতেখারকে কে বা কাহারা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। কেউ জানেনা। বিএনপির কেউ র‍্যাব, বা পুলিশে কাজ করেনা। সাড়া বাংলাদেশে পুলিশ থানা, র‍্যাবের অফিসগুলো কেউ চিনেনা।

একটার পর একটা ছেলেকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুকে তার মুক্তি দাবী করে ছবি পোষ্ট করা হচ্ছে। তারপর সেই ছবির নীচে নানা দেশে বসে থাকা বন্ধুরা আমীণ লিখছে, আল্লাহ্‌র কাছে বিচার প্রার্থনা করছে।  তারপর একদিন তার হাতপাচোখ বাঁধা লাশ। লাশের ছবির নীচে আবার সেই দোয়াদরুদ পাঠ।তারপর আবার অন্য একটি লাশের জন্য অপেক্ষা।

এটাই চলে আসছে ১৯৭২ সাল থেকে। তবে তখন ফেসবুক ছিলনা। তাই ছবির নীচে মুক্তির দাবী না করে বাংলাদেশের মানুষেরা সবাই আওয়ামীলীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মী হয়ে গেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং (র) মুজিব বিরোধী মুক্তিযোদ্ধাদের উপরে কড়া নজর রেখেছিল, মুক্তিযুদ্ধ ক্যাম্পে ক্যাম্পে মুজিব বিরোধী মুক্তিযোদ্ধা বাছায় এবং নিধনে অংশ নেয় ছাত্রলীগের আব্দুল কুদ্দুস মাখন। অনেকেই ভারতের হাত ফস্কে যায়, অনেকেই বাংলাদেশের ভেতর লুকিয়ে থেকে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। শেখ মুজিব দেশে ফিরে এলে শেখ মুজিবের প্রথম কাজ ছিল অস্ত্র জমা নেওয়া, আর র এর হাত ফস্কে যাওয়া সেইসব মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তাবুর নীচে এনে তাদের হত্যা করা। শেখ মুজিব বিরোধী বামপন্থী নেতাকর্মীদের হত্যা করার জন্যই গঠন করা হয়েছিল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল। ছাত্রলীগে ছিল চার খলিফা – আ স  ম আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজ, আব্দুল কুদ্দুস মাখন আর নূরে আলম সিদ্দিকী। এদের থেকে দুইজন জাসদে যোগ দেয় ভাবটা এমন দেখায় যেন এরা আওয়ামীলীগ বিরোধী একটি দল যাতে আওয়ামীলীগের অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার মুক্তিযোদ্ধা ও বামপন্থী নেতা কর্মীদের জন্য পাতা এই ফাঁদে সবাই পা দেয়।

দিয়েছিল।
নেতাকর্মীরা কোথায় কোথায় লুকিয়ে আছে দলের উঁচুতে যারা ছিলেন তারা জানতেন, জানিয়ে দিতেন আর সেখানে সেখানে রক্ষীবাহিণী ও মুজিব বাহিনী ঠিক ঠিক পৌছে যেতো এবং গ্রাম ঘেরাও করে জাসদ কর্মীদের হত্যা করা হয়েছিল। জাসদকর্মীরা কোন গ্রামে লুকিয়ে আছে সেটা রক্ষীবাহিণীর জানার কথা না।

২০১৩-১৮ সালে যখন বিএনপি বা জামাতের কর্মীদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সাড়া বাংলাদেশের কেউ জানেনা কোথায় নেওয়া হয়েছে। কারণ বিএনপি বা জামাতের রাজনৈতিক দলের নেতারা পুলিশ বা র‍্যাবের সাথে সংযোগ রাখেনা। রক্ষীবাহিনী ও মুজিব বাহিনীর সাথে জাসদের উঁচু পর্যায়ের নেতাদের যেমন সংযোগ ছিল। ঘরের শত্রু বিভীষণ !

যুদ্ধবিধবস্ত ও আওয়ামীলীগের চুরি ডাকাতি, লুট, হরফ, দখল, খুন ও ধর্ষনে অতিষ্ট ১৯৭৩ সালে দুর্ভিক্ষের শুরুতে সমগ্র বাংলাদেশে জনমনে আওয়ামীলীগের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ জন্ম নিতে শুরু করে তখন অন্যতম বিরোধী রাজনৈতিক দল ছিল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি এবং পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি আর দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা ও বামপন্থি নেতাকর্মীদের হত্যা করার ফাঁদ তথাকথিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নামে বা জাসদ।

মুক্তিযোদ্ধা ও বামপন্থীদের হত্যা করার জন্য গঠিত হয় জাসদ আর শ্রমিকদের দাবিয়ে রাখা আর হত্যা করার জন্য গঠিত হয় আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে লাল বাহিনী।  এখন যেমন ছাত্রলীগ, র‍্যাব, পুলিশ খোলা আকাশের নীচে ক্যামেরার সামনে দিনের আলোতে মানুষ হত্যা করে তা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পোষ্ট করে, রং মেখে শুয়েছিল বা সন্ত্রাসী ইত্যাদি তখন ছিলঃ

মুজিব বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী, লাল বাহিনী আর রক্ষীবাহিনী।

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা

৩ thoughts on “ইতিহাস – যা জানতে, বুঝতে বা পড়তে আমরা ইচ্ছুক নই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.