ধরে নিলাম আপনি নিঃসন্তান সেজন্য ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগ সমর্থন করেন। এবং যখনই ওরা হত্যাকাণ্ড ঘটায় বা কারুকে ধর্ষন করে তখনই আপনি ওদের প্রতিরক্ষা করতে একটি গরুর রচনা বিরবির করতে থাকেন। আপনার সন্তান নেই, ভাই, বোন, মেয়ে কেউ নেই। কিন্তু আপনার মা আছেন। মা ছাড়া কোন সন্তান জন্ম নিতে পারেনা।

আপনার মা সম্ভবত ছাত্রলীগ বা আওয়ামীলীগ বা আওয়ামী পুলিশ বা আওয়ামী র‍্যাব দ্বারা ধর্ষিতা হয়েই আপনার জন্ম দিয়েছে এবং ব্যাপারটা আপনাকে বলেছে সেজন্যই আপনি ইনিয়ে বিনিয়ে ছাত্রলীগের কর্মকান্ড সমর্থন করেন এবং বলেন কোন প্রমান নেই ছাত্রলীগ ধর্ষন করেছে। না কোন প্রমান নেই। আপনার মাকে যখন ছাত্রলীগ বা আওয়ামীলীগ বা মুজিবের গুন্ডা বা রক্ষীবাহিনী ধর্ষন করে আপনার জন্ম দিয়েছিল সে ঘটনারও কোন প্রমান নেই বিধাই আপনি বারে বারে ইনিয়ে বিনিয়ে মুজিব, আওয়ামীলীগ, হাসিনা, ছাত্রলীগকে সমর্থন করেন,। কারণ আপনার রক্তে ধর্ষক, খুনী, চোর, ডাকাতের রক্ত মিশে আছে।

আপনি যদি স্বাভাবিক কোন মানুষের স্বাভাবিকভাবে জন্ম দেওয়া সন্তান হতেন তাহলে আপনি ৪ঠা আগস্টে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত হামলা, ছাত্র হত্যা, ছাত্রী ধর্ষনকে গুজব বলে প্রমাণ চাইতেন না। মুজিব ধর্ষনে যেহেতু আপনার জন্ম সেহেতু আপনি বলবেন  “ছাত্রছাত্রীদের পথে বের হওয়া উতিৎ হয়নি”।
ছাত্রছাত্রীরা পথে বের হইলেই ওদের হত্যা ও ধর্ষন করার অধিকার ছাত্রলীগের হাত তুলে দেওয়া হয়না
যেহেতু আপনি মুজিবের ধর্ষনে জন্ম নিয়েছেন সেহেতু আপনি জানেন না ধর্ষনের সময় আপনার মা কি অবস্থার ভেতর দিয়ে গ্যাছে্ন ।

ধর্ষিতা হবার সময়ে আপনার মা হয়তো সাহায্যের জন্য চিৎকার করতেও পারেনি অথবা
হয়তো সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছি্লেন, কিন্তু আপনার মত জারজ তা শুনে গুজব বলে কানে মুজিবের বীর্য ঢুকিয়ে তা হাতে নিয়ে চাটছিলেন। আপনার মাকে ছাত্রলীগের ছেলেরা বা শেখ মুজিবের গুন্ডারা বা রক্ষীবাহিনী বা শেখ কামাল বা গাজী গোলাম মুস্তাফার ছেলেরা যখন ধর্ষন করছিল তখন তার গলা শুকিয়েছিল, যন্ত্রনাই সে কাতড়াচ্ছিল , বাঁচার আকুতি নিয়ে চোখ খুলে আপনার বাপেদের কুৎসিত কদাকার মুখ দেখে তখন আপনার মা যন্ত্রনাতে দগ্ধ হয়ে হয়তো বমি করে দিয়েছিলেন পিশাচদের মুখে। তখন ওদের বীর্যে আপনি জন্ম নেন। তারপর যন্ত্রনাই নীল হয়ে একসময় অবশ হয়ে নেতিয়ে পরেছে আপনার মায়ের দেহ।  তখনও আপনার বাবা মুজিব, ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ, রক্ষীবাহিনী, আওয়ামীপুলিশ আওয়ামী র‍্যাব আপনার মাকে ধর্ষন করেই চলেছে কিন্তু আপনি ফেসবুকের স্টাটাসে লিখেছেন “ছাত্রলীগ এই কাজ করতে পারে, আপনি বিশ্বাস করেন না”

তারপর একদিন আপনার জন্ম হয় আওয়ামীলীগ আর শেখ মুজিবের বীর্যে তখন আপনি ফেসবুকে একাউন্ট খুলে বলতে থাকেন ছাত্রছাত্রীদের উচিৎ হয়নি পথে যাবার। ধর্ষন হয়নি । সবই গুজব। ছাত্রছাত্রীদের জন্য যাদের এত দরদ তারা কেন ছাত্রছাত্রীদের রক্ষা করতে পাশে যেয়ে দাড়ালোনা আর তারা পাশে যেয়ে দাঁড়াইনি বলেই আপনার বাপ মুজিবের বীর্যে জন্ম নেওয়া আপনার অনেক বাপের কতিপয় বাপ ছাত্রলীগের ধর্ষন কর্মকান্ড সম্পুর্ন জায়েজ।

হতেই হবে । আপনার জন্মকে বৈধ করতে গেলে আপনার বাপেদের সবার সব ধর্ষন সব হত্যা সব ডাকাতি সব চুরি সব দুর্নীতিকে যুক্তি দিয়ে দেখতে হবে বৈকি। কোন যোগ্যতা ছাড়াই আপনি বিশাল চাকুরী করেন। গাড়িবাড়ি টাকাকড়ি সবই সম্ভব হয়েছে দেশের অর্ধেক মানুষ অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশের অর্ধেক মানুষকে ক্ষুধার্ত বসতহীন বস্ত্রহীন শিক্ষাহীন স্বাস্থ্যহীন রেখে।

একারণেই আপনি কৃতজ্ঞ। একারণেই আপনি ভেবে দ্যাখেন না বা উপলব্ধি করতে পারেন না আপনার মাকে যখন শেখ মুজিব আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ আওয়ামী পুলিশ আর আওয়ামী র‍্যাবে ধর্ষন করছিল তখন আপনার মা কোন ভয়াবহ অবস্থা দিয়ে গ্যাছেন। টাকার বান্ডিল আপনার বিবেকের টুটি চেপে ধরে আছে।

এমনও হতে পারে আপনি এক বা একাধিক কন্যা সন্তানের বাবা। ৪ঠা আগস্ট ২০১৮ সালে যে মেয়েদের বাথরুমে আটকে রাখা হয়েছিল যাদের উপর্যপরি ধর্ষন করা হয়েছিল তাদের ভেতর কেউ আপনার মেয়ে ছিলনা সেজন্য আপনি ধারণা করতে পারেন না তারা কি অবস্থার ভেতর দিয়ে সেই সময়গুলো অতিবাহিত করেছে। আপনি গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন। ধর্ষনের পর যারা জীবিত থাকে তারা কি আপনার মেয়ের মত হাসিখুশী স্বাভাবিক থাকে ? থাকেনা। তাঁরা চিৎকার করে কাঁদতে পারেনা পাছে আপনার মত জারজে জেনে যায়। তাঁরা প্রতিশোধ নিতে পারেনা কারণ তারা দুর্বল। সেই সময়গুলোতে তাঁরা নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি। কেউ আসেনি তাদের রক্ষা করতে। বাংলাদেশে এত মানুষ গিজগিজ করছে পথঘাট কেউ আসেনি তাদের উদ্ধার করতে। তাদের সহপাঠিরা অসহায়ভাবে সাংবাদিকেরে কল করেছে। সাংবাদিক হেসেছে। প্রশ্ন করেছেঃ পুলিশ কি করছে ? অসহায় আর একটি ছেলে আকুল আবেদন নিয়ে পুলিশেরে ফোন করেছিল – পুলিশ বলেছে কি করবো, বলো, ছাত্রলীগ কি আমার কথা শুনবে ?

এই লেখার শুরুতে তাদের কন্ঠস্বর আছে। আপনার চারিপাশে যে নোটের বান্ডিল দিয়ে কেনা আসবাব , টিভি, আপনার ভুঁড়ি, আপনার স্ত্রীর হাসিমুখ আর থলথলে চর্বি, আপনার মেয়ের ম্যাকবুক আর সুন্দর সুন্দর ড্রেস সব কিছুতেই সেই সব মানুষের রক্ত লেগে আছে যাদের উপর অন্যায় করে আপনার হাতে সেই নোটের বান্ডিল এসেছে। একদিন আপনি আপনার বিশাল ভুড়ি ও থলথলে চর্বি নিয়ে সিঙ্গাপুরের কোন দামী হাসপাতালে যাবেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে তবে পেছনে ফেলে রেখে যাবেন আপনার কিশোরী বা তরুনী কন্যাদের।

কোন সমাজে ??
যে সমাজে একদিন আপনি ধর্ষকদের বিচার করেননি ফলে ধর্ষকেরা রয়ে গেছে। ধর্ষকেরা দেশের প্রশাসনে রয়ে গেছে। আর সেই দেশে রয়ে গেছে আপনার কন্যারা যে দেশে একজন খুনী কিছু খুনী ধর্ষক চোর ডাকাত দুর্নীতিবাজ পরিবেষ্টিত হয়ে সাড়া দেশে লাশের মিছিল সাজিয়েছে। আপনি কি বুঝতে পারছেন আপনি  কি করেছেন ?
আপনি আপনার কন্যাদের জীবনে সেই অভিজ্ঞতা দেবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছেন ধর্ষকের পথ
সেই অভিজ্ঞতা যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেই মেয়েদের যারা ৪ঠা আগস্ট ২০১৮ তে ঝিগাতলার যুবলীগের অফিসের বাথরুমে আটক ছিল। যাদেরকে দল বেধে ধর্ষন করা হয়েছিল। তাদের সেইসব ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যাতে আপনার মেয়ে অর্জন করে সেইজন্য আপনি ছাত্রলীগের ধর্ষন, হত্যা, চুরি, ডাকাতি, দুর্নীতিকে “গুজব” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

অথবা এই দায়ভার জামাত শিবির বিএনপি বা ছাত্রছাত্রীদের মাতাপিতার উপরে চাপায়ে নিশ্চিন্ত থেকেছেন।

এই সমাজে মুজিব, হাসিনা, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামীপুলিশ,আওয়ামী র‍্যাব প্রতিষ্টিত করেছেন আপনি — কেউ রেহায় পায়নি । আপনার কন্যারাও পাবেনা যতই আপনি তোষামোদ করেন আর যুক্তি খাড়া করেন আর গুজব বলে উড়িয়ে দ্যান ।

ধর্ষক মাবোনবাপ চিনেনা।
ফিচার ছবিটার মত একদিন আপনার মেয়ের নিথর উলঙ্গ দেহ এইভাবেই পড়ে থাকবে রাজপথে।

অপেক্ষা করুন।

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো, কানাডা ।

One thought on “গুজব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *