হিমোগ্লোবিন আর আপনি

হিমোগ্লোবিন মাত্রা কমে গেলে আপনি কি করবেন?

আপনার নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার ফলাফল দেখে ডাক্তার হয়তো আপনাকে বলতে পারে যে আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে। ফলে আপনার দেহে রক্তশূন্যতা দেখা দিয়েছে। আইরনের ভেতর রয়েছে মেটাল পুষ্টি যা আপনার রক্তের লাল কণাতে অক্সিজেন সরবরাহ করে।

আইরনযুক্ত খাদ্যগ্রহণ না করার ফলে মানুষ সাধারণত রক্তশূন্যতাই ভোগে।
ফ্যাক্টরীতে তৈরি আইরন ট্যাবলেট না খেয়ে আইরনযুক্ত খাদ্যগ্রহন করাই বাঞ্ছনীয়।
ফ্যাক্টরীতে তৈরি আইরন ট্যাবলেটের সব চাইতে খারাপ প্রতিক্রিয়া হলো কনস্টিপেশন বা কোষ্টকাটিন্যের সমস্যা। ফলে আইরণ পেতে যেয়ে আপনাকে কিনতে হবে আরো একটি ট্যাবলেট যাতে আপনার পেট সাফ থাকে আর সেই ট্যাবলেট যদি পরিমানে অতিরিক্ত নেওয়া হয় তাহলে আমাশা রোগ দেখা দিতে পারে। সেজন্য আইরন ট্যাবলেট না নিয়ে আইরনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা যেতে পারে।

বাংলাদেশের মাটিতে এখনো সোনা ফলে। আর আইরনযুক্ত খাদ্য এখনো ছাদে, উঠোনে, ব্যালকনি বা বাড়ান্দাতে উৎপাদন করে তা খেয়ে আইরনের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।

সব সমস্যার সমাধানই বৃহৎ ফার্মাসিটিক্যালস কর্পোরেশন করে দেয়না। ওরা বরং সমস্যা সৃষ্টি করে যাতে মানুষের অসুখ হতেই থাকে আর ওষুধ কিনতেই থাকে আর ওরা মুনাফা করতেই থাকে। ১৬-১২-১৯৭১ সালে পূর্ব বাংলা যখন পাকিস্তানের হাত থেকে ভারতের হাতে সমর্পিত হয় তখন বাংলাদেশ হয় ভারতের বাজার। সেই বাজারে পন্য বিক্রি করে ভারতের যেসব পুঁজিপতিরা মুনাফা করেছে তার ভেতর ডাক্তার, হাসপাতাল আর ওষুধ কোম্পানীগূলো রয়েছে তালিকার শীর্ষে।

পূর্ব বাংলার মানুষের মগজে এখন পোত্থিত হয়ে গেছে এই ভাবনা যে ভাল চিকিৎসা মানেই ভারত (যাদের দুর্নীতির টাকা আছে তারা যায় সিঙ্গাপুরে)  তাই কিছু হলেই চিকিৎসা করাতে ভারতে ছুটে। বাংলাদেশের ডাক্তারেরা মৃত শিশুকে অসুস্থ হিসাবে দিনের পর দিন জিইয়ে রেখে মৃতের বাবামায়ের  কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করে। গর্ভবতী নারীর পেটের বাচ্চা মেরে ফেলে বলে পেটে কোন বাচ্চা ছিলনা। ডাক্তারের সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায়। এসবকিছুই ভারতের ভারতের পুঁজিপতিদের জন্য সুখবর আর ভারতের বেকার সমস্যা সমাধানের সহায়ক।

কোন খাবারে আইরণ আছে সেটা বলার আগে বলে নেওয়া ভাল, রক্তশুন্যতা যাদের আছে তারা সাধারণত কেমন বোধ করেনঃ

  • দুর্বল
  • মাথা ঝিমঝিম করে
  • জ্ঞান হারিয়ে যাচ্ছে এমন বোধ হয়
  • চোখে সর্ষের ফুল দ্যাখে
  • শ্বাসকষ্ট হয়
  • ডিপ্রেসন বা বিষন্নতাই ভোগে
  • দেহের চামড়া, দাঁতের মাড়ি, ও নখ ফ্যাকাসে হয়ে যায়
  •  নখ খটমটে হয়ে যায় দাঁত দিয়ে ছিড়তে ইচ্ছা করে
  • বুক ব্যাথা করে
  • হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়
  • হৃদপিন্ডের ভেতর ধুকধুকানির দ্রুততা বৃদ্ধি পায়
  • মনোযোগ হারিয়ে যায়

কি কি খাবার খেতে হবে? ছবি দেওয়া হলো।

সবুজ সাক শব্জি। বিট। লাল মুলা। পালং শাক। লাল শাক। বাঁধাকপি। ব্রকলি।

লাল মটর, মটরসুটি

গমের রুটি আটা না ছেকে

সিদ্ধ চালের ভাত, লাল চালের ভাত, ভাতের পানি বা ফ্যান না গেলে

কেচকি মাছ, চিংড়ীমাছ (পদ্মানদীর হাটু পানিতে গামছা পেতে ধরা যায়)

মুরগী, গরু, ভেড়ার মাংস, কলিজা

দিনরাত সমস্যার কথা বলে লাভ নেই। আর সব সমস্যার সমাধান বড় বড় পুঁজিপতিদের সেফটি ভোল্টে তালামারা থাকেনা। সমস্যার সমাধান আপনার আশেপাশেই আছে। সমস্যা যেখানে সমাধানও সেখানেই থাকে। ভাবতে হবে।

আমার জন্ম হয়েছে রক্তশূন্যতা নিয়ে। আমি যখন স্কুলে একটি দৌড় প্রতিযোগীতাই অংশ নিই সেদিন থেকেই বুঝতে পারি আমি দৌড়াতে পারিনা। দৌড়াবার মত শক্তি আমার নেই। আমি শ্বাস নিতে পারিনা। একটু হাটলেই আমি হাফিয়ে যায়। রোদ লাগলেই আমার বুক ধরফর করে। শীত হলেই আমি হাসপাতালের বাসিন্দা হয়ে যাই। আমি কখনো কলিজা খাইনি। গরুর মাংসও খাইনি। আমি কখনো রক্তদান করতে পারিনা। আমার হিমোগ্লোবিন দরকারের থেকে অনেক নীচে থাকে সবসময়। আমার দুই সন্তান জন্ম নিয়েছে খুব কম সময়ের ব্যাথাতে খুবই স্বাভাবিকভাবে কোন রকম ওষুধ এর প্রভাব ছাড়াই আদম হাওয়ার যুগের স্টাইলে। অনাগত সন্তানের মুখে যাতে খাদ্য তুলে দিতে পারি তা ভেবে আমি কাজের পানে ছুটেছি, ডাক্তারের কাছে ছুটিনি। এই ছুটাছুটির ফলে প্রসব বেদনা দীর্ঘ হয়নি।  আমার ছুটাছুটিতে পেটের ভেতর সন্তানেরাও ব্যায়াম করেছে। আমার কষ্টে কেঁদেছে। আমার খুশীতে হেসেছে। আমার আশাতে আশান্বিত হয়েছে আমার বেদনাতে বেদনাহত। নয় মাসে মায়ের ভেতর যেসব প্রতিক্রিয়া হবে তা গর্ভের সন্তানের উপরে প্রতিফলিত হবে এটাই স্বাভাবিক।

মেডিক্যাল সায়েন্স শিক্ষা নিয়েছে প্রকৃতি থেকে। সাড়া বিশ্বের সকল গবেষনা সকল ওষুধ সকল রাজনীতি সকল মুনাফা সব কিছুই প্রকৃতির শিক্ষা। মানুষ দেখে শিখে, ভেবে শিখে, করে শিখে আর ঠেকে শিখে।

আমি কানাডাতে থাকি। এখানে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারকে ফি দিতে হয়না। তবে ওষুধ কিনতে হয়। আমার বর্ডারলাইন ডায়াবেটিস, হাফানী, রক্তশূন্যতা, বিষন্নতা, একাকীত্ব, জীবনে আমি ১০০% অসফল, আমার যা আছে তা হলো প্রচুর পরিমাণে ঋণ। এত সমস্যার ভেতর এত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভেতর এত শারীরিক ও মানসিক সমস্যা নিয়ে আমি প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা পরিশ্রম করি। আমি আমার সব অসুস্থতাকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হয়েছি আর জীবনের সব অসফলতাকে স্বাভাবিকভাবে নিয়ে নিয়মিত তা মনে করি এবং নিয়মিত নিজেকে সাবাসি দেই এই বলে যে আমি সফল হবার জন্য চেষ্টা করেছি। যা আমার নিয়ন্ত্রনে নয় তা নিয়ে আমি ভাবিনা। আমার প্রচেষ্টাই আমার সফলতা। ভাল থাকার জন্য সৎ প্রচেষ্টা থাকা বাঞ্ছনীয়। জীবন সংক্ষিপ্ত। সংক্ষিপ্ত জীবনে সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন আর অন্যকে ভাল রাখুন।

আয়শা মেহের
সম্পাদিকা
প্রবাসনিউজ২৪
টরেন্টো,কানাডা।

৬ thoughts on “হিমোগ্লোবিন আর আপনি

  1. An impressive share, I just given this onto a colleague who was doing a little analysis on this. And he in fact bought me breakfast because I found it for him.. smile. So let me reword that: Thnx for the treat! But yeah Thnkx for spending the time to discuss this, I feel strongly about it and love reading more on this topic. If possible, as you become expertise, would you mind updating your blog with more details? It is highly helpful for me. Big thumb up for this blog post!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.