জিয়া থেকে খালেদা তারপর – বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল শরিফুল হক ডালিম

৪৪তম পর্ব

হংকং হয়ে বেইজিং

শেষ কিস্তি

ঠিক ১১ টায় উপস্থিত হলেন কমরেড শু শিং কমরেড মাকে সঙ্গে নিয়ে। ঘরে ঢুকে বন্ধুবর মা আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন। পরিচয় পর্বের শেষে কমরেড শু শিং আমাকে উষ্ণ আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে বললেন
আমাদের পরীক্ষিত বন্ধুকে চৈনিক নেতৃবৃন্দের তরফ থেকে স্বাগতম জানাচ্ছি। আপনার সাথে আগে দেখা না হলেও আপনি আমার কাছে অপরিচিত নন। তার এই ছোট্ট মন্তব্যটা অর্থবহ। এরপর আমরা নিজেদের নির্ধারিত আসনে বসলাম। মিটিং শুরু হলো।
পুরনো বিশ্বস্ত বন্ধু হিসাবে আমাদের আলোচনা হবে খোলাখুলিভাবে কোনও রাখঢাক না রেখেই, এতে আপনার কোনও আপত্তি নেইতো?
এক্সেলেন্সি, আপনার এই ধরনের প্রস্তাবনা শুধু প্রশংসনীয়ই নয়, হৃদয়স্পর্শীও বটে।
আপনার এবারের সফরের লক্ষ এবং এজেন্ডা নিয়ে যথাযথ আলোচনার পর চীন সরকারের সিদ্ধান্তটা আপনাকে জানিয়ে দেবার দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়েছে। সেটা জানানোর আগে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক কিছু কথা আমি বলতে চাই।

চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে সুপ্রাচীন। বহু যুগ আগে শ্রী অতীশ দীপংকর নামের এক বৌদ্ধ ভিক্ষু প্রাচীন বঙ্গ থেকে চীনে এসে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার শুরু করেন। এই ধর্মের বাণীকে গ্রহণ করে লক্ষকোটি চীনাবাসী। এরপর ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য ২৯ জন ধর্ম প্রচারককে চীনে পাঠিয়েছিলেন হযরত শাহজালাল(রঃ) আদিবঙ্গ থেকেই। ইসলাম ধর্মের জীবন দর্শন এবং মূল্যবোধে আকৃষ্ট হয়ে এদেশের কোটি কোটি মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে মুসলমান হয়েছিলো। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪০ কোটিরও বেশি চীনের বিভিন্ন প্রদেশের নারী-পুরুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলো।
শ্রী অতীশ দীপংকরের দেহাবশেষ অতি শ্রদ্ধার সাথেই তিব্বতের পোতলা প্যালেস-এ সংরক্ষিত রাখা হয়েছিলো।
বর্তমানের বাংলাদেশকে গণচীন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫-এর সফল বৈপ্লবিক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরই স্বীকৃতি প্রদান করে। এরপর বাংলাদেশের সরকারের অনুরোধে জেনারেল জিয়ার শাসনকালে সেই সংরক্ষিত দেহাবশেষ বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
এই বিষয়ে আপনিও অবদান রেখেছেন। ২৯ জন মুসলিম প্রচারকের সমাধিগুলো ক্যান্টনের মসজিদের পরিসীমার মধ্যে সুরক্ষিত রয়েছে সেটা আপনি স্বচক্ষে পরিদর্শন করেছেন।
বেইজিং-এ অবস্থান কালে আপনার উদ্দগে বেইজিং-এ অবস্থিত সব মুসলিম দেশগুলোর দূতাবাসের কূটনীতিকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধি দল চৈনিক কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করে প্রস্তাব করেছিলেন, বেইজিং-এর জামে মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে নামাজ আদায়ের অনুমতি প্রদান এবং নামাজের জন্য আজান দেবার রীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে।
আপনাদের সেই প্রস্তাব গণচীন সরকার মেনে নিয়ে সবরকম কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলো আপনার বেইজিং এ থাকাকালীন সময়েই। এই মহৎ উদ্দগের পেছনে আপনার ব্যক্তিগত অবদান কতটুকু সেটাও আমাদের অজানা নয়।
প্রকৃত বন্ধুত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করে গণচীন।
যথা, একে অপরের প্রতি সমতা ভিত্তিক আচরণ, ধর্মীয় বিশাস, মূল্যবোধ, জীবনধারা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। এ ছাড়াও বন্ধুত্বের সম্পর্ককে দৃঢ় ভিত্তির উপর গড়ে তোলার জন্য তিন পর্যায়ে বন্ধুত্বের শেকড় প্রোথিত করা অত্যন্ত আবশ্যকীয়।
প্রথমতঃ জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক।
দ্বিতীয়তঃ সমমনা রাজনৈতিক দল, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিজ্ঞজন এবং বুদ্ধিজীবীদের সাথে সম্পর্ক।
তৃতীয়তঃ সরকারের সাথে সম্পর্ক।

চার হাজার বছরের বেশি সময়ের চৈনিক জাতির সুরক্ষিত লিখিত ইতিহাস আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়।
এই তিন পর্যায়ে বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সমপরিমাণ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন চৈনিক নেতৃবৃন্দ। বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই নীতি মেনে চলেছে গণচীন। সরকারের রদবদলে এই মৌলিক নীতিতে হেরফের হয় না কখনোই।
ঐতিহাসিক ভাবে প্রমাণিত, চীন সম্প্রসারণবাদে বিশ্বাসী নয়। বৈদেশিক সম্পর্ক, বিশেষ করে বন্ধুপ্রতিম কোনও রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সরকার বদল বা অন্য যেকোনো কারণে কোনরূপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সেই প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে কি করে আনা সম্ভব সেই প্রজ্ঞাও আমরা রপ্ত করেছি আমাদের ইতিহাস থেকেই।
পাকিস্তানে যখন কম্যুনিস্ট পার্টির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তখনও চীন তার নীতিতে অটল থেকে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে চলে।
‘৬৯-এর গণ অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থা জটিল হয়ে ওঠে। বিশেষ করে মুজিবের অসহযোগের ডাক দেবার পর সেই জটিলতা আরও ঘনীভূত হয়।

সেই সংকট কালে জনাব জুলফিকার আলি ভুট্টো সামরিক জান্তা প্রধান প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের বিশেষ দূত হিসাবে এক প্রতিনিধি দলের নেতা হয়ে গণচীনে এসেছিলেন পাকিস্তানের চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা করার জন্য। বৈঠকে তিনি রাজনৈতিক সংকটের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বলেছিলেন
পূর্ব পাকিস্তানের একছত্র নেতা শেখ মুজিবর রহমান এবং তার দল আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক এজেন্ডা হচ্ছে মূলত বিচ্ছিন্নতাবাদ, আর এইএজেন্ডা বাস্তবায়নে ইন্ধন যোগাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারত।
এই বাস্তবতায় রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বজায় রাখার স্বার্থে দেশের সামরিক জান্তা এবং পাকিস্তানের অন্যান্য দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্য হয়েছে,
যেকোনো পদক্ষেপের মাধ্যমেই হউক না কেনও বর্তমানের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান করে দেশের অখণ্ডতা বজায় রাখতে হবে। সমস্যা মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে সোভিয়েত সমর্থিত ভারতীয় যেকোনো প্রকার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বন্ধুপ্রতিম দেশ গণচীন পাশে থাকবে এটাই পাকিস্তান সরকারের প্রত্যাশা। এ বিষয়ে চীনা নেতৃবৃন্দের পূর্ণ সমর্থনের অঙ্গীকার নিয়ে ফিরে যেতে চান জনাব ভুট্টো।
তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অভিমত তাকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছিলো। আমাদের তরফ থেকে তাকে বলা হয়
পাকিস্তানকে বন্ধুরাষ্ট্র হিসাবেই গণ্য করে গণচীন। বিধায়, পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে গণচীনও উদ্বিগ্ন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে উপমহাদেশকে খণ্ডিত করে পাকিস্তান আর হিন্দুস্তান নামের দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ভারত ছাড়তে বাধ্য হয়। কিন্তু জন্মলগ্ন থেকেই হিন্দুস্তানের কর্ণধারেরা ভারতমাতার এই বিভক্তি মেনে নিতে পারেনি। আজ অবধি সেটা স্পষ্টভাবে লিখিত হয়ে আছে ‘নেহরু ডক্ট্রিন’-এরপাতায়। তাই যে কোনও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে পাকিস্তানের অস্তিত্ব বিলীন করায় ব্রতী হবে ভারত, এটা একটা বাস্তবতা। এই বিষয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। তবে দুঃখজনক হলেও আমরা মনে করি, বহুজাতিক রাষ্ট্র পাকিস্তানে জাতীয়তাবাদ দৃঢ় ভিত্তির উপর গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন সামন্তবাদী এবং মুৎসুদ্দি শ্রেণীর প্রতিভূ বেসামরিক-সামরিক শাসকগোষ্ঠী যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়ে আছেন জন্মলগ্ন থেকে বিগত ২৫ বছর ধরে।
অপশাসন, শোষণ, বঞ্চনা এবং আর্থ-সামাজিক বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠার ফলেই জাতীয়তাবাদ দুর্বল হয়ে পড়ে, আর আঞ্চলিকতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদ সমাজে শিকড় গাড়ে। এ দু’টি সর্বনাশা আলামত কম-বেশি পাকিস্তানের প্রায় সব কয়টি প্রদেশেই বিরাজমান। বর্তমানের সংকট হচ্ছে কেন্দ্রের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত দ্বন্দ্বগুলোর রাজনৈতিক বহিঃপ্রকাশ। বন্ধুরাষ্ট্র পাকিস্তানের স্বার্থেই আমাদের অভিমত হচ্ছে, পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান সমস্যাটা সার্বিক বিবেচনায় একটি রাজনৈতিক সমস্যা হিসাবে গ্রহণ করতে হবে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীকে এবং রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান একমাত্র রাজনৈতিক ভাবেই বের করার উদ্দগ নিতে হবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের আশা-প্রত্যাশার আলোকে। অস্ত্রবলে বর্তমান সংকটের সমাধান করার যেকোনো প্রয়াস হবে আত্মঘাতী। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের সময় এখনও পেরিয়ে যায়নি।
আমাদের অভিমত শুনে ফিরে গিয়ে জনাব ভুট্টো জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে আমাদের বক্তব্যের ঠিক উল্টোটাই বলেছিলেন। তিনি তাকে বুঝিয়েছিলেন
অভ্যন্তরীণ অরাজকতা এবং অস্থিতিশীলতার হাত থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে বাঁচানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যদি কঠিন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তবে তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাবে গণচীন সরকার। শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেন, কঠিন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত যদি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে সেই সময় গণচীন পাকিস্তানের স্বার্থরক্ষার জন্য প্রয়োজনে ভারতের বিরুদ্ধ্বে যুদ্ধ করতেও প্রস্তুত থাকবে সেই অঙ্গীকারও আদায় করে ফিরেছেন তিনি।
এ ধরনের মিথ্যাচার কোনও জাতীয় পর্যায়ের নেতার পক্ষে করা সম্ভব এমন দৃষ্টান্ত ইতিহাসে বিরল।
ভুট্টোর এহেন মিথ্যাচারে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও তার সামরিক জান্তা রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সামরিক শ্বেত-সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরসন করার জন্য বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠেন। তারা ভেবেছিলেন,
পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালালে যদি সেই সুযোগে রুশ-ভারত অক্ষশক্তি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয় সেই ক্ষেত্রে গণচীন সহ আমেরিকা, তাদের দোসর ইউরোপীয় শক্তিগুলো এবং সারা মুসলিম জাহান পাকিস্তানের পক্ষে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে। এই ধরনের সমীকরণের যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয় ঘটবে রুশ-ভারত অক্ষশক্তির। পরাজিত এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ভারতকে খণ্ডিত করে কাশ্মীর দখলসহ ভারতীয় ইউনিয়নকে খণ্ডিত করে এর বিলুপ্তি ঘটানো যাবে। এতে চাণক্যদের ‘অখণ্ড ভারত’ পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন চিরতরে নস্যাৎ করাও সম্ভব হবে। একই সাথে পাকিস্তান বিশ্বপরিসরে স্বীকৃতি লাভ করবে দক্ষিণ এশিয়ার একচ্ছত্র আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে।
এ ধরনের চিন্তা-ভাবনাকে দিবাস্বপ্নই বলা চলে!

জনাব জুলফিকার আলি ভুট্টো সম্পর্কে চৈনিক নেতৃবৃন্দের একজন ক্ষমতাধর প্রবীণ নেতার বিবরণ শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম!
কেনও এই প্রসঙ্গে এত বিশদভাবে ব্যাখ্যা করলেন ক্ষুরধার বুদ্ধির অধিকারী ক্ষমতাধর প্রবীণ এই নেতা! কারণটা সুস্পষ্ট।
‘৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে গণচীনের ভূমিকা সম্পর্কে অনেক মিথ্যা অপ-প্রচার চালানো হয়েছে আওয়ামী-বাকশালী আমলে এবং যুদ্ধকালীন সময় থেকেই। ঐ সমস্ত বিরূপ প্রচারণা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে সক্ষমও হয়েছে। সেই বিভ্রান্তি দূর করার প্রয়াসেই এই প্রসঙ্গটা তুলেছিলেন কমরেড শু শিং চৈনিক নেতৃবৃন্দের তরফ থেকে।
এরপর খালেদা জিয়ার চীন সফর এবং তার এজেন্ডা সম্পর্কে ফিরে এলেন কমরেড শু শিং। তিনি জানালেন
খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাষ্ট্রীয় সফরের নিমন্ত্রণ জানাবার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তিনি নিজের সুবিধা মতো যেকোনো দিন চীন সফরে আসতে পারেন। দিনক্ষণ ঠিক করে ঢাকায় অবস্থানকারী রাষ্ট্রদূতকে জানালেই রাষ্ট্রীয় সফরের সব আয়োজন করা হবে এই প্রান্তে। এজেন্ডা সম্পর্কে তিনি জানালেন,
সফরকালে খালেদা জিয়াকে এজেন্ডার বিষয়গুলো সম্পর্কে ইতিবাচক সিদ্ধান্তই জানানো হবে চীন সরকারের পক্ষ থেকে। এভাবেই মিটিং শেষে মধ্যাহ্ন ভোজের নিমন্ত্রণ জানিয়ে চলে গেলেন লং মার্চ ভেটারান কমরেড শু শিং বন্ধু মা-কে সঙ্গে নিয়ে। উ-কে সঙ্গে নিয়ে আমার ঘরে ফিরে এলাম আমি।

কিছুটা টেনশনে ছিলাম, কিন্তু বৈঠক সফল হওয়ায় সব টেনশন কেটে গেলো। রিল্যাক্সড মুডে বসলাম দুই বন্ধু। আমি দুইটি কাপে জেসমিন সবুজ চা ঢেলে একটি কাপ উ-র হাতে তুলে দিয়ে নিজেরটা হাতে নিয়ে বসলাম মুখোমুখি।
উ হঠাৎবলে উঠলো
প্রিয়বন্ধু, তুমি জানো না, আমরা সবাই তোমাকে কতটুকু ভালোবাসি আর শ্রদ্ধা করি। কারণটা কি শুনবে কেনও?
কেনও?
সারা বিশ্বের প্রতিপ্রান্তে আমাদের অনেক বন্ধু ছড়িয়ে আছে।
কিন্তু তুমি তাদেরই একজন হয়েও কিছুটা ভিন্ন। তোমার মধ্যে আমরা খুঁজে পেয়েছি কিছু দুর্লভ বৈশিষ্ট্য। তুমি একজন নিঃস্বার্থ জনদরদী সাচ্চা দেশপ্রেমিক। তোমার রাজনৈতিক সচেতনতা, দূরদর্শী বিচক্ষণতা এবং বর্তমান বিশ্বের চলমান ধারা সম্পর্কে জ্ঞানের পরিধি বিস্ময়কর! তুমি স্পষ্টবাদী, নির্ভীক এক সত্য সন্ধানী। জাগতিক সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে তুমি এক বিরল ব্যক্তিত্ব। বৃহত্তর মানবতার স্বার্থে নিবেদিতপ্রাণ এক যোদ্ধা তুমি।
জেসমিন টি পান করতে করতে অতি আন্তরিকতার সাথেই কথাগুলো বলছিল পুরনো বন্ধু উ। আমি নিঃশব্দে চা পান করছিলাম আর তার বক্তব্য শুনছিলাম।

পয়গাম নিয়ে হাসি মুখে তরুণী পরিচারিকা এসে জানাল খাবারের সময় হয়েছে। আমাদের পথ দেখিয়ে খাবারের ঘরে নিয়ে গেলো পরিচারিকা।
ঘরে প্রবেশ করার দরজায় দেখি কমরেড শু শিং এবং কমরেড মা আমাদের স্বাগত জানাবার জন্য দাঁড়িয়ে। তাদের পেছনে দাড়িয়ে আছে PLA এর পুরনো বন্ধু কমিসার কমরেড ফু এবং উর্দি পরিহিত সুদর্শন যুবক কমরেড হং
আমি যখন বেইজিং-এ ছিলাম তখন হং PLA এর Foreign Relation Department এ দোভাষীর দায়িত্ব পালন করতো উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে। তার কাঁধে দেখলাম ফুল কর্নেলের ব্যাজ। উ জানালো, ইতিমধ্যে হং বাংলাদেশ সফর করে এসেছে। আমি এসেছি জানতে পেরে ফু এবং হং তাদের পুরনো বন্ধুর সাথে মিলিত হবার ইচ্ছা প্রকাশ করায় তাদেরকেও আজকের মধ্যাহ্ন ভোজে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। নিখুঁতভাবে সাজানো রিভলভিং গোল টেবিল। প্রতিটি নির্ধারিত চেয়ারের সামনে মেনুর সাথে নামের কার্ড। সবাই যার যার আসনে বসে পড়লাম। মেনুটা হাতে নিয়ে চোখ বুলিয়েই বুঝতে পারলাম বিখ্যাত ‘পিকিং ডাক’ ভিত্তিক খাবার পরিবেশিত হবে।
এই খাবারের বৈশিষ্ট হলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কয়টি ব্যঞ্জন তৈরি করা হবে পিকিং ডাকের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে। খাবার পরিবেশনার অনুমতি নিয়ে প্রশিক্ষিত চৌকস পরিচারিকারা হসিমুখে পরিচর্যা এবং পরিবেশনায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। খাবারের সাথে টুকটাক কথাবার্তা এবং রসিকতাও চলছিলো। এক সময় কমরেড শু শিং বললেন
যদিও তোমার একান্ত সাথী এবং সহযোদ্ধাদের কারও সাথেই আমাদের তেমন ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলার সুযোগ হয়নি তবে তাদের প্রতিও আমাদের যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে। আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি,
পংকিলতার মাঝেও পদ্মফুল যেভাবে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে ঠিক তেমনি সত্যিও সব অপচেষ্টা বাধা-বিপত্তি উৎরে দেশবাসীর কাছে উন্মোচিত হবেই একদিন। আর তখনই তোমার মতো নেতাদের জনগণ খুঁজে নেবে জাতীয়মুক্তিসংগ্রামে নেতৃত্ব দান করার জন্য। আমরাও সেই দিনটির অপেক্ষায় থাকবো। আত্মবিশ্বাস আর দৃঢ় প্রত্যয়ী হয়ে ধৈর্য ধরে থাকো বন্ধু, ডাক একদিন আসবেই।
কমরেড, আপনি বর্ষীয়ান অভিজ্ঞ একজন নেতা। আপনার মতো একজন বিচক্ষণ এবং প্রাজ্ঞ নেতার মূল্যায়ন আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। জেনে রাখুন শ্রদ্ধেয় কমরেড, জীবদ্দশায় সেই ডাক যদি নাও আসে তবুও আমাদের লাখো শহীদ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের ইতিকথা রেখে যাবো বর্তমান আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, যাতে সেই স্বপ্নকে একদিন তারা বাংলাদেশেবাস্তবে পরিণত করতে সক্ষম হয়। কাজটি দুষ্কর হলেও অসম্ভব নয়, সেই শিক্ষাই গণচীনের ইতিহাস থেকে আমি পেয়েছি।
প্রথা অনুযায়ী খাওয়া শেষে হোস্ট কমরেড শু শিং চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন ছোট্ট করে তার বক্তব্য পেশ করার জন্য।
বন্ধুবর হকের সম্মানে আয়োজিত আজকের ভোজসভায় উপস্থিত সবাইকেঅভিনন্দন জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শুরু করছি।
তিনি উপস্থিত সবার কাছেই বিশেষভাবে পরিচিত। তার নিজ দেশে তিনি একজন বহুল পরিচিত বিপ্লবী নেতা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাই শুধু নন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে জোরদার করার জন্য নিবেদিতপ্রাণ বিশ্বস্ত কর্মীও বটে। এর স্বাক্ষর চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ইতিহাস বহন করবে।
তিনি এবার দেশের নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ দূত হিসাবে এক গোপন সফরে এসেছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য এবং এজেন্ডা নিয়ে। আজ আমরা সবাই খুশি, আমাদের পরমবন্ধু আজই ফিরে যাচ্ছেন সফলতা অর্জন করে। ভবিষ্যতে তিনি এবং তার সাথী ভাইরা জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আরও বড় অবদান রাখবেন সেই প্রত্যাশায় তার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আমি উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি এক টোষ্টে আমার সাথে যোগদান করুন। তার কথা শেষে সবাই পানীয়র গ্লাস হাতে উঠে দাড়ালেন, আমিও তাই করলাম। কমরেড শু উচ্চস্বরে বলে উঠলেন, ‘কাম্বে’ এবং গ্লাসটা খালি করলেন, আমরা সবাই তাঁর অনুকরণ করলাম।
এবার গেস্ট অফ অনার হিসাবে তার বক্তব্যের জবাবে আমাকে কিছু বলতে হবে তাই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম।
মাননীয় কমরেড শু শিং এবং উপস্থিত বন্ধুগণ, অনেকদিন পর আপনাদের সাথে মিলিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। কমরেড শু, আপনি গণচীনের একজন বর্ষীয়ান অভিজ্ঞ এবং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়েও আমার মতো একজন অতি সাধারণ ব্যক্তির জন্য আজকের এই ভোজসভার আয়োজন করে আমাকে যে সম্মান প্রদর্শন করলেন সেটা আমার মনে থাকবে চিরদিন।আজকের ভোজসভায় এমন কয়েকজন পুরনো বন্ধুদের একত্রিত করেছেন যাদের মুখচ্ছবি চীন ছেড়ে যাবার পরও আমার স্মৃতির পর্দায় জাগরূক হয়ে আছে। এর জন্য আপনাকে বিশেষভাবে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মাননীয় কমরেড বলেছেন,
আজ আমি সফলতার সাথে ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু আমি জানি, এই সফলতা অর্জনের পেছনে আমার বন্ধুদের প্রচেষ্টাটাই মুখ্য। তাঁদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ছাড়া এই সাফল্য আমার একক প্রচেষ্টায় কিছুতেই অর্জন করা সম্ভব হতো না। তাই কমরেড শু শিং-এর সাথে আমি বন্ধুদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে একটি টোস্টে আপনাদের সবাইকে যোগদান করার আবেদন জানাচ্ছি, এরপর ‘কাম্বে’ বলে পানীয়র গ্লাসটি খালি করলাম। সাথে সবাই আমার অনুকরণ করলো। ভোজসভা শেষ হলো। এরপর কমরেড শু শিং সহ সবাই একে একে চলে গেলেন।
কমরেড মা উর কাছ থেকে জানতে চাইলেন
ফিরতি যাত্রার সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে কিনা।
হ্যাঁ, অপরাহ্ণের একটি ফ্লাইটে ফিরে যাবেন হক। হংকং-এ রাত্রি যাপনের সব ব্যবস্থা করে ফেলেছেন কমরেড লাম। আগামীকালই তার দেশে ফেরার সব ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সময় মতো আমি নিজেই তাঁকে এয়ারপোর্টে বিদায় জানিয়ে আসবো।
অতি উত্তম। এরপর মা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো
বন্ধু, বিশেষ জরুরী কিছু কাজে আটকে পড়ায় আমি এয়ারপোর্টে তোমাকে বিদায় জানাতে যেতে পারছি না। তবে তাতে তোমার কোনও অসুবিধে হবে না। কমরেড উ তো রয়েছেই। তোমার, আমাদের প্রিয় ভাবী নিম্মি এবং সস্তির জন্য সামান্য কিছু উপহার তোমার ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন কমরেড শু শিং আমাদের তরফ থেকে। তাদের আমাদের আশির্বাদ ও শুভেচ্ছা জানাবে। পরের বার ওদের অবশ্যই সাথে নিয়ে আসবে। তুমি ভাল থেকো, আসি এবার। আমি সবকিছুর জন্য তাকে কৃতজ্ঞতা জানালাম। জড়িয়ে ধরে পিঠ চাপড়ে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন মা। যাবার আগে ফিসফিসিয়ে জানিয়ে গেলেন চোখ টিপে, এজেন্ডার সব কয়টি প্রস্তাবই অনুমোদিত হয়েছে অর্থের সংকুলান সহ।

ঘরে ফিরলাম উকে সঙ্গে নিয়ে। লিন্ডাকে ফোন করে জানালাম বিকেলে ফিরছি। আজ রাতটাই হাতে আছে, কাল ঢাকার পথে রওনা হতে হবে। তাই সম্ভব হলে বন্ধু-বান্ধবদের যাদেরকেই পাওয়া যায় তাদের জড়ো করতে পারলে মিলন মেলাটা বসাতে পারো কান্ট্রি ক্লাবে। আমি পেনিনসুলাতেই থাকবো। পৌঁছেই তোমার সাথে যোগাযোগ করবো।

সূচীপত্র  [প্রতিটি পর্বে্র নীচে ক্লিক করলেই সেই পর্বটি পাঠ করতে পারবেন]

১ম পর্ব   “জিয়া থেকে খালেদা তারপর” – লেখকের কথা

২য় পর্ব  শ্রদ্ধেয় মওলানা ভাসানীর সাথে শেষ সাক্ষাত

৩য় পর্ব দ্বিজাতি তত্ত্ব

৪র্থ পর্ব –  কিছু বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারের জবাব

৫ম পর্ব – সত্য কহন

৬ষ্ঠ পর্ব – ব্যাংককে আমরা

৭ম পর্ব – বঙ্গভবনে কি হচ্ছিল রাত ১২ টায়!

৮ম পর্ব – বন্দীত্ব থেকে মুক্ত করা হলো জেনারেল জিয়াকে

৯বম পর্ব – “সংঘর্ষের পথে জিয়া”

১০ম পর্ব – খন্দকার মোশতাকের বিশেষ দূত হিসেবে এলেন সাদ্রে ইস্পাহানী

১১তম পর্ব – শিশু ভাই এলেন ব্যাংককে

১২তম পর্ব  – নিজেদের আলোচনা

১৩তম পর্ব  ১ম কিস্তি   – রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৩তম পর্ব – ২য় কিস্তি- রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৪তম পর্ব –  বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জমির এলেন সস্ত্রীক

১৫তম পর্ব – এভিএম তোয়াব আসছেন

১৬তম পর্ব  –  শিশুভাইকে বেনগাজীতে আসার অনুরোধ

১৭তম পর্ব  –  ১ম কিস্তি – জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে

১৭তম পর্ব – ২য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  ৩য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  শেষ কিস্তি

১৮তম পর্ব –  বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস

১৯তম পর্ব –  জেনারেল মনজুরের সাথে বৈঠক

২০তম পর্ব – লন্ডন হয়ে ফিরলাম বেনগাজীতে

২১তম পর্ব – ঢাকা হোয়ে পিকিং-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা

২২তম পর্ব – বাংলাদেশে নীতি বিবর্জিত কুটুম্বিতার রাজনীতির রূপ

২৩তম পর্ব –  জিয়ার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে

২৪তম পর্ব –  রাষ্ট্রপতি হিসাবে জিয়ার গণচীনে দ্বিতীয় সফর

২৫তম পর্ব  –  আব্বার উপস্থিতিতে প্রথম রাতে জেনারেল জিয়ার সাথে আমার বৈঠক

২৬তম পর্ব – দ্বিতীয় বৈঠক

২৭তম পর্ব – জিয়ার নিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের চীন সফর

২৮তম পর্ব – চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসার পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার প্রতিক্রিয়া

২৯তম পর্ব  –  চীন থেকে লন্ডনে নির্বাসন কালে

৩০তম পর্ব  –  জেনারেল মঞ্জুরের ব্যর্থ অভ্যুত্থান, জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখল

৩১তম পর্ব  – নিউইয়র্কের পথে জেনারেল এরশাদের সাথে লন্ডনে সাক্ষাৎ

৩২তম পর্ব – খালেদা জিয়া হলেন বিএনপির চেয়ার পার্সন

৩৩তম পর্ব – জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় রশিদ-ফারুক বানালো ফ্রিডম পার্টি

৩৪তম পর্ব – ১ম কিস্তি – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ-শেষ কিস্তি

৩৫তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান – ১ম কিস্তি

৩৬তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান  – শেষ কিস্তি পেশাওয়ারের পথে

৩৭তম পর্ব – ফিরে এলাম নাইরোবিতে

৩৮তম পর্ব – নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে যাত্রা 

৩৯তম পর্ব – ঢাকায় পৌঁছালাম

৪০তম পর্ব –  ১ম কিস্তি – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ – ২য় কিস্তি

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ- শেষ কিস্তি

৪১তম পর্ব – রুহানী জগতের আর এক সূফি সাধকের সান্নিধ্যে

৪২তম পর্ব – আমাকে আবার খালেদা জিয়ার জরুরী তলব

৪৩তম পর্ব – ব্যাংকক ট্রানজিট লাউঞ্জে

৪৪তম পর্ব – হংকং হয়ে বেইজিং – ১ম কিস্তি

৪৪তম পর্ব –  হংকং হয়ে বেইজিং – শেষ কিস্তি

৪৫তম পর্ব – হংকং হয়ে ফিরলাম ঢাকায়

৪৬তম পর্ব – গোপনে আমেরিকা সফর

৪৭তম পর্ব – আবার ঢাকায়

৪৮তম পর্ব – নাইরোবিতে প্রত্যাবর্তন

৪৯তম পর্ব – দেশে ফিরলাম

৫০তম পর্ব – নিরুদ্দেশে যাত্রা

৫১তম পর্ব – ২৮শে জানুয়ারি ২০১০ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ

৫২তম পর্ব – দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়াতের
প্রতিক্রিয়া

৫২তম পর্ব -দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়েতের
প্রতিক্রিয়া  –  শেষ কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – ১ম কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – শেষ কিস্তি

৫৪ তম পর্ব – শেষকথা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *