জিয়া থেকে খালেদা তারপর – বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল শরিফুল হক ডালিম

৪২তম পর্ব

আমাকে আবার খালেদা জিয়ার জরুরী তলব

বাসায় ঢুকতেই মোস্তাফিজ কাকু যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। আমাকে বললেন
দুপুর থেকেই কামাল ঘনঘন ফোন করছে, প্রধানমন্ত্রী বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে তোমার সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছেন। কামাল জানতে চাইছে তুমি কোথায় এবং তোমার সাথে কি করে যোগাযোগ সম্ভব।
আমি বলেছি তুমি তোমার বন্ধুকে চেনো না? ও কি কাউকে কিছু বলে কোথায় যায়, কার সাথে দেখা করে, কি করে? ওরা সকালেই বেরিয়ে গেছে, আমি দুপুরে ফিরেছি অফিস থেকে। বাসার কেউ জানে না ওরা কোথায় গেছে। তোমার ফুপ্পুও গেছেন সাথে। এরপর থেকে তুমি ফিরলে কিনা সেটা জানার জন্য বারবার ফোন আসছে। তার বক্তব্য শেষ না হতেই আবার ফোন বেজে উঠলো। কাকু বললেন
ঐ যে আবার ফোন এসেছে।
আমিই ফোন ধরলাম, কামাল অপর প্রান্তে।
আশ্চর্য! কোথায় উধাও হয়ে গিয়ে এতো দেরিতে ফিরলি?
এই বিষয় বাদ দিয়ে বল, কেনো গো খোঁজা খুঁজছিস?
জরুরী ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী তোর সাথে সুগন্ধায় দেখা করতে সারাদিন অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্ত সারাদিন তোর হদিস পাইনি। এখনি চলে আয়।
কামাল, তোদের সুগন্ধার গন্ধটা আমার ঠিক সহ্য হয় না। সেটা আমি আগেই ব্যক্ত করেছি। তাছাড়া একটা দাওয়াতেও যেতে হবে আমাকে আর নিম্মিকে।
আমাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই কামাল বলে উঠলো
শিলাবৃষ্টির কারণে এখন কোনও ভিড় নেই, আমি গাড়ী পাঠাচ্ছি, তুই চলে আয়। ছোট্ট মিটিং, তাই তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে পারবি।
চাকুরি যখন করছি তখন হুকুম তো মানতেই হবে! ঠিক আছে গাড়ী পাঠিয়ে দে মিনুফুপ্পুর বাসায়, আমি আসছি।
সবাই শুনছিলো আমাদের বাক্যালাপ।
আমি তৈরি হয়ে নিলাম। গাড়ী পৌছে গেছে। সুগন্ধায় কামালের অফিসে ঢুকে দেখি কামাল আর সাব্বি একসাথে বসে আমার অপেক্ষায়। কামাল ও সাব্বি আমাকে একটা ছোট বসার ঘরে নিয়ে গেলো। ঘরটি ছিমছাম করে সাজানো। দুটো সিঙ্গেল সোফার মাঝখানে সাইড টেবিলে ম্যাচিং টেবিল ল্যাম্প ও ফুলদানি। দু’পাশে কয়েকটি ভিক্টোরিয়ান চেয়ার এবং সাইড টেবিল। দেয়ালে রুচিসম্পন্ন পেইন্টিংস।
আচ্ছা কামাল, এভাবে জরুরী তলব করে পাঠালেন কেনোও তোদের ম্যাডাম?
সেটা তিনি নিজেই বলবেন।
আলাপ কি শুধু আমার সাথে একাই হবে?
না, আমি থাকবো, পরে প্রয়োজনে ফরেন মিনিস্টারকেও ডেকে পাঠানো হতে পারে।
বুঝলাম, কিন্তু যদি মুস্তাফিজুর রহমানকে ডাকতেই হয় তাহলে তিনি বসবেন কোথায়?
সাব্বি জবাবটা দিলো
ডালিম ভাই, এই বিশেষ মিটিং রুমে ম্যাডামের পাশে সোফাতে কোনো মন্ত্রী বা আমলার বসার নিয়ম নেই। সোফায় বসেন শুধু অভ্যাগত অতিথি।
কামাল, তোরা আমাকে চাকুরিচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছিস নাতো?
দু’জনই হেসে উঠলো আমার কথা শুনে। কামাল সাব্বিকে বললো ম্যাডামকে নিয়ে আসতে।
এলেন খালেদা জিয়া। সালাম বিনিময় করলাম। তিনি একটা সোফায় বসে পাশের সোফাটায় আমাকে বসতে বললেন। কামাল নোট প্যাড হাতে বসলো তার জন্য নির্ধারিত চেয়ারে।
কেমন আছেন, কোথায় ছিলেন সারাদিন?
শহর থেকে দূরে, সন্ধ্যায় ফিরেছি।
বিশেষ একটা প্রয়োজনে আবার আপনাকে ডেকে পাঠাতে হলো।
আমি একজন সরকারী চাকুরে। আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, আপনি অবশ্যই যেকোনো সময় অবশ্যই ডেকে পাঠাতে পারেন। অনুগ্রহ করে বলুন, আমি আপনার জন্য কি করতে পারি?
ইতিমধ্যেই চা-নাস্তা পরিবেশিত হয়েছে। আমার জবাবে কিছুটা বিব্রত হয়ে চা পরিবেশনার আড়ালে কি যেনো ভেবে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। জিজ্ঞেস করলেন-কতো চামচ চিনি?
বললাম, এক।
তিনি একটি পেয়ালাতে চা বানিয়ে আমার হাতে তুলে দিলেন। তিনি তখনও ভাবছেন।
ভাই, আমি এক মহাসঙ্কটে পড়েছি। নওয়াজ শরিফ আপনার সামনেই আমাকে দাওয়াত করেছেন পাকিস্তান সফরের। তার আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসাবে সে দেশের পররাষ্ট্র সচিব স্বয়ং এসে আমাকে নিমন্ত্রণ করে গেছেন। রাজনৈতিক কারণেই এই দুই দেশের কোনও একটা দিয়েই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার রাষ্ট্রীয় সফর শুরু হউক সেটা আমি চাই না। আমি তৃতীয় কোনও দেশ দিয়ে আমার রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করতে চাই।
বুঝলাম। সে ক্ষেত্রে আপনার পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে বলুন যেকোনো বন্ধুরাষ্ট্র থেকে আপনার জন্য একটা রাষ্ট্রীয় সফরের নিমন্ত্রণ যোগাড় করে ফেলতে। বলা হয়, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া SAARC-এর স্বপ্নদ্রষ্টা। বলা হয়ে থাকে OIC-এর তরফ থেকে ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধ করার চেষ্টায় দূতিয়ালি করার সময় অনেক মুসলিম দেশের রাষ্ট্র কিংবা সরকার প্রধানদের সাথেও নাকি তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। উপরন্তু দেশবাসীকে অহরহ জানান দেয়া হচ্ছে, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের বুনিয়াদও জেনারেল জিয়াই স্থাপন করেছেন।
সেই প্রেক্ষাপটে তার সহধর্মিণী এবং বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সৌদি আরব, চীনে কিংবা অন্য যেকোনো দেশে একটা রাষ্ট্রীয় সফরের ব্যবস্থা করাটা খুব একটা কঠিন সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।
চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু কোনও দেশ থেকেই তেমন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। আমেরিকান রাষ্ট্রদূত তো বলেই দিলেন যেকোনো তৃতীয় বিশ্বের সরকার প্রধানের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় সফরের আবেদনের পূর্বশর্ত হচ্ছে, সরকার প্রধানকে ন্যূনতম ২-৩ বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকতে হবে।
তা ঠিক, এটাই সাধারণ মাপকাঠি পশ্চিমা দেশগুলোতে। তবে এর ব্যতিক্রমও হয়ে থাকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের নিরিখে। সৌদি আরবের প্রতিক্রিয়া কি?
তারাও তেমন আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
অস্বাভাবিক নয়। তৃতীয় বিশ্বের যেকোনো দেশে হঠাৎকরে কখন কি ঘটে যায় সেই অনিশ্চয়তার জন্যই সবাই সময় নিতে চায়। বিশেষ কোনও স্বার্থ থাকলে অবশ্য ভিন্ন কথা। বিশেষ করে সৌদি আরব মুসলিম জাহানে আমেরিকার সবচেয়ে নির্ভরশীল ক্রিয়ানক বিধায় প্রতিটি মুসলিম দেশের সাথে তাদের সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের সম্পূরক হয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলোর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয় না।গণচীনের প্রতিক্রিয়া কি?
চীনা রাষ্ট্রদূতের কাছে আবেদন করা হলে তিনি জবাব দিয়েছেন, জরুরী ভিত্তিতে তিনি আবেদনটি বেইজিং-এ পাঠিয়ে দেবেন এবং জবাব এলেই সেটা তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়কে জানিয়ে দেবেন। কিন্তু আজ অবধি কোনও জবাব বেইজিং থেকে আসেনি। এই অবস্থায় আমার অনুরোধ আপনি যদি আমার বিশেষ দূত হয়ে বেইজিং যান, তাহলে হয়তো একটা ফলপ্রসূ ইতিবাচক কিছু করতে পারবেন, এটা আমার আর কামালের দৃঢ় বিশ্বাস।
এই বিশ্বাসের কারণটা বোধগম্য হচ্ছে না।
আমরা জানি, গণচীনের ক্ষমতা বলয়ে অনেকের সাথেই আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব রয়েছে ব্যক্তিগত পর্যায়। তারা আপনাকে বিশ্বস্ত বন্ধু হিসাবেই মনে করেন। সেখানে থাকা কালেই এই সম্পর্ক আপনি গড়ে তুলতে সমর্থ হন।
এটাই যদি যুক্তি হয়, তবে বিনয়ের সাথেই বলছি সেই সম্পর্ক নিতান্তই ব্যক্তিগত। এর সাথে রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণের কোনও সম্পর্ক নেই। কামাল নিজেও বেইজিং-এর দূতাবাসে তিন বছর কাটিয়ে এসেছে ইকনোমিক মিনিস্টার হিসাবে। এখন সে আপনার বিশ্বস্ত মুখ্যসচিব হিসেবে সবচেয়ে ওজনদার প্রভাবশালী আমলা। চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে কামালও সুপরিচিত। তাই আমার মনে হয়, আপনি তাকেই পাঠান। এর অন্য আরেকটি কারণ আছে, সেটা সম্পর্কে আপনি ভালোভাবেই অবগত আছেন।
গণচীনে দ্বিতীয় সফরকালে রাষ্ট্রপতি জিয়া অতীতের সব কিছুকে ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখে এবং ভুলে গিয়ে তার সাথে আবার একত্রে রাজনীতি করার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন সেটা আমাদের পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এই প্রত্যাখ্যান জেনারেল জিয়া মেনে নিতে পারেননি। যার ফলে সরকার উৎখাতের এক ভুয়া ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আমাকে এবং আরও কয়েকজন সহকর্মী যারা বিদেশে কূটনীতিক হিসাবে পোস্টেড ছিলো, তাদের জড়িয়ে তিনি তদানীন্তন DGFI তার কোর্সমেট জেনারেল মহব্বতজান চৌধুরীকে বেইজিং-এ পাঠিয়েছিলেন যাতে চীনা কর্তৃপক্ষের সাহায্যে তিনি আমাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারেন। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে ঐ ষড়যন্ত্রের দায়ে আমরাসহ দেশে অনেককেই চাকুরিচ্যুত করা হয়েছিলো। অনেকের কোর্ট মার্শাল এবং সামারি ট্রায়ালও হয়েছিলো। বিচার ছাড়া কারাবন্দী করে ফেলে রাখা হয়েছিলো অনেককেই।
এই পরিপ্রেক্ষিতে, আমি যদি আপনার বিশেষ দূত হিসাবে ওকালতির জন্য যাই তবে তা অনেক প্রশ্নের জন্ম দেবে। কি বলিস কামাল, আমার কথাগুলো যুক্তিসঙ্গত নয় কি?
হ্যাঁ, যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু এই দায়িত্ব নিয়ে আমি গেলে কিছুই হবে না। বলতে দ্বিধা নেই, যে যাই বলুক না কেনও, চীনা কর্তৃপক্ষের উপর তোর প্রভাব যতটুকু সেটা বর্তমানে বাংলাদেশে অন্য কোনও দ্বিতীয় ব্যক্তির নেই। এই সত্যিটা আমি চীনে অবস্থান কালেই পরিষ্কার বুঝেছি। আমি নিজেও বিশ্বাস করি তুই গেলে অনেক প্রশ্নের জন্ম হবে ঠিকই, কিন্তু তার উপযুক্ত জবাব দেবার যোগ্যতাও তোর আছে।
কামালের বক্তব্যের প্রতি জোর সমর্থন জানিয়ে বেগম জিয়া বলে উঠলেন
এখন পর্যন্ত আপনি যাই করে এসেছেন তা আপনি করেছেন দেশ এবং জাতীয় স্বার্থে। এই কাজটা কিছুটা আমার নিজের স্বার্থে। তাই আপনার মনে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। কিন্তু তারপরও আমি আপনাকে অনুরোধ করছি আপনি একটু চেষ্টা করে দেখুন ভাই।
তার এই আকুল আবেদনে দোটানায় পড়ে কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে বললাম
এতোই যখন চাপ দিচ্ছেন, আমি যাবো। তবে এই সফরের গোপনীয়তাটাও আপনাকে রক্ষা করতে হবে আগের মতোই। আপনার তরফ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে একটা চিঠি লিখে দেবেন। ড্রাফটটা আমিই করে দেবো, মন্ত্রী মহোদয় শুধু সই করে দিবেন। বাকি আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাও তাকেই করতে হবে। ভাবী, একটা কথা বলি যদি কিছু মনে না করেন, কর্নেল মুস্তাফিজুর রহমান জেনারেল জিয়ার কোর্সমেট বিধায় নিশ্চয় আপনার অতি বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন সহকর্মী, তাই না?
এ কথা বলছেন কেন?
না, মানে উনাকেও বলবেন কথাটা যাতে গোপন রাখেন।
অবশ্যই। কামাল, মুস্তাফিজকে ডেকে পাঠাও।
ইন্টারকমে কামাল সাব্বিকে বলতেই মুস্তাফিজ সাহেবকে সাথে নিয়ে ঢুকে ম্যাডামের সামনে তাঁকে দাড় করিয়ে বেরিয়ে গেলো সাব্বি। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আমি একজন রাষ্ট্রদূত। আমি বসে আছি সোফায় আর মন্ত্রী দাঁড়িয়ে আছেন সামনে। দৃশ্যটা দৃষ্টিকটুই নয়, অস্বস্তিকরও বটে। তার উপর বেচারা ডায়াবেটিক। তাই রাত একটু বেশি হয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই ঝিমুচ্ছিলেন।
শোনো মুস্তাফিজ, কর্নেল ডালিম আমার বিশেষ দূত হয়ে গণচীনে যাবেন। তার প্রয়োজন মতো সব বন্দোবস্ত তোমাকেই করতে হবে। তবে বিশেষ গোপনীয়তার সাথে।
জি ম্যাডাম, ঠিক তেমনটিই হবে।
তাহলে আজ রাতেই মুস্তাফিজের সাথে বসে আপনি সব ব্যবস্থা ঠিক করে নিয়ে আগামীকালই রওনা দেন।
আমরা তাহলে আসি।
বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলাম। কামালের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কর্নেল মুস্তাফিজের সাথে পৌঁছালাম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসে।
বলুন আপনার কি কি প্রয়োজন?
বিশেষ কিছু না। আমি একটা নোট ভারবাল ড্রাফট করে দেবো, আর সেটা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আপনি সই করে দেবেন। তাছাড়া চীনের ভিসা, টিকিটের ব্যবস্থা করতে হবে। সাথে কিছু বৈদেশিক মুদ্রা। ফিরে এসে হিসেব বুঝিয়ে দেবো।
মন্ত্রী সাহেব বেল টিপলেন। ত্বরিত তার পি এ প্যাড হাতে এসে উপস্থিত হলো। এ যে সাখাওয়াত! বেইজিং মিশনে আমরা একসাথে কাজ করেছি। অনেকদিন পর আমাকে দেখে হাসি মুখে সালাম জানিয়ে সাখাওয়াত বললো
স্যার, কেমন আছেন?
আমি এগিয়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম
আমি ভালোই আছি।তুমি ও তোমার বৌ-বাচ্চারা কেমন আছ তাই বলো?
আবেগাপ্লুত সাখাওয়াত বললো
আল্লাহ্‌র মেহেরবানী আর আপনাদের দোয়ায় সবাই ভালোই আছে, স্যার।
মন্ত্রীসাহেব কিছুটা বিস্মিত হয়েই আমাদের দিকে চেয়ে ছিলেন। সালাম-দোয়া শেষে জনাব মুস্তাফিজ সাখাওয়াতকে বললেন
কর্নেল সাহেব তোমাকে একটা নোট ভারবালের ডিক্টেশন দিবেন, তুমি আমার এই ঘরেই টাইপ মেশিনটা নিয়ে এসে সেটা টাইপ করবে। তবে বিষয়টি তোমাকে গোপন রাখতে হবে। কথা শেষ হতেই ছুটে বেরিয়ে গিয়ে মেশিন নিয়ে ফিরে এলো সাখাওয়াত। অতি অল্পক্ষণেই অভিজ্ঞ সাঁটলিপিকার সাখাওয়াত নোট ভারবালটা তৈরি করে ফেললো আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাতে সই করে দিলেন। সেটা নিয়ে সাখাওয়াত চলে গেলো তার রুমে সিল দেয়ার জন্য। মিনিটেই ফিরে এসে সাখাওয়াত আমার হাতে চিঠিটা দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
স্যার, অনেক রাত হঅয়েছে, কাল কামালের মাধ্যমে পাসপোর্ট, টিকেট আর টাকাটা আমার বাসায় পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করলে বাধিত হবো। কারণ, দিনের বেলায় আমি এখানে আসতে চাই না।

এক সময় ক্যাপ্টেন হিসাবে জেনারেল জিয়ার সাথেই জনাব মুস্তাফিজ পাকিস্তান আর্মির গোয়েন্দা সংস্থা ISI তে চাকুরি করেছেন। আমার ইশারা বুঝতে তার অসুবিধে হবার কথা নয়। বললেন
তাই হবে। চলুন আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।
না স্যার, এর প্রয়োজন নেই।
এরপর সাখাওয়াতকে ডেকে তিনি বললেন
কর্নেল সাহেবকে এগিয়ে দিয়ে ড্রাইভারকে বলবে, তিনি যেখানে যেতে চান তাকে পৌঁছে দিতে।
Duty Room ছাড়া কোথাও কেউ নেই। সাখাওয়াতকে জিজ্ঞেস করলাম
বাচ্চারা সব নিশ্চয় বড় হয়ে গেছে?
জি, স্যার।
বাকি পুরনো লোকজন কে কোথায় সেই খবরও নিলাম। বললাম
সবাইকে আমার সালাম জানিও।
পকেট থেকে একটা খাম বের করে আমাকে দিয়ে সাখাওয়াত বললো
এটা আপনার কপি স্যার।
ধন্যবাদ।
কেনও লজ্জা দিচ্ছেন স্যার। আপনার জন্য আমাদের মনে যে কতটুকু শ্রদ্ধা সেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
আমিও তোমাদের কম ভালবাসিনা।
আমরা সেটা জানি। ভাবী কেমন আছেন স্যার? আপনাদের সাথে যে অন্যায় হচ্ছে সেটা আমরা সবাই বুঝি। তাই সবাই দোয়া করি আপনারা যেখানেই থাকেন, আল্লাহ্‌ যেন আপনাদের সহায় হন।
ওর চোখে পানি জমে উঠেছিলো। বিদায় নিয়ে চলে আসার আগে বললাম
তোমরাও সবাই ভালো থেকো। আল্লাহ্‌ হাফেজ।
বাসায় ফিরে দেখি সবাই আমার অপেক্ষায় বসে আছে।
কি ব্যাপার এত রাত হলো যে? নিম্মির প্রশ্ন।
কাল আমাকে সন্ধ্যার থাই ফ্লাইটে পিকিং-এর পথে যাত্রা করতে হবে। তার সব বন্দোবস্ত করে ফিরতেই রাত হলো। সকালেই ফরেন মিনিস্টার পাসপোর্ট, টিকেট আর, পথ খরচা পৌঁছে দেবেন কামালের মাধ্যমে। তুমি রাতেই আমার স্যুট ক্যারিয়ার আর ট্র্যাভেল ব্যাগটা গুছিয়ে রেখো।
কেনও অযথা গাধার খাটুনি খাটছো?
আজকের বৈঠকের পর নিম্মির এই প্রশ্নটা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছিলো এবং একই সাথে নির্বাচনের আগে তার অভিমতটাই নতুন করে মনে পরে গেলো। নিম্মি বলেছিলো,‘খালেদা জিয়া তার মৃত স্বামীর মতো সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষমতার রাজনীতিই করবে। তোমাদের ব্যবহার করবে নিজের স্বার্থে কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে আলাদাভাবে কখনই প্রতিষ্ঠিত হতে দেবে না।’

হতাশাগ্রস্ত মন।তাই কোনও জবাব না দিয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বিছানায় আশ্রয় নিলাম।

রাজনীতির চোরাগলি! ভারতে যাবার রাস্তা করার জন্য লোক দেখানো চীনে রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করার চেষ্টা করছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তাকে যেতেই হবে ভারতবান্ধব হওয়ার জন্য। জেনারেল জিয়াও একই কাজ করেছিলেন। একদিকে জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী মূল্যবোধ ভিত্তিক রাজনীতির চ্যাম্পিয়ন অন্যদিকে ভারতের আনুকূল্য এবং সহযোগিতা পাবার প্রচেষ্টা! এক অদ্ভুত সমীকরণ!
জেনারেল জিয়ার ওই বালখিল্য উদ্যোগের ফলে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে দেশ ও জাতির। শেষ পর্যন্ত জীবন দিয়ে ভুলের মাশুল গুণতে হয়েছে তাকে। খালেদা জিয়াকেও একই পথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তার আস্থাভাজন পরামর্শদাতারা। ভবিষ্যতে এই ভুলের জন্য তাকে এবং দেশ ও জাতিকে কি মাশুল গুণতে হয় সেটা উপলব্ধি করতে খুব বেশি সময় লাগবে না দেশবাসীর।

বাংলাদেশ স্বনির্ভর, প্রগতিশীল এবং সমৃদ্ধশালী একটি দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাবার পথে বিভিন্ন কারণে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে প্রতিবেশী ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র আগ্রাসী ভারত। সেক্ষেত্রে সুখী-সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে শুধুমাত্র সেই ধরনের একটি আপোষহীন নেতৃত্ব যারা ভারতীয় জুজুর ভয়ে ভীত না হয়ে দেশপ্রেমিক জনগণকে সাথে নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার মতো সাহস রাখবে
১৪ কোটি দেশবাসীর ঐক্যবদ্ধ শক্তি, মেধা এবং সৃজনশক্তির উপর আস্থা রেখে নির্ভীক ভাবে আগ্রাসী ভারতের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে তাদের।
তেমন নিঃস্বার্থ, সাহসী এবং ত্যাগী নেতৃত্বের উদ্ভব না হোলে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে জনগণের ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধিকার এবং সার্বিক মুক্তির প্রত্যাশা হয়ে উঠবে সুদূর পরাহত মরীচিকা। শুধু তাই নয়, ক্রমান্নয়ে দেশ পরিণত হবে ভারত নির্ভর একটি করদ রাজ্যে আর জাতি মূলত পরিণত হবে দাসে।
এভাবেই আগামীতে বাস্তবায়িত হয়ে যাবে চাণক্যদের বাংলাদেশকে গিলে খাওয়ার নীলনকশা তাদের দেশীয় পদলেহিদের সহযোগিতায়!

প্রিয় দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য সচেতন বীরের জাতি কি গর্জে উঠবে না আর একবার একাত্তরের মতো? আত্মপরিচিতি সমুন্নত রাখার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়বে না কি বর্তমান ও ভবিষ্যতের তরুণ প্রজন্ম তাদেরই পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যারা তাদের এনে দিয়েছিলো স্বাধীনতা? এই সব অসংলগ্ন ভাবনার দোলাচলে দুলতে দুলতেএকসময় ঘুমের দেশে পৌঁছে গেলাম।

সকাল ১১টার দিকে কামালের সেই ভদ্রলোক এলেন টাকা, টিকেট, পাসপোর্ট নিয়ে। আমরা তখন নাস্তা করছিলাম। তাই তাকে খাবার ঘরেই ডেকে পাঠালাম। তিনি ঢুকতেই বললাম নাস্তায় শরিক হন, পরে কথা হবে।
স্যার, আমি কিন্তু নাস্তা করেই বাসা থেকে অফিসে এসেছিলাম।
আরে ভাই সেতো কোন সকালে, এখন প্রায় দুপুর হতে চলেছে! বয়সে তরুণ আপনি, একটু জলপানিতে কি এমন সমস্যা হবে? নিন শুরু করুন।
ভদ্রলোক কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছিলেন দেখে বললাম
বড়ো ভাইয়ের সাথে নাস্তা করতে এতো লজ্জার কি আছে!
আমার কথায় পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে উঠলো। চা নাস্তা করতে করতে তিনি জানালেন, সন্ধ্যার থাই ফ্লাইটে ব্যাংকক অব্দি বুকিং কনফারম করা হয়েছে। চীনের ভিসাও লাগানো হয়ে গেছে। এরপর টিকেট, পাসপোর্ট আর ডলারের প্যাকেটটা আমকে দিয়ে তিনি বললেন, যথাসময়ে তিনি এসে আমাকে এয়ারপোর্ট নিয়ে যাবেন।
ঠিক আছে, আপনি আসার ঘণ্টা খানেক আগে আমাকে একটা ফোন করে দেবেন, যাতে আমি তৈরি হয়ে থাকতে পারি।
অবশ্যই স্যার, বলে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন ভদ্রলোক।
যথাসময়ে ভদ্রলোক এসে আমাকে প্লেনে তুলে দিয়ে ফিরে গেলেন। সময় মতোই পৌঁছে গেলাম ব্যাংকক। দেড় ঘণ্টা পর হংকং-এর ফ্লাইট। ট্রানজিট লাউঞ্জের ভিআইপি রুমেই সময়টা কাটাতে হবে!

সূচীপত্র  [প্রতিটি পর্বে্র নীচে ক্লিক করলেই সেই পর্বটি পাঠ করতে পারবেন]

১ম পর্ব   “জিয়া থেকে খালেদা তারপর” – লেখকের কথা

২য় পর্ব  শ্রদ্ধেয় মওলানা ভাসানীর সাথে শেষ সাক্ষাত

৩য় পর্ব দ্বিজাতি তত্ত্ব

৪র্থ পর্ব –  কিছু বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারের জবাব

৫ম পর্ব – সত্য কহন

৬ষ্ঠ পর্ব – ব্যাংককে আমরা

৭ম পর্ব – বঙ্গভবনে কি হচ্ছিল রাত ১২ টায়!

৮ম পর্ব – বন্দীত্ব থেকে মুক্ত করা হলো জেনারেল জিয়াকে

৯বম পর্ব – “সংঘর্ষের পথে জিয়া”

১০ম পর্ব – খন্দকার মোশতাকের বিশেষ দূত হিসেবে এলেন সাদ্রে ইস্পাহানী

১১তম পর্ব – শিশু ভাই এলেন ব্যাংককে

১২তম পর্ব  – নিজেদের আলোচনা

১৩তম পর্ব  ১ম কিস্তি   – রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৩তম পর্ব – ২য় কিস্তি- রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৪তম পর্ব –  বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জমির এলেন সস্ত্রীক

১৫তম পর্ব – এভিএম তোয়াব আসছেন

১৬তম পর্ব  –  শিশুভাইকে বেনগাজীতে আসার অনুরোধ

১৭তম পর্ব  –  ১ম কিস্তি – জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে

১৭তম পর্ব – ২য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  ৩য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  শেষ কিস্তি

১৮তম পর্ব –  বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস

১৯তম পর্ব –  জেনারেল মনজুরের সাথে বৈঠক

২০তম পর্ব – লন্ডন হয়ে ফিরলাম বেনগাজীতে

২১তম পর্ব – ঢাকা হোয়ে পিকিং-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা

২২তম পর্ব – বাংলাদেশে নীতি বিবর্জিত কুটুম্বিতার রাজনীতির রূপ

২৩তম পর্ব –  জিয়ার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে

২৪তম পর্ব –  রাষ্ট্রপতি হিসাবে জিয়ার গণচীনে দ্বিতীয় সফর

২৫তম পর্ব  –  আব্বার উপস্থিতিতে প্রথম রাতে জেনারেল জিয়ার সাথে আমার বৈঠক

২৬তম পর্ব – দ্বিতীয় বৈঠক

২৭তম পর্ব – জিয়ার নিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের চীন সফর

২৮তম পর্ব – চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসার পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার প্রতিক্রিয়া

২৯তম পর্ব  –  চীন থেকে লন্ডনে নির্বাসন কালে

৩০তম পর্ব  –  জেনারেল মঞ্জুরের ব্যর্থ অভ্যুত্থান, জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখল

৩১তম পর্ব  – নিউইয়র্কের পথে জেনারেল এরশাদের সাথে লন্ডনে সাক্ষাৎ

৩২তম পর্ব – খালেদা জিয়া হলেন বিএনপির চেয়ার পার্সন

৩৩তম পর্ব – জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় রশিদ-ফারুক বানালো ফ্রিডম পার্টি

৩৪তম পর্ব – ১ম কিস্তি – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ-শেষ কিস্তি

৩৫তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান – ১ম কিস্তি

৩৬তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান  – শেষ কিস্তি পেশাওয়ারের পথে

৩৭তম পর্ব – ফিরে এলাম নাইরোবিতে

৩৮তম পর্ব – নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে যাত্রা 

৩৯তম পর্ব – ঢাকায় পৌঁছালাম

৪০তম পর্ব –  ১ম কিস্তি – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ – ২য় কিস্তি

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ- শেষ কিস্তি

৪১তম পর্ব – রুহানী জগতের আর এক সূফি সাধকের সান্নিধ্যে

৪২তম পর্ব – আমাকে আবার খালেদা জিয়ার জরুরী তলব

৪৩তম পর্ব – ব্যাংকক ট্রানজিট লাউঞ্জে

৪৪তম পর্ব – হংকং হয়ে বেইজিং – ১ম কিস্তি

৪৪তম পর্ব –  হংকং হয়ে বেইজিং – শেষ কিস্তি

৪৫তম পর্ব – হংকং হয়ে ফিরলাম ঢাকায়

৪৬তম পর্ব – গোপনে আমেরিকা সফর

৪৭তম পর্ব – আবার ঢাকায়

৪৮তম পর্ব – নাইরোবিতে প্রত্যাবর্তন

৪৯তম পর্ব – দেশে ফিরলাম

৫০তম পর্ব – নিরুদ্দেশে যাত্রা

৫১তম পর্ব – ২৮শে জানুয়ারি ২০১০ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ

৫২তম পর্ব – দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়াতের
প্রতিক্রিয়া

৫২তম পর্ব -দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়েতের
প্রতিক্রিয়া  –  শেষ কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – ১ম কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – শেষ কিস্তি

৫৪ তম পর্ব – শেষকথা

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *