জিয়া থেকে খালেদা তারপর – বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল শরিফুল হক ডালিম

৪০তম পর্ব

প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ

২য় কিস্তি

রিসেপশন-এচেক-ইন করে কামরায় ঢুকলাম। মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে। ফজরের পরই সাধারণত আমি শুয়ে থাকি। ছোটকাল থেকেই রাত জাগার অভ্যাস। শাওয়ার নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। ঘুম ভাঙল সকাল এগারোটার দিকে। ওয়াশিংটনে তখন সাতসকাল। এই সময়টাতেই গঙ্গাভাইকে সহজে পাওয়া যায়। অতি প্রত্যুষে জেগে ওঠার অভ্যাস তার। রাত জাগার অভ্যাস নেই। প্রাতঃক্রিয়া শেষে ঘরেই নাস্তা সেরে ফোন করলাম।
:হ্যালো।
অপর প্রান্তে গঙ্গাভাই।
কোথা থেকে বলছেন?
আমি ব্যাংকক থেকে বলছি, গত রাতে ঢাকা থেকে এসে পৌঁছেছি।
প্রলয়ংকরী সাইক্লোনের খবর এখানের টিভিতে দেখেই নাইরোবিতে ফোন করে জানলাম, ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। আপনি তখনো সপরিবারে ঢাকায়। সেখানে যোগাযোগের চেষ্টা করে জানলাম টেলিকম্যুনিকেশন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে, তাই যোগাযোগ সম্ভব নয়। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে ভীষণভাবে চিন্তিত হয়েই আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য উতলা হয়ে পরেছিলাম।
সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভাই, টিভিতে যা দেখেছেন বা শুনেছেন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তার চেয়ে হাজারগুণ বেশি।
বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাকি দুনিয়া থেকে। হাজার হাজার লোক মারা গেছে। লক্ষ লক্ষ লোক জলবন্দী হয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে উপদ্রুত এলাকায়। অনাহারে, মহামারী, রোগে, শোকে খোলা আকাশের নিচে মৃত্যুর দিন গুনছে। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলা করার সামর্থ নেই বাংলাদেশের সরকারের।পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পরায় উপদ্রুত এলাকাতে যাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।
আপনি তো অবগত আছেন বিগত নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত পরাজয়ের পর রোষ সামলাতে না পেরে হাসিনা প্রেস কনফারেন্স করে দাবি করেছে, নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে বিধায় খালেদা সরকারকে এক মুহূর্তের জন্যও স্বস্তিতে থাকতে দেয়া হবে না।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং জলবন্দী মানুষের জীবন বাঁচাতে না পারলে সরকারের পতন অনিবার্য!
এর সাথে আমাদের বিগত দিনের সব শ্রমও পণ্ড হয়ে যাবে। রুশ-ভারত চক্রের গোলামির শেকলে বাঁধা পরবে দেশ ও জাতি। সাহায্যের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলোতে সরকার পক্ষ থেকে আকুল আবেদন জানানো হয়েছে অফিসিয়াল চ্যানেলের মাধ্যমে। কিন্তু তেমন কোনও আশাপ্রদ সাড়া মেলেনি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জবাব দিয়েছেন, তিনি স্টেট ডিপার্টমেন্টে আবেদন লিপি পাঠিয়ে দেবেন জরুরী ভিত্তিতে। ব্যস এতটুকুই।

এই বেসামাল অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডঃ কামাল সিদ্দিকি এবং পিএস সাব্বিউদ্দিন আহমেদ যে আমার সাথে হংকং এ তিন বছর প্রথম সচিব হিসাবে কাজ করেছে তারা একত্রে খালেদা জিয়াকে বুঝিয়েছে অফিসিয়াল চ্যানেলে কোনও দেশ থেকেই সাহায্য সহযোগিতার ত্বরিত প্রতিক্রিয়ায় প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত অবস্থা সামাল দেবার সঙ্গতি পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা জানি, রাষ্ট্রদূত হক পৃথিবীর অনেক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের ক্ষমতাবলয় এবং সামাজিক ক্ষেত্রে অদৃশ্য শক্তিধর ব্যক্তিবর্গের সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বসুলভ ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন বিগত ২০ বছরের দীর্ঘ কূটনৈতিক কর্মজীবনে। তিনি তো এখনো দেশেই রয়েছেন, আপনি তাকে ডেকে অনুরোধ করে দেখুন ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি কিছু কোরতে পারেন কিনা। দেশ এবং জাতীয় স্বার্থে তিনি আপনার অনুরোধ মেনে নিলেও নিতে পারেন। আমরাও তাকে বিশেষ ভাবে বুঝিয়ে বলবো।
তাদের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে ব্যক্তিগত চেষ্টায় কোনও কিছু করা সম্ভব হয় কিনা সেই প্রচেষ্টা করার জন্য ব্যাংককে প্রায় জোর করেই পাঠিয়ে দিলেন। আপনি এবং আমেরিকান ক্ষমতাশালী বন্ধুরা কি এই সরকারকে বাঁচানোর জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে পাশ কাটিয়ে কোনও কিছু করতে পারবেন?
উদ্ধারকার্য, ত্রাণ এবং একই সাথে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য স্পেসিফিক কি ধরনের সাহায্য সহযোগিতা চাচ্ছেন সেটা আমাকে একটু বুঝিয়ে বলুন।
গঙ্গাভাই, স্থলভিত্তিক কোনও কিছুই বর্তমান অবস্থায় করা সম্ভব নয়। কারণ, স্থলপথে উপদ্রুত এলাকায় যাবার কোনো উপায় নেই। একমাত্র নৌবহর ভিত্তিক অপারেশন-এর মাধ্যমেই ফলপ্রসূ উদ্ধার কাজ এবং পুনর্বাসন তৎপরতা চালানো সম্ভব।এধরনের ‘Sea Born Operation’ 7th Fleet-এর মতো শক্তিশালী নৌবহরের পক্ষেইকরা সম্ভব। আমার জানা মতে, বর্তমানে 7th Fleet প্যাসিফিক-এর পথে রয়েছে। যদি সম্ভব হয় 7th Fleet-কেই চট্টগ্রাম সংলগ্ন উপকূলে ডাইভার্ট করে উড়িরচরসহ বিধ্বস্ত অন্যান্য এলাকায় উদ্ধার, ত্রাণকার্য্ এবং পুনর্বাসন একই সাথে করা সম্ভব।এ ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই।

বন্ধুরা যদি এই যাত্রায় খালেদার সরকারকে বাঁচিয়ে দেন, তাহলে খালেদা জিয়াই শুধু কৃতার্থই হবেন তাই নয়, বাংলাদেশের জনগণের কাছে ‘৭১-এর শেষ পর্যায়ে আমেরিকান সরকারের সিদ্ধান্তে 7th Fleet সম্পর্কে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিলো যার রাজনৈতিক ফায়দা রুশ-ভারত চক্র নিয়ে চলেছে আজ অবধি সেই ধারণা শুধু মুছেই যাবে না জনগণের মন থেকে, আমেরিকা সম্পর্কে অভিমত পাল্টে যাবে সম্পূর্ণভাবে। ত্রাণকর্তা এবং বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে আমেরিকার ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়ে উঠবে দেশবাসীর কাছে। তবে গঙ্গাভাই, সময়টাই এখানে সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য বিষয়।
ঠিক আছে, আমি সবকিছুই পরিষ্কার ভাবে বুঝে নিয়েছি। এখনি আমি Capitol Hill এ যাচ্ছি জিমের কাছে। তাকে সব বুঝিয়ে তাকে সঙ্গে নিয়েই অন্য সবার সাথে আলোচনা কোরব।এই বিষয়ে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত সরাসরি ভাবে আদায় করার যোগ্যতা আছে শুধু একজনেরই, বন্ধুবর জেসির।
ঠিক বলেছেন।গঙ্গাভাই, আমাদের সবার স্বার্থে যে করেই হউক এই অনুমতিটা আপনাকে জেসির মাধ্যমে আদায় করে নিতেই হবে।
চেষ্টার ত্রুটি হবে না। আপনি কিন্তু আগামী ২-৩ দিন টেলিফোনের কাছেই থাকবেন।আমার বিশ্বাস, এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত একটা হয়েই যাবে। আমাদের দায়িত্ব সাধ্যমতো চেষ্টা করা, ফল দেবার মালিক রব।
ফোন ছাড়ার আগে গঙ্গাভাইকে জানালাম, আমি অধীর অপেক্ষায় থাকবো। সময় সময় আমাকে জানাবেন কি ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে।
অবশ্যই জানাবো। একটা পরামর্শ দিচ্ছি, আপনিও স্বয়ং এখনই জিমকে ফোন করে সবকিছু বুঝিয়ে বলে ওকেও জানিয়ে দিন বিস্তারিত ভাবে বাস্তবঅবস্থা এবং করণীয় সম্পর্কে। একই সাথে বলবেন, আপনিই আমাকে তার সাথে দেখা করার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং আমি খুব শীঘ্রই হিলে এসে পৌঁছাচ্ছি।
ঠিক আছে, আমি এক্ষুনি জিমের সাথে যোগাযোগ করছি।
জিমকে ফোনে সবকিছু বুঝিয়ে দিলাম। তাকে বললাম, শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কই নয় হাজারো মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্যই এই প্ল্যানটা যেভাবেই হউক কার্যকরী করতে হবে। মানবিকতা এবং নিপীড়নের ঘোর বিরোধী ব্যক্তি হিসাবে জিম Capitol Hill এ বিশেষ ভাবে পরিচিত। দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় তিনি কংগ্রেস সদস্য হিসাবে তার এলাকাবাসীর প্রতিনিধিত্ব করেছেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হয়ে নিজস্ব চারিত্রিক গুণাবলীর মহিমাতেই। তার কাছে জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম কিংবা বর্ণ কোনও মানে রাখে না। সবাইকে তিনি একই মানদণ্ডে বিচার করেন।মানবতাবাদী জনাব জিম করম্যান ন্যায় এবং সত্যের প্রতীক। তাই ক্ষমতা বলয়ে একজন বিশেষভাবে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি।এই সম্মান তিনি অর্জন করেছেন দীর্ঘ কর্মজীবনে সততা, দক্ষতা এবং জনস্বার্থে নিবেদিতপ্রাণ এক কর্মী হিসেবে।
শুরু হল এক অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার প্রক্রিয়া। আমাকে দু’তিনদিন ফোনের পাশেই বসে থাকতে হবে, সেই সময় আমার সঙ্গী হিসাবে থাকবে ম্যান্ডেলার উপর বইটি। Lunch brake-এরসময় জিম ফোন করলো।
জরুরী ভিত্তিতে আমরা একত্রিত হয়েছি। গঙ্গাভাইও সাথে রয়েছেন। বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সব তথ্যের চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণের পর প্রতিবেদন তৈরি করে সেটা সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকের কাছে উত্থাপন করতে রাজি হয়েছেন জেসি। যুক্তিসঙ্গত কারণেই আশা করা যায়, তার উদ্যোগ ব্যর্থ হবে না। আজ-কালের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। আশাব্যঞ্জক খবর পেয়ে জিমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললাম, আমি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় থাকবো।
মধ্যরাতের কিছু পূর্বে জিম আবার ফোন করলো
আন্তরিক অভিনন্দনবন্ধু, তোমার প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে Pacific Command-কে হুকুম দেয়া হয়েছে 7th Fleet কে চট্টগ্রাম উপকূলে Divert করে উদ্ধার, ত্রাণকার্য এবং গৃহহীনদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশেরসরকারকেসার্বিকভাবেসাহায্য সহযোগিতাকরার জন্য।
আনুষঙ্গিক সব রিলিফ সামগ্রীর ব্যবস্থাও করবে আমেরিকা অগ্রণী হয়ে। এই অপারেশনের নাম হবে ‘Operation Sea Angels’. নামটা আমরা সবাই মিলে ঠিক করেছি, কেমন হয়েছে? তুমি ফিরে গিয়ে এই সিদ্ধান্তের সুখবরটা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দিতে পারো। প্রোটোকল অনুযায়ী এই সিদ্ধান্তের খবর ঢাকায় নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে যথাসময়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন।
অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন প্রিয় বন্ধুরা যৌথ প্রচেষ্টায়। জিমকে জানালাম
তাদের এই অবদানের জন্য যত সত্বর সম্ভব প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে আমি আসবো কৃতজ্ঞতা জানাতে। সেই সফরকালে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থে আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলাপ করবো। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ক্ষেত্রবিশেষে অসাধ্য সাধন কোরতে পারে এই শিক্ষাই পেলাম এই সফরে।
You are always most welcome.
গঙ্গাভাই এর সাথেও আলাপ হল। তাকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললাম, Next Flight -এই আমি ফিরে যাচ্ছি।
Reception এ খবর নিয়ে জানতে পারলাম ঢাকার সাথে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।পরদিন সকালে থাই-এর ফ্লাইটে সিট Confirm করে কামালকে ফোন করে Flight details জানিয়ে অনুরোধ করলাম আমার পৌঁছানোর সংবাদটা নিম্মিকে জানিয়ে দিতে।
অবশ্যই সেটা জানাবো।এয়ারপোর্টে আমার লোক থাকবে তোকে রিসিভ করার জন্য। এয়ারপোর্ট থেকে সোজা চলে আসবি মইনুল রোডের বাড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার জন্য। আমি সেখানেই থাকবো।
ঠিক আছে।
Flight was on time. যথাসময় ঢাকায় পৌঁছে গেলাম। দরজা খুলতেই পূর্বপরিচিত সেই প্রটোকল অফিসার হাসি মুখে ভেতরে এলেন আমাকে স্বাগত জানাতে।প্রধানমন্ত্রীর বাসায় পৌঁছানোর পর কামাল আমাকে জড়িয়ে ধরে আস্তে জিজ্ঞেস করলো
সফরের ফলাফল কি?
এতো উতলা হচ্ছিস কেনো? প্রধানমন্ত্রীর সামনেই সবশুনবি। তবে এতটুকু বলতে পারি এ যাত্রায় তোর ম্যাডাম বেঁচে গেলেন!
হেসে কামাল বললো
তুই সারা জীবন রহস্য পুরুষ হয়েই থাকবি! মনে আছে, টার্মশেষে বেইজিং থেকে ফেরার সময় দূতাবাসের Economic Minister হওয়া সত্ত্বেও তুইই আমাদের সপরিবারে চীন সফরের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলি তোর বন্ধুদের মাধ্যমে। এমন বিলাসবহুল ভ্রমণের সুযোগ ও ব্যবস্থা বোধ করি কনও VIP-এর ভাগ্যেও জোটে না। সেই সফরের কথা জীবনে ভোলার নয়। সফরকালে চৈনিক বন্ধুরা যেভাবে তোর প্রশংসা করছিলো তাতে মনে হচ্ছিলো তোর কাছে কনও জিয়নকাঠি আছে যার পরশে তুই সবাইকেই বশ করে নিতে সক্ষম!
কেনো বন্ধু! বশীকরণ বিদ্যায় তুইতো আমার চেয়ে আরও বেশি পারদর্শী। তানাহলে এতো আমলা থাকতে খালেদা জিয়া তোকেই তার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসেবে বেছে নিলেন জানার পরও যে ৭ই নভেম্বর বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় তার স্বামী জেনারেল জিয়া তোকে জেলবন্দী করে রেখেছিলেন?
সাথে করে পরিবারের সবার প্রিয় ম্যাঙ্গস্টিন, রাম্বুথান আর সফেদার তিনটি ক্রেট নিয়ে এসেছি।
কামাল নিম্মিকে ফোন করে জানালো
ডালিম পৌঁছে গেছে। ঘণ্টা দু’একের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিটিং, এরপর বাসায় আসছে।ইতিমধ্যে তোমাদের প্রিয় ফলের তিনটি ক্রেট আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু আমার ভাগটার কি হইবো বইন?
সেটা, আপনার গাড়ীতেই থাকবে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।কিন্তু বদ্দা, আপনার ব্যাপার-স্যাপার খুব একটা সুবিধাজনক লাগতাছে না। আপনিও শেষকালে আপনার বন্ধুরে সিঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করতাছেন, এটা কিন্তু কখনোই আমি ভাবতে পারি নাই। যাক, আপনাদের ব্যাপার আপনারাই ভাল বুঝবেন। বলে নিম্মি ফোন রেখে দিলো।
কামাল নিম্মির কথা শুনে কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েগেলো।
কিছুক্ষণ পর বেগম জিয়া এসে উপস্থিত হলেন আমাদের কামরায়। আমরা উঠে দাঁড়িয়ে সালাম ও কুশল বিনিময় করলাম। তার সাজ পোশাক দেখে মনে হচ্ছিলো তিনি বেরুবার জন্যই তৈরি হয়ে এসেছেন।আমাদের ইঙ্গিতে বসতে বলে জিজ্ঞেস করলেন
বলুন, কেমন আছেন? সফর কেমন হল?
দু‘দিন কিছুটা টেনশনে কেটেছে, তবে সুখবর নিয়েই ফিরেছি। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের হুকুমে 7th Fleet প্যাসিফিক থেকে চট্টগ্রাম উপকূলে Divert করা হয়েছে উড়ির চর এবং অন্যান্য উপদ্রুত এলাকাতে উদ্ধার, ত্রাণকার্য এবং পুনর্বাসনের কাজে আপনার সরকারকে সার্বিক ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য।7th Fleet will be launching sea born operation. এর জন্য প্রয়োজনীয় সব ত্রাণসামগ্রীও আমেরিকা সরকারই অগ্রণী হয়ে সরবরাহ করার ব্যবস্থা কোরবে।আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবে 7th Fleet চট্টগ্রামের উপকূলে।পৌঁছামাত্রইশুরু হবে ‘Operation Sea Angels’.যথাসময়ে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত formally পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আপনার সাথে দেখা করে সিদ্ধান্তটি আপনাকে জানিয়ে যাবেন।

বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন বেগম খালেদা জিয়া এবং কামাল সিদ্দিকি! তারা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না আমার বক্তব্যকে।
আমি কিছুটা ক্লান্ত, তাইযদি অনুমতি দেন তবে আজকের মতো উঠতে চাই। তবে ভাবী, আমি আপনাকে আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যতক্ষণ পর্যন্ত রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে খবরটা আপনাকে না দিচ্ছেন, সেই সময় পর্যন্ত এই ব্যাপারে আপনি নিশ্চুপ থাকবেন। আপনি কথা দিয়েছিলেন যাবার প্রাক্কালে কে কি করলো, কি ভাবে, কি করে সব হল সেই বিষয়টিও গোপন রাখবেন। আমি তাহলে চলি। বলে উঠে দাঁড়ালাম।
দু‘দিনের ধকলে সত্যি ক্লান্ত এবং পরিশ্রান্ত বোধ করছিলাম।
হ্যাঁ নিশ্চয়ই, আপনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনার বিশ্রাম দরকার। রাষ্ট্রদূতের সাথে সাক্ষাতের পর আমি কিন্তু আপনাকে আবার সাক্ষাতের জন্য ডেকে পাঠাবো ভাই। একান্তে কিছু আলাপ আছে।
অবশ্যই ডেকে পাঠাবেন তবে বৈঠকটা সুগন্ধায় না হয়ে এখানে বাসায় হলে আমার পক্ষে সুবিধা হয়।
তাই হবে। আপনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে এবারও ছোট কোরব না।
দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন খালেদা জিয়া।
কামালের গাড়ী ইতিমধ্যেই বাসায় ফলের ক্রেট এবং আমার লাগেজ পৌঁছে দিয়ে ফিরে এসেছে।
কামাল বেগম জিয়াকে বললো
ডালিমকে বাসায় নামিয়ে দিয়েই আমি সুগন্ধায় আসছি। পথে নিশ্চুপ ছিল কামাল। হয়তো নিজেকে ধাতস্থ করে নিচ্ছিলো। বাসায় পৌঁছে গাড়ী থেকে নেমে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো
Incredible! Simply incredible!
গাড়ীর শব্দে নিম্মিরা সবাই বেরিয়ে এসে কামালকে ভেতরে যাবার অনুরোধ জানালো কিন্তু কামাল সবাইকে সস্নেহে বুঝিয়ে বললো, ম্যাডাম অফিসে চলে গেছেন। তাই তাকেও এক্ষুনি চলে যেতে হবে। নিম্মিকে ইশারায় কাছে ডেকে নিচু স্বরে বললো
আদরের বইন তুমিতো জানোনা, কি অবিশ্বাস্য অসাধারণ কাজ বিগত দুইদিনে ও করে এসেছে। ডালিমের এই অবদানের স্বীকৃতি দেশবাসী একদিন দেবেই।
বেচারা ভীষণ ক্লান্ত। বিগত দুইদিন দুইরাত্রি ভীষণ টেনশনে থাকতে হয়েছে ওকে। জানি, সবাই আসবে কিন্তু তুমি ওকে জোর করে ঘুম পাড়িয়ে দেবে। প্রয়োজনে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে। চলে গেলো কামাল বিদায় নিয়ে।
নিম্মি বললো
ফ্রেশ হয়ে নাও সবাই আসার আগে।
হ্যাঁ, বলে শাওয়ার নিয়ে কাপড়-চোপড় বদলে ফ্রেশ হয়ে এসে বসলাম। ফিরে এসেছি শুনে ভাইবোনেরা বাচ্চাদের নিয়ে উপস্থিত হলো।
মিনু ফুপ্পু সবার জন্য রান্না করেই রাখেন। আমরা এলে বাড়িটা সবসময় গমগম করতে থাকে।
দুপুরের খাওয়া শেষে ভেতরের বারান্দায় শীতের মিষ্টি রোদের আমেজে পানের আসর উপভোগ করছিলাম। একটুখানি ঝিমুনি এসেছিল রোদের আমেজে। ঝিমুতে দেখে নিম্মি বললো
চলো ঘরে, একটু ঘুমিয়ে নাও। এরা কেউই চলে যাবে না।
নিম্মির কথায় সবাই সায় দিয়ে বললো
হ্যাঁ ভাইয়া, একটু ঘুমিয়ে নাও। তা নাহলে রাতের আড্ডাটা মাটি হয়ে যাবে। আজ রাতে Royal Orchid-এ ডিনারে যাবো আমরা। মহুয়া বললো।
ঠিক আছে।বলে শোবার ঘরে চলে এলাম। নিম্মি এলো সাথে। পর্দা টেনে দিয়ে বললো
তুমি শুয়ে পর, আমিও একটু গড়িয়ে নেই।
দুপুরে একটু গড়িয়ে নেবার অভ্যাস নিম্মির। নিমেষেই গভীর ঘুমের অতলে তলিয়ে গেলাম। নিম্মি কখন উঠে গেছে টেরও পাইনি। মাগরিবের আজানে ঘুম ভাঙলো। নামাজ পড়ে বসার ঘরে পৌঁছাতেই মানু, সফু, কেয়া চা নাস্তা পরিবেশনে ব্যস্ত হয়ে পরলো। মোস্তাফিজ কাকু ইতিমধ্যেই অফিস থেকে ফিরে জাঁকিয়ে বসে রসের হাঁড়ি ভেঙ্গে সবাইকে হাসিয়ে চলেছেন।
আমাকে দেখেই বলে উঠলেন
কি মিয়া লম্বা ঘুম দিয়া উঠলা, এইডা কি ব্যাংককের আছর নাকি? ঐখানে তো রাইতে ঘুমানোর রেওয়াজ নাই। ঠিকই কইছেন কাকু, তবে এই যাত্রায় দুই দিন দুই রাত কাজের চাপে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। টেনশনে কিছুই উপভোগ করতে পারি নাই। পুরা সময়টাই ফোনের পাশে বইসা কাটাইতে হইছে। হোটেলে বন্দী হইয়া থাকলে কি আর রাতের ব্যাংককের মজা ভোগ করা যায়!
কাজ কেমন হইলো?
উদ্দেশ্য সফল হইছে।
রাত ৮ তার দিকে কামাল ফোনে জানালো, আজ বিকেলেই আমেরিকান রাষ্ট্রদূত খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে তিনি আমার কথাগুলোই ফরমালি জানিয়ে গিয়েছেন। খালেদা জিয়া আমেরিকান সরকারের এই সিদ্ধান্তের তারিফ করে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে 7th Fleet-এর আগমনকে স্বাগতমও জানিয়েছেন।
ভালো খবর। আমাকেতো বেচে চলেছিস।এবার শোন, মহুয়া আমাদের সবাইকে নিয়ে যাচ্ছে Royal Orchid-এতোকেও সপরিবারে দাওয়াত দিচ্ছে। চলে আয়।
বইনরে ক আমারে মনে রাখায় খুবই খুশি হইছি, কিন্তু একটু পরেই একটা জরুরী ক্যাবিনেট মিটিং শুরু হইবো।
বুঝলাম, ঠিক আছে তার পেটিকোটের নীচেই বইয়া থাকো তুমি শালা নকরিবাজ ! আমরা চললাম। আল্লাহ্‌ হাফেজ।
ফোন রেখে বসার ঘরে ফিরে আসতেই টিভিতে এলান হল একটি বিশেষ ঘোষণার।
দেখলাম, আমেরিকার রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে উপদ্রুত এলাকায় উদ্ধার এবং ত্রাণকার্য পরিচালনার জন্য 7th Fleet-কে পাঠাবার আমেরিকান সরকারের সিদ্ধান্তের সংবাদটাই দেশবাসীকে জানান দেয়া হচ্ছে। উপস্থিত সবাই খবরটা শুনে উল্লসিত হয়ে মত প্রকাশ করলো, এটা খালেদা জিয়া সরকারের একটা বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য। এর ফলে সরকারের নড়বড়ে অবস্থা আবার পোক্ত হয়ে উঠবে।
এই ‘Operation Sea Angels’ এর ব্যবস্থা না হলে সহজেই হাসিনা সরকারকে ফেলে দিতো। সবাই খালেদা সরকারের এই সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করতে লাগলো। আমি নীরবে সব উপভোগ করছিলাম।
মহুয়া এসে জানালো, হোটেলে সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ও জানালো লিটুর আম্মা, সঙ্গিতা, দীপ্তি, সুপ্তি, মিঠু, কাপ্পা, অ্যান্টি, কামাল শাহ বাচ্চাদেরসহ সবাই পৌঁছে গেছে। খালাম্মা, চাচা, মোস্তাফিজ কাক্কু এবং মিনু ফুপ্পু রয়েছেন আমাদের সাথেই। নান্নু, কেয়া, মিলন, মানু, প্রিন্স, সফু, এসে গেল বাচ্চাদের নিয়ে। অল্প সময়ে পৌঁছাল স্বপন, রোজি বাচ্চাদেরসহ সাথে বাপ্পি ও তার পরিবার। মহুয়ার ফোন পেয়ে আমার Illustrated brother in law লিটুও এসে যোগ দিলো। It turned into a splendid get together of all immediate family members
আনন্দঘন পরিবেশে পছন্দের থাই ফুড খেয়ে সবাই সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যার যার বাড়িতে ফিরে গেলো। আমরাও ফিরে এলাম মহুয়া আর লিটুকে ধন্যবাদ জানিয়ে।

পরিবারের প্রায় সবাই কমবেশি নিশাচর। সুতরাং ঘুম থেকে দেরি করে ওঠার অভ্যাস সবারই। তবে আমার আর নিম্মির রুটিনে কিছুটা ফারাক আছে। আমি ফজরের আজান শুনে উঠে নামাজ পড়ে আবার শুয়ে পড়ি। উঠি ১০-১১ টায়। নিম্মি ফজরের পর আর শোয় না। নামাজের পর ও কোরআন তেলাওয়াত করে আর কিছু ওজিফাও পড়ে। তারপর সময় মতো সস্তিকে উঠিয়ে স্কুলে পাঠিয়ে দিয়ে সংসারের তদারকিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমি উঠে আমার workout সেরে অফিসে চলে যাই। দুপুরের খাওয়ার পর সস্তিকে সাথে নিয়ে নিম্মি এক-দেড় ঘণ্টার জন্য ঘুমায়। দিনের বেলায় আমি ঘুমোতে পারি না। তাই ওরা যখন ঘুমোয় তখন আমি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলস দেখি কিংবা লেখালেখি করি অথবা পড়ি স্টাডি রুমের শান্ত পরিবেশে।
বাসার পরিচারক-পরিচারিকারাও সেই সময় বিশ্রাম নেয়। এর ব্যতিক্রম ঘটে দেশে এলে। তখন সবাই মিলে প্রতিটি মুহূর্ত প্রাণভরে উপভোগ করি।

সূচীপত্র  [প্রতিটি পর্বে্র নীচে ক্লিক করলেই সেই পর্বটি পাঠ করতে পারবেন]

১ম পর্ব   “জিয়া থেকে খালেদা তারপর” – লেখকের কথা

২য় পর্ব  শ্রদ্ধেয় মওলানা ভাসানীর সাথে শেষ সাক্ষাত

৩য় পর্ব দ্বিজাতি তত্ত্ব

৪র্থ পর্ব –  কিছু বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারের জবাব

৫ম পর্ব – সত্য কহন

৬ষ্ঠ পর্ব – ব্যাংককে আমরা

৭ম পর্ব – বঙ্গভবনে কি হচ্ছিল রাত ১২ টায়!

৮ম পর্ব – বন্দীত্ব থেকে মুক্ত করা হলো জেনারেল জিয়াকে

৯বম পর্ব – “সংঘর্ষের পথে জিয়া”

১০ম পর্ব – খন্দকার মোশতাকের বিশেষ দূত হিসেবে এলেন সাদ্রে ইস্পাহানী

১১তম পর্ব – শিশু ভাই এলেন ব্যাংককে

১২তম পর্ব  – নিজেদের আলোচনা

১৩তম পর্ব  ১ম কিস্তি   – রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৩তম পর্ব – ২য় কিস্তি- রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়ে লিবিয়ার পথে

১৪তম পর্ব –  বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জমির এলেন সস্ত্রীক

১৫তম পর্ব – এভিএম তোয়াব আসছেন

১৬তম পর্ব  –  শিশুভাইকে বেনগাজীতে আসার অনুরোধ

১৭তম পর্ব  –  ১ম কিস্তি – জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে

১৭তম পর্ব – ২য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  ৩য় কিস্তি

১৭তম পর্ব –  শেষ কিস্তি

১৮তম পর্ব –  বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস

১৯তম পর্ব –  জেনারেল মনজুরের সাথে বৈঠক

২০তম পর্ব – লন্ডন হয়ে ফিরলাম বেনগাজীতে

২১তম পর্ব – ঢাকা হোয়ে পিকিং-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা

২২তম পর্ব – বাংলাদেশে নীতি বিবর্জিত কুটুম্বিতার রাজনীতির রূপ

২৩তম পর্ব –  জিয়ার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে

২৪তম পর্ব –  রাষ্ট্রপতি হিসাবে জিয়ার গণচীনে দ্বিতীয় সফর

২৫তম পর্ব  –  আব্বার উপস্থিতিতে প্রথম রাতে জেনারেল জিয়ার সাথে আমার বৈঠক

২৬তম পর্ব – দ্বিতীয় বৈঠক

২৭তম পর্ব – জিয়ার নিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের চীন সফর

২৮তম পর্ব – চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসার পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার প্রতিক্রিয়া

২৯তম পর্ব  –  চীন থেকে লন্ডনে নির্বাসন কালে

৩০তম পর্ব  –  জেনারেল মঞ্জুরের ব্যর্থ অভ্যুত্থান, জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখল

৩১তম পর্ব  – নিউইয়র্কের পথে জেনারেল এরশাদের সাথে লন্ডনে সাক্ষাৎ

৩২তম পর্ব – খালেদা জিয়া হলেন বিএনপির চেয়ার পার্সন

৩৩তম পর্ব – জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় রশিদ-ফারুক বানালো ফ্রিডম পার্টি

৩৪তম পর্ব – ১ম কিস্তি – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ

৩৪তম পর্ব – এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার পাশে সেনা পরিষদ-শেষ কিস্তি

৩৫তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান – ১ম কিস্তি

৩৬তম পর্ব – ১৯৯১-এর নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিজয়ে সেনা পরিষদের অবদান  – শেষ কিস্তি পেশাওয়ারের পথে

৩৭তম পর্ব – ফিরে এলাম নাইরোবিতে

৩৮তম পর্ব – নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার পথে যাত্রা 

৩৯তম পর্ব – ঢাকায় পৌঁছালাম

৪০তম পর্ব –  ১ম কিস্তি – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ – ২য় কিস্তি

৪০তম পর্ব – প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে খালেদা জিয়ার সরকারের পাশে সেনা পরিষদ- শেষ কিস্তি

৪১তম পর্ব – রুহানী জগতের আর এক সূফি সাধকের সান্নিধ্যে

৪২তম পর্ব – আমাকে আবার খালেদা জিয়ার জরুরী তলব

৪৩তম পর্ব – ব্যাংকক ট্রানজিট লাউঞ্জে

৪৪তম পর্ব – হংকং হয়ে বেইজিং – ১ম কিস্তি

৪৪তম পর্ব –  হংকং হয়ে বেইজিং – শেষ কিস্তি

৪৫তম পর্ব – হংকং হয়ে ফিরলাম ঢাকায়

৪৬তম পর্ব – গোপনে আমেরিকা সফর

৪৭তম পর্ব – আবার ঢাকায়

৪৮তম পর্ব – নাইরোবিতে প্রত্যাবর্তন

৪৯তম পর্ব – দেশে ফিরলাম

৫০তম পর্ব – নিরুদ্দেশে যাত্রা

৫১তম পর্ব – ২৮শে জানুয়ারি ২০১০ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ

৫২তম পর্ব – দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়াতের
প্রতিক্রিয়া

৫২তম পর্ব -দেশের সূর্যসন্তান বীরদের ফাঁসিতে বিএনপি এবং জামায়েতের
প্রতিক্রিয়া  –  শেষ কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – ১ম কিস্তি

৫৩তম পর্ব – বিশ্বায়নের মোজেজা, রাষ্ট্র ও ধর্ম – শেষ কিস্তি

৫৪ তম পর্ব – শেষকথা

 

 

One thought on “জিয়া থেকে খালেদা তারপর – বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল শরিফুল হক ডালিম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *